বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক আচরণের প্রতিবাদে জাতিসংঘের সামনে মানববন্ধন

যুক্তরাষ্ট্র সংবাদদাতা
  ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:১১

মহাসমাবেশের নামে বিএনপি রাজধানী ঢাকায় পুরনো স্টাইলে যে তাণ্ডব চালিয়েছে তার নিন্দা ও প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে এবং সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় পৃথক দুটি সমাবেশ করা হয়েছে। উভয় সমাবেশ থেকে জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর এবং পুলিশ হত্যা ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার জন্যে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
জাতিসংঘের সামনের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ নেতা ড. প্রদীপ কর। তিনি তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত চক্র পুনরায় বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। 
ড. প্রদীপ কর উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর দেওয়া বাংলাদেশ আজ সময়ের পরিক্রমায় যখন বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে, ঠিক সে সময়েই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এবং তাদের দোসররা ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাতের গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু সারাবিশ্বের প্রবাসীরা আজ সোচ্চার যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে-সেই বার্তা জাতিসংঘের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে জানিয়ে দিতেই আমরা তাৎক্ষণিক এ সমাবেশের আয়োজন করেছি।
এতে আরও বক্তব্য দেন ডা. মাসুদুল হাসান, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী ও এম এ জলিল প্রমুখ।
একই দিন সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে জ্যামাইকায় হিলসাইড অ্যাভিনিউতে একটি পার্টি হলের সমাবেশ থেকেও বিএনপি-জামায়াতদের যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক প্রতিটি প্রবাসীকে সজাগ থাকার উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, পঁচাত্তরের বাংলাদেশ আর আজ ২০২৩ সালের বাংলাদেশ এক নয়। ষড়যন্ত্রের দিন শেষ। জাকারিয়া উল্লেখ করেন, বিএনপি এবং জামায়াত ২৮ অক্টোবর যে কর্মসূচি দিয়েছিল, আমরা ভেবেছিলাম যে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারায় সেটি পালিত হবে। সে কারণেই ২০টি শর্তে বাংলাদেশ সরকার তাদের অনুমতি দেয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, তারা আবারো আন্দোলনের লেবাসে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করেছে। বাস-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি সংযোগ করেছে। জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী একজন পুলিশকে তারা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, পেশাগত দায়িত্ব পালনরত গণমাধ্যম কর্মীদের গায়ে তারা হাত তুলতে দ্বিধা করেনি।
মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুব্রত তালুকদারের সঞ্চালনায় এ সমাবেশে বক্তব্য কালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম কলিন্স বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেদিন টানেল যুগে প্রবেশ করলো, ঠিক সেদিনই বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে বাংলাদেশে আবারো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড শুরু করলো। এর মাধ্যমে তারা জাতিকে জানিয়ে দিতে চায় যে, বাংলাদেশ যাতে আর এগুতে না পারে। এমন দেশ-বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্তদের দ্রুত বিচার আইনে দণ্ডিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এই সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোর্শেদ খান বদরুল, কুইন্স বরো আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী জাহাঙ্গির আলম, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ূন কবীর, সহ-সভাপতি সমীরুল ইসলাম বাবলু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, মশিউর রহমান, প্রচার সম্পাদক প্রবাল মির্জা, তথ্য সম্পাদক সৈয়দ রেজাউর রহমান তুহিন, ঝুমুর আকতার ও অজিৎ ভৌমিক প্রমুখ।
রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের নামে বাংলাদেশে পুনরায় বিএনপি-জামায়াত জ্বালাও-পোড়াওয়ের তাণ্ডবে মেতে ওঠায় সোমবার দুপুরে ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো।