পোশাক রফতানি খাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র। তবে গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির পরিমাণ বেশ কমেছে। এরপরও বাংলাদেশ-সহ পাঁচটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানির বাজারে দখল করে রেখেছে।
কিন্তু কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের বাজারে এই দেশগুলো প্রতিযোগিতা করছে?
সেটা খতিয়ে দেখতে এবং একই সাথে এসব দেশের শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ-সহ সামগ্রিক বিষয় মূল্যায়ন করতে তদন্ত শুরু করছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন পাঁচটি দেশের পোশাক খাত নিয়ে এই তদন্ত শুরু করছে।
গত বছর বাংলাদেশের শ্রম পরিবেশ, শ্রমিকদের নিরাপত্তা, মজুরি, ট্রেড ইউনিয়ন-সহ নানা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করে তাগাদা দিয়েছিলে। এসব বিষয়ও তদন্তে প্রাধান্য পাবে।
বাংলাদেশে পোশাক শিল্প মালিকরা বলছেন গত কয়েক বছরে যে হারে উৎপাদন খরচ বেড়েছে সে হারে ক্রেতারা মূল্য দিচ্ছে না।
একই সাথে বাংলাদেশের পোশাক খাতের সামগ্রিক কর্মপরিবেশের উন্নতি হয়েছে বলে তারা জানাচ্ছেন। ফলে এসব বিষয়ও তদন্তে বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই তদন্ত কমিটিকে শুনানি-পূর্ব প্রতিবেদন দিয়েছে পোশাক প্রস্তুতকারী ও রফতানিকারক সমিতি বিজিএমইএ।
বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি শহীদ উল্লাহ আজিম আবার মনে করছেন বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলার জন্য এ তদন্ত করা হচ্ছে।
একই সাথে, গার্মেন্ট শিল্পের সবচেয়ে বড় ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ সরকার যাতে শ্রমিকদের ‘রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে’ তদন্তে ব্যবহার না করে, সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন শ্রমিক নেতা জলি তালুকদার।
পোশাক খাতে মার্কিন তদন্ত কেন
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিকারক বাংলাদেশ-সহ পাঁচটি দেশে দেশটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন (ইউএসআইটিসি) এই তদন্ত শুরু করছে।
অন্য চারটি দেশ হলো ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়া। বাংলাদেশ-সহ এই পাঁচটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রফতানিতে শীর্ষে রয়েছে।
কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের বাজারে এই দেশগুলোর তৈরি পোশাক প্রতিযোগিতাপূর্ণ হলো এবং কেন তা জানার চেষ্টা করা হবে ইউএসআইটিসির এই তদন্তে।
একই সাথে পোশাক খাতের পরিস্থিতিও এই তদন্তে মূল্যায়ন করা হবে বলে জানান পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ওয়াশিংটনে ৭ মার্চ থেকে এই তদন্তের শুনানি শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশের শুনানি হবে ১১ মার্চ। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএ তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করবে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এর সভাপতি ফারুক হাসান জানান, ‘এরই মধ্যে এ বিষয়ে প্রি-হিয়ারিং এর রিপ্লাই দেয়া হয়েছে। আমাদের রেসপন্স শেয়ার করেছি। ভার্চুয়ালি ১১ মার্চ শুনানিতে যুক্ত হব।’
শুনানির পরেও ২২ মার্চ পর্যন্ত লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করা যাবে।
পরে ৩০ আগস্ট ইউএসআইটিসি তদন্ত প্রতিবেদনটি বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে জমা দেবে।
যুক্তরাষ্ট্র কেন এ বিষয়ে তদন্ত করছে সে প্রসঙ্গে হাসান বলেন, ‘গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সারা বিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে আমদানি করত, এত বছর তাদের এভারেজ ইউনিট প্রাইস থেকে আমাদের কম থাকতো।’
‘এখন আমাদের এভারেজ ইউনিট প্রাইস বেশি। কিন্তু এটা কোনোভাবেই প্রমাণ করে না যে আমরা কম দামে সেখানে পণ্য দিচ্ছি।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘এছাড়া আমাদের উৎপাদন খরচের চেয়ে পাকিস্তান ও চায়নাতে খরচ অনেক কম। কিন্তু চীন এটার মধ্যে নাই। কিন্তু এর কী কারণ থাকতে পারে জানি না। তবে আমরা রেসপন্স করেছি।’
শ্রমিকদের কম মজুরি দেয়া হলে তা ‘প্রতিযোগিতাবিরোধী’ বলার সুযোগ থাকে।
কিন্তু ১ ডিসেম্বর থেকে ৫৬ শতাংশের বেশি শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এখন দায়িত্ব এটা নিশ্চিত করা যাতে আমরা ফেয়ার প্রাইস পাই। তাদের ক্রেতারা যাতে ন্যায্য মূল্য দেয়।’
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশনে শুনানি-পূর্ব যে প্রতিবেদন বিজিএমইএ দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের উৎপাদন খরচ অতি মাত্রায় বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের দাম ২৫ শতাংশ, গ্যাসের দাম ২৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ, ডিজেলের দাম ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পণ্য পরিবহনে এর প্রভাব পড়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের এই তদন্ত কমিটি প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতির পাশাপাশি সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে কাঠামোগত পাথর্ক্যগুলির সামগ্রিক মূল্যায়ন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে বিজিএমইএ।
পোশাক খাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এ তদন্তের পরবর্তী প্রভাব কী হতে পারে এমন বিষয়ে জানতে চাইলে হাসান বলেন, ‘আমরা মনে করি না এর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে। কারণ কোনো কালেই যুক্তরাষ্ট্রে আমরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই না। এখনো নাই, আগামীতেও পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। তাই কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না। তারপরও তাদের সাথে কথা বললে আমরা এ তদন্তের উদ্দেশ্য বুঝতে পারব। আমরাও জানতে চাই। কারণ তারা ডিটেইলস কিছু বলেনি।’
বাংলাদেশের শ্রম পরিবেশসহ অন্যান্য বিষয় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করেন পোশাক খাতের এই শিল্প মালিক।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করছি আমরা ফেয়ার ডিল করছি। আমাদের সব কিছু প্রপার আছে। কারণ আমাদের এখানে চাইল্ড লেবার নেই, বন্দী কর্মী নেই যেটা চায়নাতে আছে। বরং আমরা অনেক বেশি বেটার পজিশনে আছি বলে মনে করি।’
তবে বাংলাদেশের ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রম পরিবেশ, শ্রম আইনের বিষয়গুলো এই তদন্তে শুনানিতে আসবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এসব বিষয়ে পরিষ্কারভাবে কিছু জানায়নি।
সংগঠনটির আরেকজন নেতা অবশ্য এই তদন্তকে বাংলাদেশ সরকারকে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলার কৌশল বলে মনে করছেন।
সংগঠনটির সহ-সভাপতি শহীদ উল্লাহ আজিম বলেন, ‘পলিটিক্যালভাবে প্রেসার দেয়ার জন্য এই তদন্ত করা হচ্ছে। এটা মোস্টলি একটা পলিটিক্যাল ব্যাপার। যদি বেশি চাপিয়ে দেয়া হয় তবে অন্যায় হবে। বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। কারণ এই খাতে আমাদের অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে।’
এই তদন্তে মজুরি, ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রম পরিবেশ, শ্রমিক কল্যাণ, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানান তিনি।
যদিও এসব বিষয়ে বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি রয়েছে বলে মনে করেন আজিম।
গত ১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টের ২০২৪ সালের বাণিজ্য নীতি এজেন্ডা ও ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভের (ইউএসটিআর) ওয়েবসাইটে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে শ্রমিকদের অধিকারের পক্ষে ইউএসটিআর বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে তাগাদা দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা ২০১৩ সালে প্রত্যাহারের পর শ্রমিকদের সুরক্ষার মান ও অধিকার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) পরিষদের বৈঠকেও বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইপিজেড ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ দিতেও আহ্বান জানানো হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি শহীদ উল্লাহ আজিম ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের এই একটা বিষয়েই ঘাটতি রয়েছে, প্রত্যেকটা ফ্যাক্টরিতে ট্রেড ইউনিয়ন করা।’
তিনি বলেন, ‘আসলে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে পাটশিল্পের জন্য। ট্রেড ইউনিয়নের কারণে ওই শিল্প ধ্বংস হয়ে গেছে। তারপরেও অনেক ফ্যাক্টরিতে এটা হয়েছে। এখন আর আমরা বাধা দেই না। যুক্তরাষ্ট্র এটা ম্যানডেটরি করতে চায়। এটা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।’
তবে, পোশাক খাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রেতা দেশ যুক্তরাষ্ট্রের এই তদন্ত যাতে শ্রমিকদের ব্যবহারের রাজনৈতিক হাতিয়ার না হয় সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন শ্রমিক নেতারা।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, ‘এই তদন্ত যদি কোনো রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হিসেবে শ্রমিকদের ব্যবহার করার জন্য হয়, তবে সেটা খারাপ হবে।’
জলি তালুকদার বলেন, ‘শ্রমিকদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। ক্রেতা দেশগুলি কিন্তু আমাদের শ্রমিকদের সুনির্দিষ্ট মজুরি বিবেচনা করে, কিন্তু পোশাকের ক্ষেত্রে দাম বাড়ায় না। ট্রেড ইউনিয়ন, মজুরি, শ্রম পরিবেশ, নিরাপত্তা সবগুলো একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। ফলে একটা কম হলে আরেকটার হুমকি হয়।’
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি কেন কমেছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোন দেশ কোন পণ্য কত রফতানি করছে ডলারের হিসেবে সেটা প্রকাশ করে দেশটির বাণিজ্য দফতরের ‘অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলস’ (অটেক্সা)।
সংস্থাটির হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে দেশটিতে বাংলাদেশে থেকে তৈরি পোশাক গেছে ৯.৭২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের।
যা এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। তবে, এটা ঠিক কোভিড-১৯ পরবর্তী ২০২১ সালে রফতানি কম ছিল।
কিন্তু ২০২২ সালে ৯.৭২ বিলিয়ন ডলার রফতানি হলেও ২০২৩ সালে সেটা না বেড়ে বরং কমেছে।
২০২৩ সালে রফতানি হয়েছে ৭.২৯ বিলিয়ন ডলার। সুতরাং এক বছরে রফতানি কমেছে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার বা ২৫ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রে শুধু বাংলাদেশ থেকেই পোশাক রফতানি কমেছে, বিষয়টি এমন নয় বলে মনে করেন বিজিএমইএ-র সভাপতি ফারুক হাসান।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি যেটা কমেছে এটা এমন না যে বাংলাদেশ থেকেই কমেছে। বরং ওদেরই আমদানি কমেছে বলে এটা হয়েছে। কারণ গত বছর ও আগের বছর উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সুদহার সারা বিশ্বেই বেড়েছে। ফলে মর্টগেজও বেড়ে গেছে। তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে।’
তবে এ বছর রফতানি পরিস্থিতি আরো ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেন হাসান।
তিনি বলেন, ‘জানুয়ারি-মার্চে এক্সপোর্ট ভালো হয়েছে। ইনফ্লেশান এখন অনেক কমে এসেছে, ফলে আশা করছি আগামী মে বা জুন মাস থেকে সারা বিশ্বেই সুদের হার কমানো শুরু হবে। তখন মর্টগেজ কমে আসবে, ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে।’
হাসান বলেন, ‘ইউএসএ-তে আমাদের এক্সপোর্ট কম হয়েছে এটা সত্যি, কিন্তু ইউএসএ নিজেরাই আমদানি কম করেছে। সারা বিশ্ব থেকেই তাদের এ অবস্থা, এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়!’
তদন্তের বিষয়টি যে প্রেক্ষাপটে এলো
বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য গত বছর তীব্র আন্দোলন করে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছিলে শ্রমিক সংগঠনগুলো।
এ সময় আন্দোলনে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য ও শ্রমিক রাসেল হাওলাদারের নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নের ওপর দমন পীড়নে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ম্যাথিউ মিলারের বিবৃতিতে শ্রমিকরা যাতে সহিংসতা, প্রতিশোধ বা ভয়ভীতির হুমকি ছাড়াই সংগঠনের স্বাধীনতা ও দর কষাকষির অধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম হয় তা সরকারকে নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
এরপরে ৮ ডিসেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকার তেজগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার বলে উল্লেখ করেন। শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে মজুরি নিয়েও তিনি কথা বলেন।
এরই মধ্যে ১৩ নভেম্বর সরকার পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে। যা ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।
একই সাথে গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তরফে বৈশ্বিক শ্রমনীতি ঘোষণা করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
তিনি বলেন, বিশ্ব জুড়ে যারা শ্রমিক অধিকার হরণ করবে, ভয়ভীতি দেখাবে ও আক্রমণ করবে তাদের ওপর বাণিজ্য ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
এরই মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে তিন দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তারসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আসেন।
এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, বিশিষ্টজনের পাশাপাশি তারা শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সাথেও বৈঠক করেছেন।
ওই বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রম আইন, ট্রেড ইউনিয়ন, কর্ম-পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে তারা আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি, শ্রমিকদের জীবনমানসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র : বিবিসি