নিউইয়র্কে এমটিএ’র ভাড়া আরো বাড়তে পারে

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:২১


নিউইয়র্কের ট্রানজিট সিস্টেম বা পরিবহন ব্যবস্থাকে সচল রাখতে মূলত শক্তিশালী অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে ২০২৬ সালের জন্য ২১.৩ বিলিয়ন ডলারের একটি পরিচালন বাজেট অনুমোদন করেছে এমটিএ বোর্ড। বুধবার এই বাজেট অনুমোদিত হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিউইয়র্ক সিটির এই পরিবহন ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে একটি মজবুত অর্থনীতির আশা করা হচ্ছে। কারণ, এমটিএ-র পরিচালন বাজেটের ৪৩ শতাংশই এখন শহর ও অঙ্গরাজ্যের আর্থিক সক্ষমতার সাথে যুক্ত বিভিন্ন ট্যাক্স বা কর থেকে আসে। কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে, কোনো কারণে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে সংস্থাটি দ্রুত বড় ধরনের ঘাটতির মুখে পড়তে পারে। অথচ এই ঝুঁকি মাথায় নিয়েই তারা ভাড়া ও টোল বৃদ্ধি এবং ক্যাসিনো থেকে আসা নতুন আয়ের ওপর নির্ভর করে পরিকল্পনা সাজিয়েছে।  এমটিএ-র প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা জয় প্যাটেল বলেন, ‘এটি একটি শক্তিশালী পরিকল্পনা। তবে সামনের বছরগুলো চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।’
এমটিএ আশা করছে, ২০২৬ সাল থেকে চালু হতে যাওয়া নতুন ক্যাসিনোগুলো থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার আয় হবে। তবে ক্যাসিনো খুলতে দেরি হলে এই রাজস্ব আয় ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। বোর্ড সদস্য এবং অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান নীল জুকারম্যান জানান, এই পরিকল্পনায় ব্যয় সংকোচনের ক্ষেত্রে প্রকৃত কিন্তু সীমিত অগ্রগতি দেখা গেছে। তিনি বলেন, ‘এমটিএ-র মতো প্রতিষ্ঠানে খরচ কমানো সহজ নয়।’ কারণ সংস্থার ব্যয়ের বেশিরভাগই শ্রমিকদের মজুরি বা শ্রম খাতের পেছনে যায়।
জুকারম্যান আরো সতর্ক করে বলেন, ‘যদি আমরা এই সাশ্রয় করতে না পারি, তবে আমাদের ভাড়া আরো বেশি বাড়াতে হতে পারে।’ এমটিএ প্রধানরা গর্ব করে জানান, রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে এবং কিছু কাজ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সম্পন্ন করার মাধ্যমে সংস্থাটি ইতিমধ্যে ৫০ কোটি (৫০০ মিলিয়ন) ডলার সাশ্রয় করেছে। কর্মকর্তারা ২০২৯ সালের মধ্যে আরো ২৫ কোটি ডলার খরচ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেননি; তারা জানিয়েছেন বিস্তারিত তথ্য ‘ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায়’ জানানো হবে।
২০২৫ সালের শুরুতে চালু হওয়া ‘কনজেশন প্রাইসিং’ (যানজট ফি) থেকে আসা অর্থ এমটিএ-র দৈনন্দিন খরচ মেটাতে কোনো সাহায্য করবে না। আইন অনুযায়ী, এই অর্থ কেবল দীর্ঘমেয়াদী নির্মাণ এবং আধুনিকায়ন প্রকল্পে ব্যয় করা যাবে, সাধারণ পরিচালন খাতে নয়। এত সব ঝুঁকির মাঝেও এমটিএ চেয়ারম্যান ও সিইও জানো লিবার দাবি করেছেন যে, সংস্থার আর্থিক অবস্থা ‘খুবই মজবুত’, যদিও তিনি একই সাথে অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকির কথা স্বীকার করেছেন। বছরে ৪ লাখ ডলার বেতন পাওয়া এই এমটিএ বস বলেন, ‘এমটিএ বর্তমানে আর্থিকভাবে খুবই সুসংহত অবস্থায় আছে।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমরা আমাদের পূর্বাভাস তৈরির ক্ষেত্রে সবসময় রক্ষণশীল থাকি। আমি সবসময় অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত—কারণ এটি যাত্রীসংখ্যা এবং অন্য সবকিছুকে প্রভাবিত করে—তবে আমি আশাবাদী। আমরা প্রতিটি পরিস্থিতির জন্যই পরিকল্পনা করে রেখেছি।’