ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশী মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টগুলোতে ইফতারির বাজার জমজমাট পবিত্র রমজানে । রোজার অন্যতম অনুসঙ্গ ও আনন্দ হলো দিন শেষে ইফতার গ্রহণ। এই ইফতারিকে ঘিরে হোটেল রেস্টুরেন্টগুলো হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত। নিউইয়র্ক সিটির মুসলিম অধ্যুষিত রেস্টুরেন্টগুলোতে ধূম পড়েছে বাহারি ও মুখরোচক ইফতারি বিক্রির। নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিষের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও তূলনামূলকভাবে ইফতারির মূল্য তেমন বৃদ্ধি পায়নি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ক্রেতার সংখ্যাও অধিক বলে জানান রেস্টুরেন্ট মালিকগণ।রোজা উপলক্ষ্যে পাল্টে গেছে মুসলিম কমিউনিটির পরিবেশ-পরিস্থিতি। ইফতার সামগ্রীতে ছেয়ে গেছে গ্রোসারী, সুপার মার্কেট সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। রোজার প্রথম ৭ দিন রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল রকমারি ইফতারির সমাহার। বিশেষ করে জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, এস্টোরিয়া, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কস, ওজোন পার্কসহ বাংলাদেশী এলাকার রেস্টুরেন্টগুলোতে বিকেল চারটার পর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে ইফতারি ক্রেতাদের। নিউইয়র্কের বিভিন্ন এলাকা সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ইফতারীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে খেজুর, জিলাপী, ছোলা-বুট বেগুনী আর বাংলাদেশী মুড়ি। হোটেল-রেস্তোরায় গড়ে ১০/১২ আইটেমের ইফাতারী বক্সের মূল্য এবার ১০ ডলার।
রোজা উপলক্ষ্যে পাল্টে গেছে মুসলিম কমিউনিটির পরিবেশ-পরিস্থিতি। ইফতার সামগ্রীতে ছেয়ে গেছে গ্রোসারী, সুপার মার্কেট সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। রোজার প্রথম ৭ দিন রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল রকমারি ইফতারির সমাহার। বিশেষ করে জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, এস্টোরিয়া, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কস, ওজোন পার্কসহ বাংলাদেশী এলাকার রেস্টুরেন্টগুলোতে বিকেল চারটার পর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে ইফতারি ক্রেতাদের। নিউইয়র্কের বিভিন্ন এলাকা সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ইফতারীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে খেজুর, জিলাপী, ছোলা-বুট বেগুনী আর বাংলাদেশী মুড়ি। হোটেল-রেস্তোরায় গড়ে ১০/১২ আইটেমের ইফাতারী বক্সের মূল্য এবার ১০ ডলার।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রমজানের প্রথম দিনে ইফতারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ১১ মার্চ সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্য রকম পরিবেশ ছিলো নিউ ইয়র্কজুড়ে। রেস্টুরেন্টগুলোতে দিনের বেলা তেমন বেচাকেনা না হলেও বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইফতারের জন্য ক্রেতাদের ছিলো উপচে পড়া ভিড়। দোকানগুলোতেও নানা পদের মুখরোচক ইফতার সামগ্রী দিয়ে ক্রেতাদের নজর কাড়ার চেষ্টা করেন বিক্রেতারা। পবিত্র রমজান মাসের অন্যতম অনুষঙ্গ ইফতার সামগ্রী। ইফতারের সময় সব রোজাদারই চান সাধ্যমতো মুখরোচক পদ দিয়ে ইফতার করতে। তাই, বিকেল থেকেই প্রতিটি বাসায় পড়ে যায় ইফতার তৈরির ধুম। বাসার তৈরি ইফতারের সঙ্গে যোগ হয় বাইরে থেকে কিনে আনা ইফতার সামগ্রী। দেখা গেছে, বাসায় নানা রকমের ইফতার সামগ্রী তৈরি হলেও অনেকেই দোকান থেকে ইফতারির বিভিন্ন পদ কিনে নিচ্ছেন।
সোমবার বিকেলে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন, জামাইকা জ্যাকসন হাইটস ও ম্যানহাটনের বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, বিকাল ৪টা থেকেই প্রতিটি ইফতার সামগ্রীর দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। প্রথম দিনের ইফতারিতে মানুষের সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিলে খেজুরের গুঁড়ের গরম জিলাপি। এছাড়াও গরু-মুরগির কাবাব, হালিম, চিনির জিলাপি, সমুচা, পিঁয়াজু, সবজির পাকোরা, বেগুনী, ছোলা, আলু-ডিম চপ, সিঙ্গারা, শরবত, খোরমা, মিষ্টি, পুরি, বিরিয়ানী, চিকেন ফ্রায়েড রাইস, ভেজিটেবল ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেনসহ বিভিন্ন রকমের ইফতার সামগ্রী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা।
রেস্টুরেন্ট মালিকরা বলেন, রমজান মাসে ব্যবসায়িক দিকের চেয়ে মানুষের সেবার বিষয়টির ওপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। অন্যান্য বছরের মতো এবারো রেস্টুরেন্টগুলোতে থাকছে বিভিন্ন সাইজের ইফতার বক্স। আইটেম ও সাইজ অনুপাতে নির্ধারণ করা হয়েছে বক্সের মূল্য। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারণে কোন কোন আইটেমের মূল্য কিছুটা বাড়ানো হয়েছে কোন কোন রেস্টুরেন্টে। ইফতারের অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের হালিম ও জিলাপি বিক্রির আয়োজন। বেশির ভাগ ইফতারিই গ্রাহকগন বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন। জ্যামাইকার সাগর, তাজমহল রেস্টুরেন্ট এন্ড ব্যাঙ্কুয়েট হল, ঘরোয়া, ধাঁনসিড়ি, ঢাকা সুইটস, জ্যাকসন হাইটসের প্রিমিয়াম, নবান্ন, হাটবাজার, ব্রুকলীনের ঘরোয়া, স্বদেশ, ব্রঙ্কসের খলিল বিরিয়ানী, নিরব, প্রভৃতি রেস্টেুরেন্টে ইফতারী আইটেমের বহুল সমাবেশ। জ্যামাইকায় তাজমহল রেস্টুরেন্ট, সাগর চাইনিজ, সাগর রেস্টুরেন্ট, ঘরোয়া ও ধাঁনসিড়িতে বিকেল পাঁচটার পর লাইন ধরে ইফতার ক্রয় করতে দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের। অনেকে আবার রেস্টুরেন্টে বসেও গ্রহণ করছেন ইফতার। জ্যাকসন হাইটস ও জ্যামাইকার বাজারে জিলাপি, হালিম, চিকন, কাবাব, নান, বিরিয়ানি, বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুচপ, ডিমচপ, বড়া, দইবড়া, খেজুর, শরবতসহ বিভিন্ন ইফতারসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে বেশি। একেক দোকানের বিক্রি একেক রকম। দামেও ভিন্নতা রয়েছে। বেশি বিক্রি হচ্ছে এশিয়ান মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে। এখানকার দোকানি ও রেস্টুরেন্ট মালিকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে। খলিল বিরিয়ানী হাউসে স্বত্বাধিকারী ও বিশিষ্ট রন্ধনশিল্পী খলিলুর রহমান বলেন প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রবাসী রোজাদারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় ইফতারি সরবরাহ করছি। রমজান মাসে রোজাদারদের উন্নত সেবা দিতে আমাদের চারটি শাখায় জনবল বৃদ্ধি করেছি। ইফতারে শুধু মুখরোচক খাবারই নয়, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার দেবারও প্রচেস্টা করছি।তিনি বলেন, গতবছরের চেয়ে এবার জিনিষপত্রের দাম বৃদ্ধি পেলেও আমরা ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে মূল্য নির্ধারণ করেছি। দু’ধরনের ইফতার বক্সের দাম একটি ১১ এবং অন্যটি ১৩ ডলার মুল্য নির্ধারণ করেছি। এ মুল্য ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে বলে জানান খলিল।
এদিকে বিভিন্ন মসজিদ সূত্রে জানা গেছে, দানশীল ব্যক্তিরা ইফতারির জন্য মসজিদে অর্থ দিচ্ছেন। এই অর্থে রোজাদারদের ইফতার করানো হচ্ছে। মসজিদে ইফতারের দুই রকমের ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো কোনো মসজিদ কর্তৃপক্ষ নিজেরাই ইফতারির আয়োজন করছে। আবার কিছু মসজিদে নিজেদের ব্যবস্থা নেই, কেউ মসজিদে ইফতারি দিলে তা দিয়ে রোজাদারদের ইফতার করানো হচ্ছে। তবে মসজিদে আসা রোজাদাররা যাতে ইফতার করতে পারেন, সে জন্য প্রায় সব মসজিদেই খেজুর ও পানির ব্যবস্থা রয়েছে।
ইফতার মাহফিলের হিড়িক
এদিকে রমজান উপলক্ষ্যে প্রবাসী বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটিতে ইফতার মাহফিল আয়োজনের হিড়িক পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই একাধিক ইফতার মাহফিলের আয়োজন হচ্ছে কমিউনিটিতে। বিশেষ করে উইক ডে এবং উইকেন্ড ছাড়াও ৩/৪টি ইফতার মাহফিলের ফলে এসব অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতরা বিপাকে পড়ছেন। কেননা, নিয়মানুযায়ী একই সময়ে ইফতার গ্রহণ হয়ে থাকে। এদিকে ইফতার মাহফিলের জন্য স্থান পাওয়া যাচ্ছে না বলে একাধিক সংগঠন সূত্রে জানা গেছে। উইকেন্ডে ইফতার পার্টি আয়োজনের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, পার্টি হল ও মিলনায়তন ইতোমধ্যেই বুকিং হয়েছে। নতুন করে হল বুকিং পেতে সংগঠনগুলো সমস্যায় পড়ছে। অপরদিকে মসজিদে মসজিদে ইফতারীরও আয়োজন হচ্ছে। গত সপ্তাহে কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে অন্তত ১০টি ইফতার পার্টি আয়োজিত হয়। তবে এবার মসজিদগুলোতে ইফতারির তেমন আয়োজন হচ্ছে না।