ফিলিস্তিনিপন্থী অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে ‘‌তিনশ’ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল!

ডেস্ক রিপোর্ট
  ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৫:৫৫


ফিলিস্তিনিপন্থী অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালেয়ের প্রায় তিনশ’ বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের মধে্য অনেক পিএইচডিরত অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন। এসব শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘গাজায় যুদ্ধবিরোধী’ বিক্ষোভ-প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন ও ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলী হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রবন্ধ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মতামত প্রকাশ করেছিলেন।
বৃহষ্পতিবার গায়ানা সফরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন,  অন্তত ৩০০ বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েল-বিরোধী বলে বিবেচিত বক্তৃতা দেওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার অংশ হিসেবে কতজন শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে রুবিও এসব কথা বলেন।
মার্কো রুবিও বলেন,‘প্রতিদিনই আমরা এ কাজ করি। যখন আমরা এসব উন্মাদ খুঁজে পাই তখন তাদের ভিসা বাতিল করি।’
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ করেছেন। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ‘গাজায় যুদ্ধবিরোধী’ বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিক শিক্ষার্থীকে ইতোমধ্যে আইনের আওতায় এনেছে।
সম্প্রতি ফিলিস্তিনিদের সমর্থন জানানোর কারণে তুর্কি শিক্ষার্থী রুমেইসা ওজতুর্কের ভিসা বাতিল করেছে মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। তার আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইফতার করতে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় ওজতুর্ককে আটক করা হয়।
৩০ বছর বয়সী ওজতুর্ক বোস্টন অঙ্গরাজ্যের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল পর্যায়ে অধ্যয়নরত ছিলেন। ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে সোমারভিলে নিজ বাড়ির কাছ থেকে তাকে আটক করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখোশ পরিহিত সাদা পোশাকে থাকা সরকারি কর্মীরা ওই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এমন অভিযান উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।
ওজতুর্ককে আটকের ঘটনায়, ম্যাসাচুসেটস অ্যাটর্নি জেনারেল আন্দ্রেয়া জয় ক্যাম্পবেল বলেন, ‘ এমন অতর্কিত ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে আটক উদ্বেগজনক। এটি জননিরাপত্তা নয়, এটি ভীতি প্রদর্শন। ’
ডিএইচএসের এক জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন হামাসের সাথে ওজতুর্কের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এজন্য তাকে আটক এবং ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে বাকস্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ বলে তীব্র সমালোচনা করেন মানবাধিকার কর্মীরা।
মার্চ মাসে দ্য ডেইলী টাফ্টসে ওজতুর্ক এর লেখা একটি উপ প্রবন্ধ প্রকাশ হয়েছিলো। তার সেই লেখায় ‘ফিলিস্তিনি গণহত্যা স্বীকার করতে হবে’ এমন দাবি করা হয়।
তবে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, শিক্ষার্থীদের এসব আন্দোলন ইহুদীবিদ্বেষী যা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ওজতুর্ক হামাসের মতো একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের সমর্থনে কাজ করছিলেন, যে সংগঠনটি মার্কিন নাগরিকদের হত্যা করাকে উপভোগ করে। সবার মনে রাখা উচিত, মার্কিন ভিসা পাওয়া একটি সুযোগ, এটি কারও অধিকার নয়।