নিউইয়র্ক সিটি ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রান্সপোর্টেশনের (এনওয়াইসি ডট) বার্ষিক আর্থ ডে উদযাপনের অংশ হিসাবে চলতি মাসের শেষের দিকে নিউইয়র্ক সিটিজুড়ে কয়েক ডজন রাস্তা এক দিনের জন্য গাড়ি মুক্ত রাখা হবে। গাড়িহীন একটি দিন প্রচারের জন্যই এই আয়োজন কর্তৃপক্ষের। এছাড়া ৪৬টি সংগঠন এদিন বিভিন্ন কর্মমসূচি পালন করবেন।
২ এপ্রিল মঙ্গলবার সিটির পরিবহন কমিশনার ইডানিস রদ্রিগেজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আর্থ ডে উদযাপন উপলক্ষে আগামী ২০ এপ্রিল এক দিনের জন্য নিউইয়র্কের ৫৩টি রাস্তা গাড়িমুক্ত থাকবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা রাস্তাগুলো বন্ধ থাকবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে রদ্রিগেজ বলেন,আমরা এই দিনটির মাধ্যমে নিউইয়র্কবাসীকে যতটা সম্ভব তাদের যানবাহন বাড়িতে রেখে যেতে এবং ট্রানজিট, বাইক চালানো বা হাঁটার মতো পরিবহন ব্যবহারে উৎসাহিত করি। শহরের সর্ববৃহৎ গাড়ি-মুক্ত আর্থ ডে উদযাপনের অংশ হিসাবে এদিন নিউইয়র্ক সিটির আশেপাশের কয়েক ডজন গাড়িমুক্ত রাস্তায় প্রোগ্রামিং, সঙ্গীত এবং অন্যান্য কার্যকলাপের আয়োজন করা হবে। এতে নতুন এবং আস্থায়ী ‘পাবলিক শিল্পী’রা তাদের প্রদর্শনীর মাধ্যমে পৃথিবীকে রক্ষায় সচেতনতামূলক বার্তা দিবেন।
এ সময় তিনি কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং পরিবেশ রক্ষায় সকলকে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে আর্থ ডে উদযাপনের অংশ হিসেবে রাস্তায় পরিবহন সীমিত করার বিষয়টি চালু হয়। ধীরে ধীরে এই উদযাপন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়। তখন থেকে প্রতিবছর এই আয়োজন করা হয়। গত বছর ৩০টি সড়ক গাড়িমুক্ত রাখা হলেও এবার তা বেড়ে হয়েছে ৫৩টি।
অ্যাডভোকেসি গ্রুপ বাইক নিউইয়র্কের সিইও কেন পডজিবা বলেছেন, ৮ বছর আগে এই কর্মসূচি চালুর পর এখন অনেক প্রসার হয়েছে। মানুষ অনেক বেশি সচেতন হয়েছে। যেখানে সেখানে গাড়ির পরিবর্তে মানুষ হেঁটে বা বাইক ব্যবহার করে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে মানুষের স্বাস্থ্যও ঠিক থাকবে, দূষণও কম হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালের ২২ এপ্রিল ইউসকনসিনের সেনেটর গেলর্ড নেলসন বিশ্ব পৃথিবী দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেন। তবে অনুষ্ঠানের পিছনে একটি বড় কারণ ছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার সান্টা বারবারাতে তৈল নিষ্কাশনের ফলে প্রবল দূষণের ঘটনা তাঁকে রীতিমতো নাড়া দেয়। গেলর্ড মনে করতেন মানুষের পরিবেশ সম্পর্কে আরও সচেতন হওয়া উচিত। সেই পরিবেশকে সুরক্ষিত না রাখা গেলে মানুষের ভবিষ্যৎও অসুরক্ষিত। গেলর্ডের সেই অনুষ্ঠানে অভূতপূর্ব সাড়া এসেছিল। ২ কোটি মানুষ সেখানে যোগ দেয়। এরপর থেকে ওই দিনটিই বিশ্ব পৃথিবী দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। এখন সারা বিশ্বের ১৯৩টি দেশ এই বিশেষ দিন পালন করে। মূলত দূষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও সচেতনতা বাড়াতেই দিনটি উদযাপিত হয়।