মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ৮১তম জন্মদিন ছিল গত ২০ নভেম্বর সোমবার। অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্টে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বয়স এখন ৭৭ বছর। আগামী ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। শোনা যাচ্ছে সেই নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের পদের জন্য লড়বেন তারা দুজন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী বাইডেন ও ট্রাম্পের বয়স নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন ভোটাররা। কারণ, নির্বাচনে যিনিই নির্বাচিত হন না কেন, শপথ নেওয়ার সময় তিনিই হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বয়সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার রেকর্ডের অধিকারী ৭৭ বছর বয়সী জো বাইডেন। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙবেন। সেবার ক্ষমতা ছাড়ার সময় তার বয়স হবে ৮৬ বছর।
কথা বলার সময় অস্পষ্ট উচ্চারণ এবং মাঝে মাঝে ভুলে যাওয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শুধু তিনিই নন, তার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়েও সমালোচনা চলছে। জনসমক্ষে উল্টাপাল্টা কথা বলার জন্য ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত তিনি। গত ২০ নভেম্বর সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে জানান, সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট অনেক সফল দ্বিপক্ষীয় আইন পাস করেছেন যা অন্যান্য দেশের প্রেসিডেন্টদের তুলনায় বেশি। এছাড়া তিনি একাধিক বৈদেশিক নীতির চ্যালেঞ্জ পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছেন। এর পেছনে মূল কারণ তার বয়স ও অভিজ্ঞতা। কিন্তু জরিপে দেখা যাচ্ছে, ভোটারদের কাছে তার ও ট্রাম্পের বয়সের বিষয়টি এখনো উদ্বেগের। গত সেপ্টেম্বরে এবিসি নিউজ ও ওয়াশিংটন পোস্ট পরিচালিত এক জরিপে তিন-চতুর্থাংশ আমেরিকান (৭৪ শতাংশ) বলেছেন, বাইডেনের বয়স আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য খুব বেশি। আর অর্ধেক আমেরিকান (৫০ শতাংশ) ট্রাম্পকে নিয়ে একই কারণে শঙ্কিত। তবে বয়সের এ উদ্বেগকে হেসে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রেসিডেন্ট। ভোটারদের কাছে তার বক্তব্য, প্রায় অর্ধশতকের তার রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা ও বয়স, দুটোই মার্কিন সমস্যা সমাধানে একটি সম্পদ।
হোয়াইট হাউসে থ্যাংকসগিভিং উপলক্ষে ২০ নভেম্বর টার্কি অবমুক্ত করে নিজের জন্মদিন উদ্যাপন করেছেন তিনি। অনুষ্ঠানে বাইডেন রসিকতা করে বলেন, এ ধরনের টার্কি অনুষ্ঠানে ৭৬ বছর আগে তিনি প্রথম ছিলেন।
পরপরই বাইডেন বলেন, ‘আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমি প্রথমটিতে সেখানে ছিলাম না। কারণ এটিতে অংশগ্রহণ করার জন্য আমি খুবই ছোট ছিলাম।’ অন্যদিকে ২০২৪ সালে রিপাবলিকান মনোনয়নে এগিয়ে থাকা ট্রাম্পের বয়স এখন ৭৭। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে এক জরিপে দেখা যায়, ভোটারেরা বাইডেনের বয়স ও দেশ শাসনের জন্য তাঁর উপযুক্ততা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। ৬৫ শতাংশ ডেমোক্রেটসহ মোট ৭৭ শতাংশ ব্যক্তি মনে করেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য বাইডেনের বয়স বেশি।
অন্যদিকে ৩৯ শতাংশ আমেরিকানদের মতে, বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে এখনো যথেষ্ট প্রখর। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভুল কথাবার্তা নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি। সম্প্রতি তিনি হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবানকে তুরস্কের নেতা বলে সম্বোধন করেন।
সম্প্রতি ট্রাম্প বলে বসেন, তিনি ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন নয়, বারাক ওবামাকে পরাজিত করেছেন। ট্রাম্পের এসব ভুল ভোটারদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী রন ডিস্যান্টিসের প্রচারাভিযান দল। গত ১৯ নভেম্বর রবিবার রন ডিস্যান্টিস সিএনএনকে বলেন, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব ৮০ বছর বয়সী ব্যক্তির জন্য নয়। এর আগে সবচেয়ে বেশি বয়সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিপাবলিকানের রোনাল্ড রিগ্যান। দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার পর ৭৭ বছর বয়সে ১৯৮৯ সালে ওভাল অফিস ছাড়েন তিনি।