গত বছরের তুলনায় চলতি বছরেরে জানুয়ারি মাসে নিউইয়র্ক সিটিতে অপরাধ ও সহিংসতার উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে। মোট ১,৭০০টি কম বড় অপরাধ রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০২৪ সালের জানুয়ারির তুলনায় ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ কম। এর আগে ডিসেম্বরে অপরাধের হার ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। তবে, ধর্ষণের সংখ্যা বেড়েছে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ১৪৯টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে যা ২০২৪ সালের জানুয়ারির ১০৬টির তুলনায় বেশি।
এর মধ্যে ৮৮টি ঘটনা ২০২৫ সালে সংঘটিত হয়েছে এবং ৬১টি অতীতের বছরগুলোর ঘটনা যা সম্প্রতি রিপোর্ট করা হয়েছে। এই বৃদ্ধি মূলত নিউ ইয়র্কের সম্প্রতি পরিবর্তিত আইনি সংজ্ঞার কারণে যা নির্দিষ্ট যৌন নির্যাতনের শিকারদের ধর্ষণের শিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। খবর : বাংলাপ্রেস
পুলিশ কমিশনার জেসিকা এস টিশ জানান, এই সামগ্রিক অপরাধ হ্রাস শহরের পাঁচটি বরোর সবকটিতেই প্রতিফলিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সাবওয়ে অপরাধে ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস, পাশাপাশি হত্যা, ডাকাতি, বড় চুরির ঘটনা, গাড়ি চুরি এবং গুলি চালনার ঘটনায় উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেয়েছে। নিউ ইয়র্ক সিটিতে জানুয়ারি মাসে গুলি চালনার ঘটনার সংখ্যাও কমপক্ষে ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। যেখানে টানা পাঁচ দিন কোনো গুলি চালনার ঘটনা রেকর্ড করা হয়নি। এই ফলাফল মূলত ‘জোন’ ভিত্তিক পুলিশিং বা অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করার মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। এটি একটি স্থানীয় ও তথ্যনির্ভর পুলিশ কৌশল, যেখানে সহিংসতা ও অপরাধ প্রবণতার নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করতে একটি অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয়।
এনওয়াইপিডি কমিশনার টিশ বলেছেন, জানুয়ারি মাসের অপরাধ হ্রাস আমাদের পুলিশের কঠোর পরিশ্রমের এক অসাধারণ প্রমাণ’। প্রতিদিন আমরা অপরাধের সংখ্যা বিশ্লেষণ করছি এবং আমাদের পুলিশ সদস্যদের অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোতে মোতায়েন করছি। এর ইতিবাচক ফল আসতে শুরু করেছে এবং নিউ ইয়র্কবাসী আরও তথ্যনির্ভর পুলিশিং দেখতে পাবেন।
গত তিন বছরে,এনওয়াইপিডি নিউ ইয়র্ক শহরের রাস্তাগুলি থেকে ২০,০০০-এর বেশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করেছে। এর সুফল স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। জানুয়ারি মাসে হত্যাকাণ্ডের হার ২৪দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে (২৫ বনাম ৩৩) এবং গুলি চালনার ঘটনা ২১. দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। অন্যান্য প্রধান অপরাধ বিভাগ যেমন ডাকাতি, বড় চুরি এবং গাড়ি চুরি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। যার ফলে সামগ্রিক অপরাধের হারও হ্রাস পেয়েছে।
ডাকাতি: ২৬ শতাংশ হ্রাস (১,০৬৩ বনাম ১,৪৩৬), বড় চুরি: ২১ দশমিক ৭শতাংশ হ্রাস (৩,২৫৬ বনাম ৪,১৬১), গাড়ি চুরি: ২৩ দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস (৮৯৮ বনাম ১,১৬৭) এবং ফেলনি অ্যাসল্ট: ৬ দশমিক ৯ শতাংশ হ্রাস (১,৯৮৩ বনাম ২,১৩০)।
এনওয়াইপিডির ট্রানজিট নিরাপত্তা বৃদ্ধির তিন স্তরের পরিকল্পনা নিউ ইয়র্ক সিটির বিস্তৃত সাবওয়ে সিস্টেমে বড় অপরাধ ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস করতে সহায়তা করেছে (১৪৭ বনাম ২৩১)। শত শত পুলিশ অফিসারকে ডেস্কের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সরাসরি সাবওয়ে স্টেশন ও ট্রেনে মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ মোতায়েন অপ্টিমাইজ করা হয়েছে যাতে কর্মকর্তারা মূলত স্টেশন প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের ভেতরে উপস্থিত থাকেন কারণ ৭৮ শতাংশ অপরাধ এই এলাকাগুলোতেই ঘটে। রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত প্রতিটি রাতের ট্রেনে দু’জন অফিসার নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। যা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করছে। জনসাধারণের আবাসন উন্নয়নে অপরাধের হার ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে (৪২৫ বনাম ৪৯৭)।
এনওয়াইপিডির হেইট ক্রাইম টাস্ক ফোর্স পক্ষপাতমূলক অপরাধের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হ্রাস রেকর্ড করেছে, যেখানে ২০২৪ সালের জানুয়ারির তুলনায় ২০২৫ সালে আটটি কম ঘটনা ঘটেছে (৩০ বনাম ৩৮)। তবে, রিপোর্টকৃত ধর্ষণের সংখ্যা বেড়েছে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ১৪৯টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে যা ২০২৪ সালের জানুয়ারির ১০৬টির তুলনায় বেশি। এর মধ্যে ৮৮টি ঘটনা ২০২৫ সালে সংঘটিত হয়েছে এবং ৬১টি অতীতের বছরগুলোর ঘটনা যা সম্প্রতি রিপোর্ট করা হয়েছে।
এই বৃদ্ধি মূলত নিউ ইয়র্কের সম্প্রতি পরিবর্তিত আইনি সংজ্ঞার কারণে যা নির্দিষ্ট যৌন নির্যাতনের শিকারদের ধর্ষণের শিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এছাড়াও বেশিরভাগ রিপোর্টকৃত ধর্ষণের ঘটনাই গার্হস্থ্য সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এনওয়াইপিডি সকল যৌন নির্যাতনের শিকারদের সামনে এসে তাদের অভিজ্ঞতা জানাতে উৎসাহিত করছে।