সময়ের সাথে সাথে পাল্টাচ্ছে পৃথিবী, পাল্টাচ্ছে মানুষের জীবনমান। ভৌগলিক, রাজনৈতি এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতি প্রভাব ফেলে মানুষের জীবনে। সাম্প্রতি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে ব্যয় বেড়েছে প্রায় প্রত্যেকটি পরিবারের। যার কারণে অধিকাংশ পরিবার তাদের সন্তানদের যত্ন নিতে পারছে না। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে নিউইয়র্কের প্রায় ৮০ শতাংশ পরিবার তাদের সন্তানদের সঠিক যত্ন নিতে পারছে না। চাইল্ড কেয়ারের ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে দাবি করা হয় প্রতিবেদনটিতে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে পাবলিক পলিসি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ফাইভবরো ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, একটি সাধারণ ডে কেয়ারে বছরে কমপক্ষে ২০ হাজার ডলার খরচ হয়। আর শতকরা প্রায় ৮০ শতাংশ পরিবার এটি বহন করতে পারে না, একটি সন্তান হলেও না।
ব্রঙ্কসের বাসিন্দা কেরলিন ডেলার বলেন, আমার ৪ বছর বয়সী লুকা ডে কেয়ারে যেতেন। কিন্তু বর্তমানে ডে কেয়ারের খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমাকেই সন্তানের যত্ন নিতে হচ্ছে, যার ফলে আমার চাকুরি করা সম্ভব হচ্ছে না। সাপ্তাহে ৫শ ডলারের মতো খরচ করা আমার জন্য সম্ভব হচ্ছিলো না।
টেফানি কেস্টিলো নামে অপর এক মহিলা বলেন, আমার আমার ৪ সন্তান। তাদের দেখাশোনা করা সত্যি ঝামেলাপূর্ণ। খরচ বেড়ে যাওয়ায় ডে কেয়ারে দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমার স্বামী ২টি কাজ করেও খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে।
ফাইভবরো ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক গ্রেস রাউহ বলেন, ২০২২ সালে নিউইয়র্ক সিটির আনুমানিক ২৩ বিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক কার্যকলাপে ক্ষতি হয়েছে। কারণ পিতামাতারা কর্মস্থান ত্যাগ করেছেন বা শিশুদের যত্ন নেওয়ার জন্য তাদের কর্মজীবন পাল্টাতে হয়েছে।
তিনি বলেন, সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ব্ল্যাক এবং ল্যাটিনক্স পরিবারগুলি সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে। যাদের কিছু এখন শহর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে৷ তারা ভিন্নধর্মী কাজ খুঁজছেন বা পরিবার চালাতে ২টি জব করছেন। আবার কেউ কেউ এমন স্থানে চলে যাচ্ছেন যেখানে খরচ কম।
পরিবারগুলো খরচ বেড়ে যাওয়ায় যেমন ‘চাইল্ড কেয়ার’ সেবা নিতে পারছে না তেমনি কমছে এসব প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বর্তমানে ডে কেয়ার প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও কমে এসেছে। যা কেমল ৫০ শতাংশ শিশুকে সেবা দিতে সক্ষম।
এদিকে প্রতিবেদনটিতে বড় পরিবারের জন্য একটি ভর্তুকি দেওয়ার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের উপায়ও সুপারিশ করে।
সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেছেন তার প্রশাসন এটি নিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, আমাদের আরও কিছু করতে হবে। নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হল শিশু যত্ন নিয়ে কাজ করা। আমরা সেদিকে মনোযোগ দিয়েছি।
তিনি বলেন, শহরের ভবিষ্যত নির্ভর করে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য উচ্চমানের যত্নের ওপর।