ক্যাপিটলে দাঙ্গার তদন্তে টেলিকম ফার্মগুলোর ভূমিকা জানতে চান মার্কিন সেনেটর

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৫১


যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে ৬ জানুয়ারি, ২০২১ এ হওয়া দাঙ্গার সঙ্গে সম্পর্কিত এক তদন্তে দেশটির আটজন সেনেটরের ফোনের তথ্য চেয়ে জারি করা সমন এটিএন্ডটি, ভেরিজন ও টি-মোবাইল গ্রহণ করেছিল না আপত্তি জানিয়েছিল, সেটি কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীরা প্রকাশ করুক এমনটি চান রিপাবলিকান সেনেটর মার্শা ব্ল্যাকবার্ন।
এ বিষয়ক কয়েকটি চিঠিপত্র দেখার পর সেগুলোর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার এ খবর দিয়েছে।
গত সোমবার মার্কিন সেনেটের রিপাবলিকানরা ২০২৩ সালের একটি নথি প্রকাশ করেছেন। তাতে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ তদন্ত সংস্থা এফবিআই ব্ল্যাকবার্নসহ মার্কিন বিচার বিভাগের ওই দাঙ্গার তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত সেনেটরদের ফোন থেকে ‘টোল রেকর্ডস’ নামে পরিচিত ফোন ডেটা পেয়েছে।
টেলিকম কোম্পানিগুলো কি ‘তাদের ব্যক্তিগত ডিভাইস, তাদের দাপ্তরিক সরকারি ডিভাইস, না উভয় ডিভাইসের সেল ফোন রেকর্ড’ দিয়েছে, এরকম বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর চেয়েছেন ব্ল্যাকবার্ন।
পৃথকভাবে রিপাবলিকান সেনেটর বিল হেগারটি জানিয়েছেন, তার ফোনের রেকর্ডগুলো প্রকাশের করার বিষয়ে উত্তর চেয়ে ভেরিজনের কাছে লিখেছেন তিনি।
যে আটজন আইনপ্রণেতার তথ্য জব্দ করা হয়েছিল হেগারটি তাদের মধ্যে একজন।
শুক্রবার ভেরিজন রয়টার্সকে জানিয়েছে, যে গ্রাহকদের বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছিল তাদের তথ্য ও কল রেকর্ডস সরবরাহ করেছে তারা।
ভেরিজন বলেছে, “ফেডারেল আইন অনুযায়ী ভেরিজনের মতো কোম্পানিগুলো গ্রান্ড জুরির সমনে সাড়া দিতে বাধ্য। আমরা এটি গোপন রাখতে একটি বৈধ সমন ও আদালতের আদেশ পেয়েছি। কেন ওই তথ্য চেয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছিল আর তদন্তটি কী নিয়ে ছিল আমাদের তা বলা হয়নি।”
ব্ল্যাকবার্ন জানিয়েছেন, তিনটি কোম্পানিই ফোন রেকর্ডস সম্পর্কিত সমন পেয়েছিল।
তিনি বলেনস, “সমনে ৪ জানুয়ারি, ২০২১ থেকে ৭ জানুয়ারি, ২০২১ পর্যন্ত আমাদের ডিভাইস থেকে কোন সময়, কাকে ফোন করা হয়েছিল, কল কতোক্ষণ স্থায়ী হয়েছিল, কল কোথা থেকে করা হয়েছিল, এসব জানতে চাওয়া হয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ওই সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের ফল না মেনে তা উল্টে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। এরই এক পর্যায়ে কংগ্রেস বাইডেনের জয় অনুমোদন করার সময় ট্রাম্পের সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালান আর তাতে অন্তত ছয়জন নিহত হন।
ক্যাপিটলে এই হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছিল। কিন্তু বারবার বিলম্বিত হওয়ায় ও আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে এই মামলা আর বিচার পর্যন্ত যেতে পারেনি।
বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ ট্রাম্পের ওই মামলার তদন্ত করেছিলেন। এই তদন্তের অংশ হিসেবেই ওই ফোন রেকর্ডগুলো চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার পর স্মিথ মামলাটি বাদ দেন।
এক্ষেত্রে স্মিথ একজন বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়ে মার্কিন বিচার বিভাগের দীর্ঘদিন ধরে মেনে আসা নীতির কথা উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দাবি করেছেন, তিনি যেসব প্রমাণ জড়ো করেছিলেন তা বিচারে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশনের চেয়ার‌ম্যান ব্রেন্ডন কার শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি আগেই আইনপ্রণেতাদের রেকর্ড প্রকাশের ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছেন, “এখানে যা ঘটেছে তার তল পর্যন্ত যাওয়ার প্রচেষ্টায় অংশ নেব আমরা।”