যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতায় গবেষণা তথ্য 

শেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের হত্যা করা হচ্ছে ৬ গুন বেশি

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৬

১৯৯৯ থেকে ২০২০। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতায় নিহত নারীদের মধ্যে শেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ নারীর সংখ্যা ছয় গুন বেশি ছিলো। নতুন একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। সামাজিক কাঠামোয় অসমতাই কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের উচ্চতর ঝুঁকিতে রেখেছে, বলা হয়েছে এর বিশ্লেষণে।
গবেষণার লেখক বারনাডাইন ওয়ালনার বেশ কষ্ট নিয়েই বলছিলেন, "এই যে শেতাঙ্গ নারীর তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের হত্যার পরিসংখ্যান ছয় গুন বেশি, বিষয়টি হৃদয়বিদারক।" কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরভিং মেডিকেল সেন্টারের ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ এর পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো তিনি।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০০০০০ কৃষ্ণাঙ্গ নারীর মধ্যে ১১.৬ জন হোমিসাইডের শিকার হয়েছেন। আর শেতাঙ্গ নারীদের প্রতি ১০০০০০ জনের মধ্যে ৩ জন এমন সহিংসতার শিকার।
তবে এই তারতম্য দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমের স্টেটগুলোতে ততটা বেশি নয়। এসব অঞ্চলেও কৃষ্ণাঙ্গ নারীই বেশি নিহত হচ্ছেন শেতাঙ্গ নারীর তুলনায়। তবে তা তিন গুন বেশি। সবচেয়ে কম অসমতা দেখা গেছে ভার্জিনিয়া, আলাবামা ও ফ্লোরিডায়। আর সবচেয়ে বেশি পার্থক্য দেখা গেছে উইসকনসিনে। এই স্টেটে শেতাঙ্গ নারীর তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের হত্যার শিকার হতে হচ্ছে ২০ গুন বেশি। ২০১৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এই তারতম্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।
গবেষণার লেখকরা এই পরিসংখ্যানকে রীতিমতো ডিস্টার্বিং বলে উল্লেখ করেছেন। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সময় কালেও উইসকনসিনে এই তারতম্য ছিলো ছয় গুন। যা এখন ২০ গুনে দাঁড়িয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, উইসকনসিন, মিসৌরি, অ্যারিজোনা ও ওকলাহোমায় ২০১৯-২০ সালে ২৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী প্রতি ১০০০০০ নারীর মধ্যে নিহতের সংখ্যা শেতাঙ্গের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ ১৫ জন বেশি।
গবেষকরা বলছেন, অবহেলিত জনসংখ্যা যেখানে বেশি সেখানেই এই অসমতা বেশি। ওয়ালেটহাব'র একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে ২০২৩ সালে উইসকনসিনের অর্থনীতি ছিলো যুক্তরাষ্ট্রে ৪৯তম। আর ওয়াশিংটন ডিসিকে চিহ্নিত করা হয় সবচয়ে বেশি বর্ণ সমতার স্টেট হিসেবে। লিঙ্গ, প্রতিবন্দ্বীতা ও জাতিগত সমতার বিবেচনায় উইসকনসিনের অবস্থান ৩১তম। আর মধ্যপশ্চিমের স্টেটগুলোর একটিও এই তালিকার সেরা দশে উঠে আসতে পারে নি।
বলা হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের ওপর চলে কাঠামোগত বর্ণবাদীতা। যার অনিবার্য শিকার হয়েই প্রাণ হারাতেও হয় তাদেরই বেশি। শিক্ষার সুযোগ, কর্মসংস্থান, দারিদ্র, গৃহায়ন ও বাড়ির মালিকানা এসব ক্ষেত্রেই দেখা যায় অসমতা। আর সে কারণে যেসব এলাকায় কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের বসবাস বেশি সেসব স্থানে তাদের হত্যার শিকার হতে হয় বেশি।
ওয়ালার বলছিলেন, অনেক ক্ষেত্রে নারীদের হত্যার শিকার হতে হয় তাদের ঘনিষ্ঠ পার্টনারের হাতেই। আর অর্থনৈতিক অসমতাই কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের সবচেয়ে বেশি সহিংসতার মুখে ঠেলে দেয়।
গবেষণায় আরও দেখানো হয়, অস্ত্রের অবাধ ব্যবহারও কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের এমন সহিংসতার বড় শিকারে পরিণত করছে।