যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ছিলেন নিকি হ্যালি। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে অর্থাৎ প্রায় ছয় বছর আগে হ্যালিকে জাতিসংঘে মার্কিন দূত পদে নিয়োগ করেছিলেন। আর এবারের নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে লড়ছেন দলের মনোনয়নের জন্য।
ওয়াশিংটন ডিসিতে রিপাবলিকান প্রাইমারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়েছেন নিকি হ্যালি। ২০২৪ সালের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এটি তার প্রথম জয়। এর আগে তিনি তার নিজ রাজ্য দক্ষিণ ক্যারোলাইনায় ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে মার্কিন ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী যিনি রিপাবলিকান প্রাইমারিতে কোন জয় পেলেন।
নির্বাচনে মনোনয়নের দৌড়ে ট্রাম্প অবশ্য হ্যালির চেয়ে বেশি এগিয়ে আছেন এবং সম্ভবত নভেম্বরের নির্বাচনে তিনিই জো বাইডেনের মুখোমুখি হতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিবিসির অংশীদার প্রতিষ্ঠান সিবিএস জানাচ্ছে, ওয়াশিংটন ডিসিতে রিপাবলিকান ১৯টি ভোটের সবগুলোই পেয়েছেন মিজ হ্যালি। এ নিয়ে সারা দেশে তিনি ৪৩ জন রিপাবলিকান প্রতিনিধির সমর্থন পেলেন। যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৪৭ জনের সমর্থন নিয়ে এখনো অনেক এগিয়ে রয়েছেন।
ওয়াশিংটন ডিসির প্রাইমারিতে জাতিসংঘে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত হ্যালি, ৬২ দশমিক নয় শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প পেয়েছেন ৩৩ দশমিক দুই শতাংশ ভোট। একে মূলত একটি প্রতীকী জয় হিসাবে দেখা হয়, কেননা যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ব্যাপকভাবে ডেমোক্রেট সমর্থিত এলাকা। এ শহরে মাত্র ২৩ হাজার নিবন্ধিত রিপাবলিকান রয়েছেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট দলটির স্থানীয় কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, প্রাইমারিতে দুই হাজার ৩৫ জন রিপাবলিকান অংশগ্রহণ করেছেন। হ্যালির পক্ষে প্রচার প্রচারণার জাতীয় মুখপাত্র অলিভিয়া পেরেজ-কিউবাস বলেছেন, “এটা আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছু নেই যে ওয়াশিংটনের কর্মহীনতার সবচেয়ে কাছের রিপাবলিকানরা ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সমস্ত বিশৃঙ্খলাকে প্রত্যাখ্যান করছে”।
ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রচার প্রচারণায় এখন পর্যন্ত প্রতিটি রাজ্যের প্রাইমারি বা ককাসে আধিপত্য বিস্তার করে আছেন। এ সপ্তাহে সুপার টিউজডেতে আরও বেশি সংখ্যক প্রতিনিধির সমর্থন আদায়ের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন তিনি। সুপার টিউজডে বা মঙ্গলবার ভোটাররা যুক্তরাষ্ট্রের ১৫টি রাজ্য এবং ইউএস টেরিটোরিতে তাদের প্রার্থী মনোনীত করবেন। ৮৭৪ জন রিপাবলিকান প্রতিনিধিদের সমর্থন নিয়ে সেটাই হবে মনোনয়ন প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বড় দিন।
ভারতের পাঞ্জাব থেকে যাওয়া অভিবাসী বাবা-মায়ের ৫১-বছর বয়সী কন্যা নিকি হ্যালি মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রথমবারের মতো তার দল রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন চেয়েছেন। এখন বলতে গেলে তিনিই দ্বিতীয় প্রধান রিপাবলিকান প্রার্থী যিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দলের সমর্থন চাইছেন। অন্যদিকে তিনি হলেন তৃতীয় ভারতীয়-আমেরিকান যিনি রাষ্ট্রপতি হতে চান।
এর আগে তিনি সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ছিলেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে অর্থাৎ প্রায় ছয় বছর আগে হ্যালিকে জাতিসংঘে মার্কিন দূত পদে নিয়োগ করেছিলেন। সম্প্রতি টুইটারে নির্বাচনী প্রচারের এক ভিডিও পোস্ট করে তিনি বলেন, ‘এখন পিছিয়ে থাকার সময় নয়। এখন সময় একটি শক্তিশালী ও গর্বিত আমেরিকার।’ অথচ গত বছর হ্যালি বলেছিলেন যে হোয়াইট হাউসের লড়াইয়ে তিনি ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করবেন না। সূত্র: বিবিসি।