স্বপ্নের দেশ আমেরিকা, কষ্টের হাতছানি অভিবাসীর

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:৩৮

দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে স্বপ্নের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেও কিন্তু অনেক অভিবাসীর কষ্ট শেষ হয় না। জীবন হারানোর শঙ্কা নিয়ে স্বর্গভূমিতে এসে নতুন জীবন শুরু করতেও তাদের অপেক্ষা করতে হয় আরো অনেক দিন। যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর ওয়ার্ক পারমিট পেতে এক বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষায় থাকা লোকজনের সাক্ষাত পাওয়া বিরল কোনো ঘটনা নয়।
এর কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর অ্যাসাইলামের মতো মর্যাদা পাওয়ার জন্য অভিবাসীদের অবশ্যই আবেদন করতে হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ পাওয়ার লক্ষ্যে পেপারওয়ার্কের জন্য আরো ১৫০ দিন অপেক্ষা করতে হয়।
এই যেমন আবদুলের কথা ধরা যাক। তিনি প্রায় এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। তিনি জানাচ্ছেন, তিনি অ্যাসাইলামের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো কাজের অনুমতি পাননি।
আপার ওয়েস্ট সাইডে তার সাথে কথা হয়। তিনি ইংরেজি শেখার একটি ক্লাস শেষ করে এখন চাকরির সাক্ষাতকারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তিনি জানান, দুই মাস আগে তিনি একেবারেই ইংরেজি জানতেন না। এখন তিনি বুঝতে পারেন, জবাবও দিতে পারেন।
তিনি প্রায় চার হাজার মাইল দূরের একটি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। তিনি অবশ্য তার দেশটির নাম জানাননি। কাজটি করেননি তিনি ভয়ে। তিনি এই সংবাদদাতাকে তার বাহুতে থাকা একটি ক্ষত দেখান। নিজ দেশে পুলিশ তাকে ধরে নির্যাতন করেছিল। ওই ক্ষত তাকে এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করায় তাকে এই নির্যাতন সইতে হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে এসে তিনি নিরাপদবোধ করছেন বলেও জানান।
তিনি বলেন, তিনি ব্রুকলিনে বাস করছেন। তার শুভাকাক্সক্ষী কিছু লোকের আর্থিক সহায়তার কথাও তিনি জানান। এখানে এখানো ওয়ার্ক পারমিট না পাওয়ায় এখনো কাজ শুরু করতে পারেননি।
আবদুলের ইংরেজি শেখা তদারকি করেন অমুনাফামূলক সংস্থা রিভারসাইড ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোগ্রাম। এখানে ইংরেজি শেখার ফলে কাজ পেতে কিছু সুবিধা হয়।
আরো অনেক সংগঠনও অভিবাসীদের কাজ পাওয়ার উপযোগী করে তুলতে সহায়তা করে। এমন আরেকটি সংগঠন হলো ওয়ার্কফোসর্-১। তারা সম্প্রতি শত শত লোককে কাজ পেতে সাহায্য করেছে।
অবশ্য অভিবাসীদের জন্য আরেক দুশ্চিন্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি নির্বাচিত ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের গণহারে বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ফলে আবদুলদের মতো অনেকে কেবল কাজ পাওয়া নিয়েই দুশ্চিন্তায় নেই, তারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়েও শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।