পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে বিশ্বের সব মুসলমানদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একইসঙ্গে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি এবং বাইডেনের স্ত্রী জিল বাইডেনও।
সোমবার (১১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পবিত্র রমজান মাসের শুরু উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ‘রামাদান করিম’ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন।
এক বার্তায় বাইডেন বলেন, নতুন চাঁদ ওঠার মাধ্যমে ইসলামের পবিত্র রমজান মাসের সূচনা হয়েছে এবং সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য তিনি ও মার্কিন ফার্স্ট লেডি তাদের শুভেচ্ছা ও প্রার্থনা জানাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘পবিত্র এই মাসটি প্রতিফলন এবং নিজেকে ফিরে পাওয়ার একটি সময়। এই বছর এই মাসটি অপরিসীম বেদনার একটি মুহূর্তে আমাদের সামনে এসেছে। গাজার যুদ্ধ ফিলিস্তিনি জনগণকে ভয়ানক দুর্ভোর্গের মধ্যে ফেলেছে। হাজার হাজার শিশুসহ ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। কেউ কেউ আমেরিকান মুসলমানদের পরিবারের সদস্য, যারা আজ তাদের হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনকে নিয়ে গভীরভাবে শোকাহত।’
মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘যুদ্ধের কারণে প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন; অনেকেরই খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং আশ্রয়ের জরুরি প্রয়োজন। মুসলমানরা রোজার মাসজুড়ে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্ভোগের কথা স্মরণে রাখবে। একইভাবে এটা আমারও মনে পড়বে।’
যুক্তরাষ্ট্র গাজায় আটক বন্দিদের মুক্তির জন্য সম্ভাব্য একটি চুক্তির অংশ হিসাবে কমপক্ষে ছয় সপ্তাহের জন্য অবিলম্বে এবং টেকসই যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য অবিরাম কাজ চালিয়ে যাবে বলেও জো বাইডেন রোববার পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘গাজায় আরও জীবন রক্ষাকারী সহায়তা পাঠানোর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র বন্দিদের মুক্তির উদ্দেশ্যে সম্ভাব্য একটি চুক্তির অংশ হিসাবে কমপক্ষে ছয় সপ্তাহের জন্য টেকসই যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য অবিরাম কাজ চালিয়ে যাবে। এরপর আমরা দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং শান্তিময় ভবিষ্যতের নির্মাণে এগিয়ে যাবো। এতে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের স্বাধীনতা, মর্যাদা, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির সমান পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এটাই স্থায়ী শান্তির দিকে একমাত্র পথ।’
যুক্তরাষ্ট্র স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে গাজায় আরও মানবিক সহায়তা পাঠাতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিতে থাকবে বলেও জানান প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
মূলত রোববার গভীর রাতে পবিত্র রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান। এর আগে রোববার সন্ধ্যায় সৌদি আরবের আকাশে পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখা যায়। এর মাধ্যমে সৌদি আরব-সহ বিশ্বের বহু দেশে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে।
সাধারণত সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর একদিন পর বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা যায়। ফলে বাংলাদেশে রোজা ও ঈদ পালন হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর পরদিনই।
ইসলামি ক্যালেন্ডারে সাধারণত মাস ২৯ বা ৩০ দিনের হয় এবং মাসের শুরু ও শেষ চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। যে কারণে রমজান মাস কোন দিন শুরু হবে তা আগে থেকে নির্দিষ্টভাবে বলা যায় না।
ইসলামের অন্যতম এক স্তম্ভ পবিত্র রমজান মাস। প্রত্যেক বছর অত্যন্ত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মুসলিম বিশ্বে পবিত্র এই মাস পালন করা হয়। এক মাস সংযম পালনের পর মুসলমানরা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন।