বিক্ষোভের আয়োজনগুলোর মধ্যে ছিল ম্যানহাটনের মধ্যভাগ এবং হোয়াইট হাউযের সামনে সমাবেশ থেকে শুরু করে ম্যাসাচুসেটসে অ্যামেরিকান বিপ্লবী যুদ্ধ শুরুর ২৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবাদ। অ্যামেরিকার বিভিন্ন স্থানে শনিবার বিক্ষোভ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধীরা।
সিবিএস নিউজ জানায়, সড়কে বড় ও ছোট আকারের এ বিক্ষোভগুলোতে দেশের গণতান্ত্রিক রীতিনীতির জন্য হুমকি হিসেবে দেখা বিষয়গুলোর সমালোচনা করেছেন তারা। বিক্ষোভের আয়োজনগুলোর মধ্যে ছিল ম্যানহাটনের মধ্যভাগ এবং হোয়াইট হাউযের সামনে সমাবেশ থেকে শুরু করে ম্যাসাচুসেটসে অ্যামেরিকান বিপ্লবী যুদ্ধ শুরুর ২৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবাদ।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মেইনের বাড়ি থেকে তিন ঘণ্টার মতো দূরত্বে গাড়িতে করে এসে লেক্সিংটন এবং কনকর্ডের যুদ্ধের সময়কার ঘটনার চিত্রায়ন দেখতে আসেন টমাস ব্যাসফোর্ড। একই সঙ্গে ১৭৭৫ সালের ১৯ এপ্রিল বৃটেইনের কাছ থেকে অ্যামেরিকার স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরুর সময়কার একটি ঘটনার চিত্রায়নও দেখেন তিনি।
৮০ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত এ রাজমিস্ত্রি বলেন, তিনি মনে করেন, অ্যামেরিকানরা বর্তমানে তাদের নিজ সরকারের আক্রমণের মুখে রয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘অ্যামেরিকায় স্বাধীনতার জন্য এটি (বর্তমান) খুবই বিপজ্জনক সময়।
‘আমি চেয়েছিলাম ছেলেরা এ দেশের উন্মেষের বিষয়ে জানুক এবং বিষযটি যে কখনও কখনও আমাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে হবে।’ এদিকে ট্রাম্পের বিলিয়নেয়ার উপদেষ্টা এবং ফেডারেল সরকারের আকার কমানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে টেসলা গাড়ির ডিলারশিপগুলোর বাইরে প্রতিবাদের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
অন্যদিকে কেউ কেউ কমিউনিটির প্রতি সেবামূলক নানা ইভেন্টের (খাদ্য সংগ্রহ, শিক্ষামূলক কর্মসূচি এবং স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে স্বেচ্ছাশ্রম) আয়োজন করে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অ্যামেরিকাজুড়ে প্রতিবাদ দেখা গেছে। এপ্রিলের শুরুতে ট্রাম্প এবং বিলিয়নেয়ার মাস্কের বিরোধীরা ফেডারেল সরকারের আকার কমানো, অর্থনীতি, মানবাধিকার এবং অন্যান্য ইস্যুতে প্রশাসনের পদক্ষেপের প্রতিবাদে অ্যামেরিকাজুড়ে সমাবেশ করে।
নাগরিক অধিকার সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন, এলজিবিটিকিউ অ্যাডভোকেট, ভেটেরান ও নির্বাচনবিষয়ক অধিকারকর্মীসহ ১৫০টি গ্রুপ ১ হাজার ২০০টিরও বেশি ‘হ্যান্ডস অফ!’ প্রতিবাদের পরিকল্পনা করে।
আয়োজকরা বলছেন, তারা ট্রাম্পের নাগরিক অধিকার ও সংবিধান লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন, যার মধ্যে রয়েছে অভিবাসীদের ব্যাপক নির্বাসনের প্রচেষ্টা এবং হাজার হাজার কর্মীকে বরখাস্ত করে ফেডারেল সরকারের আকার কমানো ও সংস্থাগুলোকে কার্যকরভাবে বন্ধ করার চেষ্টা।
কিছু বিক্ষোভে অ্যামেরিকান বিপ্লবী যুদ্ধের চেতনাকে সম্পৃক্ত করে বিক্ষোভকারীরা ‘কোনো রাজা নয়’ স্লোগান দেন এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আহ্বান জানান। কনকর্ডের বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বোস্টনের বাসিন্দা জর্জ ব্রায়ান্ট বলেন, ট্রাম্প অ্যামেরিকাকে ‘পুলিশি রাষ্ট্র’ বানিয়ে ফেলছেন কি না, তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন তিনি।
এ ব্যক্তির হাতে একটি সাইন ছিল, যাতে লেখা ছিল, ‘ট্রাম্পের ফ্যাসিস্ট সরকারকে এখনই বিদায় নিতে হবে।’ ব্রায়ান্ট আরও বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) আদালতের নির্দেশ অমান্য করছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের অপহরণ করছেন…এটি ফ্যাসিবাদ।’ ওয়াশিংটনে বিক্ষোভে আসা বব ফ্যাসিক বলেন, তিনি হোয়াইট হাউযের সামনে সমাবেশে এসেছেন সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত ন্যায়বিচারের যথাযথ অধিকার এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য ফেডারেল সুরক্ষা কর্মসূচির ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের হুমকি নিয়ে উদ্বেগের কারণে।