যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের জয়জয়কার

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৫৫

স্প্যানবার্গার ভার্জিনিয়ার প্রথম নারী গভর্নর
 প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বড় প্রভাব পড়েছে ভার্জিনিয়ায়, যে স্টেটে বসবাস হাজারো ফেডারেল কর্মী ও নামী সরকারি ঠিকাদারি করা প্রতিষ্ঠানগুলো। ভার্জিনিয়ার গভর্নর নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গারের জয়ের খবর দিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
রয়টার্স জানায়, ওয়াশিংটন ডিসিতে ধুঁকতে থাকা এবং প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিপরীতে যথাযথ প্রতিক্রিয়ার পথ পেতে হিমশিম খাওয়া দলের জন্য অত্যন্ত দরকারি ছিল স্প্যানবার্গারের এ জয়। বার্তা সংস্থাটি জানায়, কংগ্রেসের সাবেক সদস্য ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রাক্তন কর্মকর্তা স্প্যানবার্গার মধ্যমপন্থি হিসেবে নির্বাচনে লড়েন। তিনি হবেন দক্ষিণাঞ্চলীয় স্টেটটির প্রথম নারী গভর্নর। রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী উইনসাম আর্ল-সিয়ার্সকে হারিয়ে গভর্নরের পদে আসীন হবেন স্প্যানবার্গার।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বড় প্রভাব পড়েছে ভার্জিনিয়ায়, যে স্টেটে বসবাস হাজারো ফেডারেল কর্মী ও নামী সরকারি ঠিকাদারি করা প্রতিষ্ঠানগুলো। স্প্যানবার্গারের এ জয় স্টেইটে জয়ের একটি প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। স্টেইটে ১৯৭৭ সালের পর মাত্র একবার প্রেসিডেন্টের পার্টির প্রার্থী গভর্নর হন। অন্যান্য গভর্নর নির্বাচনগুলোতে বিরোধী দলের প্রার্থীরা জয়ী হন গভর্নর হিসেবে।
ভার্জিনিয়ার বর্তমান গভর্নর রিপাবলিকান গ্লেন ইয়ংকিন, যিনি চার বছর আগে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মহামারিকালীন নীতির বিরোধিতা করে জয়ী হন। বিজয়ী হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে উজ্জ্বল লাল রঙের স্যুট পর স্প্যানবার্গার বলেন, ভার্জিনিয়াবাসী একটি বার্তা দিয়েছে। তারা গোটা বিশ্বকে এ বার্তা দিয়েছে যে, ভার্জিনিয়া দলীয় পক্ষপাতিত্বের পরিবর্তে বাস্তববাদকে বেছে নিয়েছে।

মিকি শেরিল নিউজার্সির প্রথম নারী গভর্নর
নিউ জার্সির গভর্নর পদের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী মিকি শেরিল জয় পেয়েছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রিপাবলিকান প্রার্থী জ্যাক সিয়াতেরেলিকে ভোটে হারিয়ে অঙ্গরাজ্যটির ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এক প্রতিবেদনে তথ্য জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। গভর্নর নির্বাচনে জয়লাভের পর ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মিকি শেরিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্য এক্স -এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘নিউ জার্সি এই মহান অঙ্গরাজ্যের ৫৭তম গভর্নর হওয়ার জন্য আপনাদের আস্থা অর্জন করা আমার জীবনের সর্বোচ্চ সম্মান।’ চার মেয়াদের মার্কিন কংগ্রেস সদস্য শেরিল আরও বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি- আমি আপনাদের কথা শুনবো, সাহসিকতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেবো।’ এদিকে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জয় পেয়েছেন ডেমোক্র্যাট সমর্থিত প্রার্থী জোহরান মামদানি। এর মাধ্যমে প্রথম মুসলিম মেয়র পেলো নিউইয়র্কবাসী। ৩৪ বছর বয়সী কুইন্সের অঙ্গরাজ্য আইনপ্রণেতা জোহরান মামদানি হবেন নিউইয়র্ক সিটির ১১১তম মেয়র।
নির্বাচনে জোহরান মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুওমো ও রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়া। এদিকে, ভার্জিনিয়ার গভর্নর নির্বাচনে জয় পেয়েছেন অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার। তিনি রিপাবলিকান লেফটেন্যান্ট গভর্নর উইনসোম আর্ল-সিয়ার্সকে পরাজিত করেছেন। এই নির্বাচনকে আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান পার্টির জনপ্রিয়তার এক গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে কংগ্রেসে ক্ষমতার ভারসাম্য নির্ধারিত হবে। বিবিসি, ইউএস টুডে সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে। এই জয় ডেমোক্র্যাটদের জন্য ইতিবাচক সংকেত, যারা সারা দেশে একের পর এক নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে আগামী বছরের ভোটের আগে গতি সঞ্চার করতে চায়।

গাজালা হাশমি ভার্জিনিয়ার নতুন লেফ. গভর্নর
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী গাজালা হাশমি ভার্জিনিয়ার লেফটেন্যান্ট গভর্নর নির্বাচনে রিপাবলিকান জন রিডকে পরাজিত করে জয়লাভ করেছেন। হাশমি ভার্জিনিয়া সিনেটে প্রথম মুসলিম এবং প্রথম দক্ষিণ এশীয় আমেরিকান সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সাম্প্রতিক এই জয়ের অর্থ, এখন তার সিনেট আসনটি পূরণের জন্য বিশেষ নির্বাচন করতে হবে। হাশমি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ২০১৯ সালে এবং বিস্ময়করভাবে এক রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত রাজ্য সিনেটের আসন উল্টে দিয়ে ভার্জিনিয়ার জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে নির্বাচিত হন।
পাঁচ বছর পর, ২০২৪ সালে, তিনি সিনেটের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কমিটির চেয়ার হিসেবে নিযুক্ত হন- যা ডেমোক্রেট পার্টির দুইটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার- প্রজনন স্বাধীনতা ও জনশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের পদ। হাশমির ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে, তিনি অন্যদের জীবনমান উন্নত করতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। বিশেষ করে আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবেশগত ন্যায়বিচারের বৈষম্য দূরীকরণে মনোনিবেশ করে কাজ করে যাচ্ছেন। গাজালা হাশমি ১৯৬৪ সালে ভারতের হায়দরাবাদে জিয়া হাশমি ও তানভীর হাশমির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।
শৈশব কেটেছে মালাকপেটে তার নানাবাড়িতে। তিনি মাত্র চার বছর বয়সে মা ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেখানে তারা তার বাবার সঙ্গে জর্জিয়ায় যোগ দেন। গাজালার পিতা অধ্যাপক জিয়া হাশমি, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। সেখান থেকে তিনি এম.এ. ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলাইনা থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করেন এবং খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন।
তিনি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানকার পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। গাজালার মা তানভীর হাশমি, বিএ এবং বি.এড ডিগ্রিধারী। তিনি ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন্স কলেজ, কোঠি থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। গাজালা তার স্কুল জীবনে শ্রেষ্ঠ ছাত্রী (ভ্যালেডিক্টোরিয়ান) হিসেবে স্নাতক হন এবং একাধিক পূর্ণ স্কলারশিপ ও ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি জর্জিয়া সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্সসহ বিএ এবং আটলান্টার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমেরিকান সাহিত্য বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। ১৯৯১ সালে গাজালা তার স্বামী আজহার রফিককে নিয়ে রিচমন্ড এলাকায় চলে যান। তাদের দুই প্রাপ্তবয়স্ক কন্যা রয়েছে।
তারা হলেন ইয়াসমিন ও নূর। দু’জনেই চেস্টারফিল্ড কাউন্টি পাবলিক স্কুল এবং ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। গাজালা হাশমি প্রায় ৩০ বছর ধরে অধ্যাপনা করেছেন। প্রথমে ইউনিভার্সিটি অব রিচমন্ডে এবং পরে রেনল্ডস কমিউনিটি কলেজে। রেনল্ডস কলেজে তিনি সেন্টার ফর এক্সিলেন্স ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিং প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

অ্যাটর্নি সোমা সায়ীদের ইতিহাস
 ইতিহাস গড়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী কুইন্স ডিস্ট্রিক্টের সিভিল কোর্টের বিচারক, অ্যার্টনি সোমা সায়ীদ। নিউইয়র্কের ডিস্ট্রিক্ট-১১’র সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে ডেমোক্র্যটিক পার্টি থেকে মোট ভোটের ৯৬.০৪ শতাংশ পেয়ে জয়লাভ করেছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ২৫৫,১২৩। সোমা কুইন্সে প্রথম বাংলাদেশি, প্রথম মহিলা সাউথ এশিয়ান এবং প্রথম মুসলিম নারী, যিনি বিচারক নির্বাচিত হলেন। জয়ী হয়ে তিনি বাংলাদেশি কমিউনিটির মুখ উজ্জ্বল করেছেন। বিজয়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সোমা সায়ীদ বলেন, এই জয় আমার একার নয়, এই জয় পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটির। জয়ের পেছনে অবদান রাখায় তিনি ভোটার, তার সমর্থক ও শুভাকাক্সক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
এই জয়ে তার স্বামী মিজানুর রহমান চৌধুরী বিরাট অবদান রাখেন। এ জন্য সোমা তার স্বামীকেও ধন্যবাদ জানান। কেবল বাংলাদেশি কমিউনিটি নয়, অন্যান্য কমিউনিটির ভোটাররাও তাকে ভোট দিয়েছেন। তাই তিনি তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।
কুইন্স ডিস্ট্রিক্টের সিভিল কোর্টের বিচারক সোমা নিউইয়র্ক এশিয়ান আমেরিকান জজ অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি প্রথম সাউথ এশিয়ান ও মুসলিম প্রেসিডেন্ট হিসেবে কুইন্স কাউন্টি ওমেন্স বারের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কুইন্স কাউন্টির জজ নির্বাচিত হওয়ার আগে বিশেষজ্ঞ প্রসিকিউটর এবং প্রাইভেট প্র্যাকটিশিনার ভাস্ট কমিউনিটি ও প্রোবনো বিশেষজ্ঞ। তিনি আলবেনি ল’ স্কুল থেকে আইন বিষয়ে জুরিস ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। এর আগে তিনি নিউইয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির সিটি কলেজ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। একজন আইনজীবী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি সোমা সায়ীদ কমিউনিটির বিভিন্ন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। অর্জন করেছেন বিভিন্ন অভিজ্ঞতা। লড়াই করেছেন নিউইয়র্কবাসীর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য।

জুমানি উইলিয়ামস আবারও পাবলিক অ্যাডভোকেট
৪ নভেম্বর মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নিউ ইয়র্ক সিটির পাবলিক অ্যাডভোকেট পদে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন জুমানি উইলিয়ামস। তিনি ৯৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ ভোটের ফলাফলে তিনি পেয়েছেন ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৩৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রিপাবলিকান দলের গনজালো ডুরান।
তিনি পেয়েছেন ৪ লাখ ১৮ হাজার ৩৮৬ ভোট। ২০১৯ সালে জুমানি উইলিয়ামস প্রথমবার পাবলিক অ্যাডভোকেট নির্বাচিত হন। এরপর তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টা, পুলিশি জবাবদিহিতা, আবাসন সংকট মোকাবিলা, শিক্ষায় সমতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বিস্তারে কার্যকর ভূমিকার কারণে তিনি দ্রুত নিউইয়র্কবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নেন। এবারের নির্বাচনে তাঁর বিজয় প্রমাণ করে, নগরবাসী এখনও সেই দৃঢ় নেতৃত্বেই আস্থা রাখছে, যে নেতৃত্ব অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ, কিন্তু জনগণের সেবায় নিবেদিত।
জুমানি উইলিয়ামস বলেন, এই শহরের প্রতিটি নাগরিক, বিশেষত যারা প্রান্তিক ও অবহেলিত, তাদের অধিকার, মর্যাদা ও ভবিষ্যতের জন্য আমি লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা কেবল প্রতিবাদ নয়, প্রস্তাব দিচ্ছি, একটি আরও ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নিউইয়র্ক গড়ার।

মার্ক লেবিন সিটি কম্পট্রোলার হলেন
 সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডারের স্থলাভিষিক্ত হলেন ম্যানহাটন বরো প্রেসিডেন্ট মার্ক লেভিন। ৪ নভেম্বরের নিউইয়র্ক সিটির সাধারণ নির্বাচনে কম্পট্রোলার পদে বিজয়ী হয়েছেন।
মোট ভোটের ৯৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ ফলাফল অনুযায়ী- মার্ক লেভিন পেয়েছেন ১৪ লাখ ১ হাজার ৮২৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পিটার কেফালাস পেয়েছেন ৩ লাখ ৮২ হজার ২৫৮ ভোট।
উল্লেখ্য যে, কম্পট্রোলার নিউইয়র্ক সিটির তৃতীয় সর্বোচ্চ পদ। নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রোলার শহরের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা হিসেবে শহরের আর্থিক স্বাস্থ্য রক্ষা করেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে অপচয়, জালিয়াতি এবং অপব্যবহার প্রতিরোধ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে সিটির সংস্থাগুলো সমস্ত নাগরিকের চাহিদা পূরণ করছে।

শাহানা হানিফ দ্বিতীয়বারের মতো সিটি কাউন্সিল মেম্বার হলেন
নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের নির্বাচনে বড় জয় নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সিটি কাউন্সিল মেম্বার হলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শাহানা হানিফ। ৪ নভেম্বর মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে শাহানা হানিফ পেয়েছেন ৫১৬৫৩ ভোট, যা মোট ভোটের ৯৬.০৪ শতাংশ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পাটির ব্রেট উইনকুপ পেয়েছেন ৫২১৮ ভোট। শাহানা প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী, প্রথম কোন মুসলিম নারী হিসেবে নিউইয়র্ক সিটির কাউন্সিলর হিসেবে ২০২১ সালে প্রথম নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও জয়ী হয়ে ইতিহাস গড়লেন। তার এই বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ জনগণের আস্থা, ভালোবাসা এবং প্রতিনিধিত্বের প্রতিশ্রুতি তাকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়।
সিটির কেনসিংটন, পার্ক স্লোপ, কারল রামেল হিলসহ বৃহত্তর ব্রুকলিন এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে গঠিত এই ডিস্ট্রিক্টে শাহানার কাজ ছিল বহুমুখী পার্ক ও রাস্তার উন্নয়ন থেকে শুরু করে স্কুল অবকাঠামো, পরিবেশবান্ধব প্রকল্প, স্বাস্থ্য ও অভিবাসন অধিকার সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন। তার উদ্যোগে পাশ হয়েছে ‘ইমিগ্র্যান্ট ওয়ার্কার প্রোটেকশন অ্যাক্ট’, গর্ভপাত অধিকার সুরক্ষা আইন এবং লুপাস সচেতনতা বৃদ্ধি সম্পর্কিত বিল। নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর বিজয় উল্লাসে কেঁপে ওঠে শাহানার নির্বাচনী সদরদপ্তর। তিনি বলেন, এই জয় শুধু আমার নয়-এটি আমাদের পুরো কমিউনিটির। এই বিজয়ে প্রমাণ হয়েছে, বৈচিত্র্য ও মর্যাদার সঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব, এবং আমাদের কণ্ঠ চিরকাল প্রাসঙ্গিক থাকবে।
প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শাহানার বিজয় নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। উল্লেখ্য যে, শাহানা হানিফ চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি ও ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোহাম্মদ হানিফের কন্যা। তার দেশের বাড়ি চট্টগ্রামের নাজিরহাটের পূর্ব ফরহাদাবাদে।