এই জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৩.১ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০২২ এর মাঝামাঝিতে যা সর্বোচ্চ ৯.১ শতাংশে উঠেছিলো। অর্থনীতি তার মধ্য আকাশে যে বিপাকে পড়ে ছিলো তা কাটিয়ে একটা সফট ল্যান্ডিং করতে পেরেছে এটাই বলছেন বিশ্লেষকরা। কোভিড-উত্তর কালে এটাই যুক্তরাষ্ট্রের এখন পর্যন্ত বড় অর্জন। কিন্তু কিভাবে সম্ভব হলো এই সফট ল্যান্ডিং। বিশ্লেষকরা বলছেন এ জন্য বড় অবদানটি রেখেছেন অভিবাসীরা। আর এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উচিত অভিবাসীদের ধন্যবাদ দেওয়া। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে মূল্যস্ফীতিতে স্বাভাবিকতা ফেরা জরুরি ছিলো। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এখন সেদিকেই যাচ্ছে।
সন্দেহ মাত্র নেই যুক্তরাষ্ট্র এখন কিছুটা অভিবাসনের চাপেই রয়েছে। বিশেষ করে গত এক বছরে দক্ষিণের সীমান্ত দিয়ে যত মানুষ এসে পড়েছে তাদের চাপ সামলাতে হিমশিক খেতে হচ্ছে। সবশেষ উপাত্ত বলছে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে এক মিলিয়ন অভিবাসী। এবছরও এই গতি থামছে না।
এই অভিবাসীদের একটি প্রধানতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাদের তারুণ্য। যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারি বলছে, ২০২১ সালে যত ইমিগ্র্যান্ট এসেছে তাদের ৬৭ শতাংশেরই বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। যা যুক্তরাষ্ট্রে এই বয়সীদের গড় ৫৯ শতাংশের চেয়ে আরও ৮ শতাংশ বেশি।
এই তরুণ ইমিগ্র্যান্টদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এ দেশে এসেছেই এর শ্রমশক্তিতে ঢুকে পড়ার জন্য। যদিও তাদের অনেকেই কাজের ভিসা নিয়ে আসেননি কিন্তু শিগগিরই তারা ঢুকে পড়বেন অনানুষ্ঠানিক কর্মশক্তিতে।
ইমিগ্র্যান্টরা হয়তো এলাকায় তাদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক রয়েছে সেখানে ছড়িয়ে পড়বে, কিন্তু ধীরে ধীরে তারা সেখানেই যাবে যেখানে রয়েছে অবারিত কাজের সুযোগ। গত কয়েক বছর তারা যুক্তরাষ্ট্রে এই কর্মশক্তির অভাবটাই পূরণ করে আসছে। যেখানেই দেখা গেছে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি সেখানেই তারা হাজির হয়েছে, যোগ দিয়েছে কাজে। আর কাজে যোগ দেওয়া মানেই শ্রমের ব্যবহার। আর অর্থনীতিতে যত বেশি শ্রমের ব্যবহার অর্থনীতি ততই চাঙ্গা হবে।
শ্রমশক্তিতে অবদান ছাড়াও এই অভিবাসীরা বাজারে ভোক্তাও। ফলে তারা বাজারে বড় ক্রেতা হিসেবেও আবির্ভাব হয়েছে। কিন্তু আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে আসা ইমিগ্র্যান্টদের একটি বিশেষ চরিত্র তা হচ্ছে এদেশে ঋণ করার ক্ষেত্রে তাদের সীমিত প্রবেশাধিকার। আর তাতে তাদের আয়ের একটা অংশ সঞ্চয় করতেই হয়। আর প্রায়শই তারা তাদের আয়ের অর্থ নিজ দেশে রেমিট্যান্স হিসেবে পাঠাচ্ছেন। আর তারা যা আয় করছেন তা পুরোটা ভোগ করছেন না বলে বাজারে চাহিদা কিছুটা কমেছে। আর তাতে মুদ্রাস্ফীতিতে চাপ কমে।