নিউইয়র্কে ৭০ শতাংশই ভাড়াটে বাসিন্দা

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৩৬

দিন যত যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়। বাড়িভাড়া দিয়ে খেয়ে-পরে থাকাটাই এখন যেন বড় চ্যালেঞ্জ! সঞ্চয় তো বিলাসিতা! এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের স্বপ্নের শহর নিউইয়র্কেও একই হাল। শহরটিতে বাস করা ৮৫ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রতি চারজনের মধ্যে একজন (২৫%) মানুষ এখন মৌলিক চাহিদা, আবাসন, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। এমনকি শহরটিতে বাস করা ৭০ শতাংশ বাসিন্দাই ভাড়াটে। এমন পরিস্থিতিতে নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনের প্রার্থী জোহরান মামদানিও তার নির্বাচনি ইশতেহারে বাড়িভাড়া স্থবিরকণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সোমবার এএফপির প্রতিবেদনে উঠে আসে এই তথ্য।
সম্পত্তি সাইট স্ট্রিট ইজির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুনে শহরটিতে গড় মাসিক ভাড়া প্রথমবারের মতো ৪,০০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গড় বাড়িভাড়ার দ্বিগুণেরও বেশি। গত বছর থেকে ২০২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে ফ্ল্যাটের ভাড়া ৫.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিরিক্ত এই খরচ মানুষের জীবিকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। একজন অবসরপ্রাপ্ত বাসিন্দা সান্তিয়াগো জীবনযাত্রার এমন ব্যয়ভারে অতিষ্ঠ হয়ে বিক্ষোভে নামে। তার হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- ‘আমরা আমাদের সম্প্রদায়ের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন চাই। আমরা আবাসন খরচে জর্জরিত।’ এমন বহু পরিবার উপায় না পেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের সন্ধানে নিউ জার্সি বা অন্যান্য এলাকায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। শুধু ভাড়াই নয়, ক্রমবর্ধমান মুদিখানার খরচও নিউইয়র্কবাসীদের অর্থনৈতিক দুর্ভোগের আরেকটি বড় কারণ।
গত এক বছরে শহরে ডিম, মাংস, মাছ এবং হাঁস-মুরগির দাম ৮.৯ শতাংশ বেড়েছে। নিউইয়র্কবাসীদের নব্বই শতাংশ (৯/১০) মনে করেন যে, তাদের আয়ের চেয়ে মুদিখানার খরচ দ্রুত বাড়ছে। নিউইয়র্কের জীবনযাত্রার ব্যয় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ৪১ বছর বয়সি বারটেন্ডার স্টিভেন লোজের মতো পেশাদাররাও এখন শহর ছেড়ে আরও সাশ্রয়ী স্থানে যাওয়ার কথা ভাবছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের টাকা কোথায় যাচ্ছে, তা নিয়ে আমরা সব সময়ই হতবাক থাকি। খরচ বেড়েই চলেছে।’
এমন খরচের মাঝেই শহরটিতে হতে যাচ্ছে মেয়র নির্বাচন। আগামী ৪ নভেম্বরের আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী জোহরান মামদানি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। বিদায়ি মেয়র এরিক অ্যাডামসের সময়ে বাড়িভাড়া ১২.৬ শতাংশ বেড়েছে। মামদানি এই পরিস্থিতি পালটাতে চান। তার নির্বাচনি মূল ইশতেহারে অন্যতম হলো আবাসন খরচ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে আগামী দশ বছরে ২,০০,০০০ নতুন বাড়ি নির্মাণ করা।