আলাপচারিতায় জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ

জাতিকে ঐক্যবদ্ধ, সামরিক সতর্কতা ও প্রস্তুতির পরামর্শ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:২৮

ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিরোধে এই মুহূর্তে সকল ভেদাভেদ ভুলে দলমত নির্বিশেষে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মঈন ইউ. আহমেদ।  দেশের যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে সশস্ত্রবাহিনীকে সতর্কতা এবং প্রস্তুত থাকার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার এক অনলাইন পত্রিকায় একান্ত আলাপচারিতায় এ আহ্বান ও পরামর্শ দেন জেনারেল মঈন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ভারতের যা প্রয়োজন নিচ্ছে, কিন্তু প্রতিদানে তেমন কিছুই দিতে রাজি নয়। তারা এখন যা করছে তা দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ। তাদের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়াতে হবে। চীন, সৌদি আরব ও তুরস্কসহ বাংলাদেশের যেসব বন্ধু রাষ্ট্র আছে, তারাসহ বিভিন্ন ফোরামে প্রমাণসহ ভারতের আগ্রাসন ও মিথ্যাচারের কথা তুলে ধরতে হবে। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে কোটি প্রবাসী এ ব্যাপারে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে পারেন।
মঈন ইউ. আহমেদ বলেন, সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারত সেদেশের মিডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ও ত্রিপুরার আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলার পর বাংলাদেশ প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ ব্যাপারে কূটনৈতিক চ্যানেলে আমাদের আরো সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘে প্রমাণসহ ভারতের আগ্রাসন ও মিথ্যাচারের চিত্র তুলে ধরতে পারেন।
ভারতের আগ্রাসনের বিরদ্ধে বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন জেনারেল মঈন।
ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে বাংলাদেশে আক্রমণ চালাতে পারে বলে খবর শোনা যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে সতর্ক এবং প্রয়োজনে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের আপামর জনগণ জীবন দিতেও প্রস্তুত আছে।’ তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ফিলিস্তিন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ইউক্রেন। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশে আক্রমণ চালালে আমাদের জবাব দিতে হবে। তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে, আমরাও দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত।  
ভারত কেন এ সময়টাকে বেছে নিল- এই প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল মঈন বলেন, এতদিন তারা বাংলাদেশ থেকে প্রয়োজনমত সবকিছু পাচ্ছিল এবং চুক্তিবদ্ধ ছিল। এখন হয়তো তারা এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবে না। আরো অনেক কারণ থাকতে পারে, যা সময়ে প্রকাশ পাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের উত্তরে মঈন ইউ. আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা। প্রয়োজনে ২০ জানুয়ারির পর প্রধান উপদেষ্টা ট্রাম্পের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত এবং বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে পারেন। এছাড়া বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানাতে পারেন ট্রাম্পকে।