আমেরিকার নির্বাচন

নিকি রানিং মেট না প্রতিদ্বন্দ্বী

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৫৯

সাউথ ক্যারোলাইনার প্রাইমারিতে ট্রাম্প পেয়েছেন ৫৯ শতাংশ আর হেলি পেয়েছেন ৩৯ শতাংশ ভোট। এর আগে যে চারটি প্রদেশে রিপাবলিকান দলের প্রাথমিক স্তরে নির্বাচন হয়েছে, প্রতিটিতেই জিতেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যতই তোপ দাগুন নিকি, প্রাক্তন প্রেসিড়েন্ট এখনও রিপাবলিকান ভোটারদের সব থেকে পছন্দের প্রার্থী। শনিবার সাউথ ক্যারোলাইনার ভোটে তিনি নিকিকে ২০%-এর বেশি ভোটে হারিয়েছেন।  কৃষ্ণাঙ্গদের নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘কুরুচিকর’ মন্তব্যের জন্য তাঁর সমালোচনায় ফের সরব হলেন রিপাবলিকান নেত্রী নিকি হেলি। শনিবার রিপাবলিকান দলের প্রাইমারি ভোটাভুটি হয়েছে। নিকি শিবিরের দাবি, সেই ভোট-প্রচারে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘কৃষ্ণাঙ্গেরা আমাকেই ভোট দেবেন। কারণ তাঁদের অবস্থা আমারই মতো। মাঝেমধ্যেই আইনঘটিত সমস্যায় ফেঁসে যান।’’ ট্রাম্পের সেই মন্তব্যের উল্লেখ করে হেলি বলেছেন, ‘‘টেলিপ্রম্পটার বন্ধ হলেই উনি যে যা খুশি তাই বলতে শুরু করেন, তা ফের প্রমাণিত হয়ে গেল।’’ নিকির দাবি, ‘কৃষ্ণাঙ্গেরা স্বভাবতই অপরাধপ্রবণ’, ট্রাম্পের এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে সেই বর্ণবৈষম্যমূলক মনোভাবই ফুটে উঠেছে।
নিকি এখনও লড়াই থেকে না সরলেও ট্রাম্প যে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে চলেছেন, তা প্রায় নিশ্চিত। ফলে জল্পনা চলছে, তখন ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কাকে বাছবেন ট্রাম্প? রিপাবলিকান দলের এক সম্মেলনে করা সমীক্ষা বলছেল, রিপাবলিকান ভোটদাতাদের পছন্দের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর তালিকার একদম প্রথম দিকে রয়েছেন দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত, বিবেক রামস্বামী ও তুলসী গ্যাবার্ড। রামস্বামী নিজেই প্রেসিডেন্ট দৌড়ে নেমেছিলেন, ১৫ জানুয়ারি সরে দাঁড়ান।
নিকি হেলির নিজের প্রদেশ সাউথ ক্যারোলাইনার প্রাইমারিতে তাঁকে ২০ শতাংশের বেশি ভোটে হারিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী রিপাবলিকান দলের ‘তারকা প্রার্থী’ ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার ফের বড় জয়ের পরে এই নামেই প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে উল্লেখ করতে শুরু করেছেন তাঁর সমর্থকেরা।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামস্বামী থেকে ফ্লরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস, সকলেই একে একে লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। রয়ে গিয়েছেন শুধু আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিকি।
সাউথ ক্যারোলাইনার দু’বারের গভর্নর নিকি থাকেনও সেখানেই । শনিবারের ভোটের আগে জোরদার প্রচার চালিয়েছিলেন তিনি। ট্রাম্পের আমলে তিনি আমেরিকার দূত ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে দেখা যায়, প্রাক্তন ‘বস’কে পাত্তাই দিচ্ছেন না তিনি। এমনকি, ট্রাম্পের জন্য ‘অপরিণত মানসিকতা সম্পন্ন’, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’, এ ধরনের বিশেষণও ব্যবহার করেন তিনি। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশিত হতে দেখা যায়, এই প্রদেশের ভোটদাতারা প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের উপরেই আস্থা রেখেছেন।
শনিবার ভোটের ফল প্রকাশিত হওয়ার আগে হেলি বলেছিলেন, ‘‘ফল যাই হোক না কেন, লড়াই থেকে আমি সরছি না। আমেরিকার বেশির ভাগ মানুষ ট্রাম্প বা (জো) বাইডেন— কারওকেই চান না।’’ ফল ঘোষণা হওয়ার পরে ট্রাম্প সমর্থকদের দাবি, নিকিকে কেউ আর ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গুরুত্ব দেবেন না। ব্যঙ্গ করে ট্রাম্পও নিকি হেলিকে ‘নিকি হু’ (কে নিকি) বলে উল্লেখ করতে শুরু করেছেন।
২৭ ফেব্রুয়ারি, মিশিগান প্রদেশে রিপাবলিকান প্রাইমারি নির্বাচনেও ট্রাম্পের জয়। আগামী ৪ মার্চ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ‘সুপার টিউজ়ডে’। যেখানে টেক্সাস ও ক্যালিফোর্নিয়া-সহ ১৬টি প্রদেশে ভোট হবে। সেই সব রাজ্যে জয় সুনিশ্চিত করতে পারলে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে ট্রাম্পের সামনে আর কোনও বাধা থাকবে না। ট্রাম্প তখন নিকিকে তাঁর ‘রানিং মেট’ বা ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন কি না, সেটাই আপাতত দেখার।