১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন

শঙ্কার মধ্যেও প্রচারণায় যেসব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:০৭

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনকে সামনে রেখে দুটি প্যানেল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচার-প্রচারণায় নির্বাচন বেশ জমে উঠেছে। ইতিমধ্যে দুই প্যানেলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক, ট্রাস্টি বোর্ড, পরিচালনা পরিষদ ও ভোটাররা আশা করছেন, একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। এত দিন নির্বাচনের তেমন আমেজ না থাকলেও শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এই নির্বাচন উত্তাপ ছড়াচ্ছে। প্রার্থীরা বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলেতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্যানেল দুটি পাঁচ বরোর বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন লাগিয়েছে। লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। লাগানো হয়েছে দুই প্যানেলের নানা রঙের পোস্টার। দুটি প্যানেলের পক্ষ থেকে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষ থেকে চলছে প্রচারণা, গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চলছে প্রার্থীদের পরিচিতি সভা। এতে প্রার্থীরা উপস্থিত হয়ে ভোট চাইছেন। প্রার্থীরা প্যানেলের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবেও প্রচারণা চালাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ভোট চাওয়ার পাশাপাশি ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন প্রার্থীরা।


বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে রব-রুহুল প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন আবদুর রব মিয়া। তিনি ভোটারদের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখছেন ও ভোট চাইছেন। নির্বাচিত হলে বাংলাদেশ প্যারেড নামে একটি প্যারেডের ব্যবস্থা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন আবদুর রব মিয়া। তিনি বলেন, একটি কমিউনিটি সেন্টার করব। এখানে ৪০ বছরের কম বয়সী মানুষকে সম্পৃক্ত করা হবে, যাদের মধ্যে থাকবেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। এসব মানুষকে সম্পৃক্ত করে তাদের জ্ঞানকে কাজে লাগানো হবে। এতে করে বাংলাদেশি কমিউনিটি সমৃদ্ধ হবে। তিনি জানান, বাংলাদেশি কমিউনিটিকে মূলধারার সঙ্গে আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে কাজ করবেন। এ বিষয়ে সিটি মেয়র ও গভর্নরের সঙ্গে কথা বলা দরকার বলে তিনি মনে করেন। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আবদুর রব নিউইয়র্কে একটি মিনি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান।

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে নয়ন-আলী পরিষদ থেকে সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে পাঁচ বরোতে বাংলাদেশিদের জন্য সার্ভিসের ব্যবস্থা করব। বিশেষ করে, সীমান্তে আটকে পড়া বাংলাদেশি, যারা আমেরিকায় প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছেন, যারা এ দেশে আসার পর চাকরি পাচ্ছেন না, কনস্যুলেটে সেবা পাচ্ছেন না, তাদের সব ধরনের সেবা দেওয়া হবে। এ ছাড়া পাঁচ বরোতে মাসে অন্তত দুবার কনস্যুলেট সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। সেবার মান ও পরিসর বাড়ানোর জন্য সোসাইটিতে আপার ও লোয়ার দুটি চেম্বার থাকবে। বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা থাকবেন আপার চেম্বারে (সিনেট সদস্য)। আর যারা এখানে বাংলাদেশি বিভিন্ন সমিতির সঙ্গে যুক্ত আছেন, সেসব সমিতি সোসাইটিতে ১০০ থেকে ১৫০ ডলারের নামমাত্র চাঁদা দিয়ে সোসাইটির সদস্য হতে পারবেন। তারা ওই সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদাধিকারবলে সোসাইটির লোয়ার চেম্বার অর্থাৎ কংগ্রেসের মেম্বার হবেন। সোসাইটিতে তাদের সমিতির সদস্যরাও সেবা পাবেন। তিনি জানান, এখানে বাংলাদেশ ভবন করতে চান। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী কাজী নয়ন আরো বলেন, জয়ী হলে ১০০ দিনের অ্যাজেন্ডা হাতে নেবেন। ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত সমস্যা, কর্মশালা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। কমিউনিটিকে মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে নিজেদের অধিকার ওসুবিধা আদায় করা হবে।
বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক পদে পুনরায় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, করোনাসহ বিভিন্ন কারণে যেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেননি, ফের নির্বাচিত হলে সেগুলো বাস্তবায়ন করবেন। পাশাপাশি একটি কমিউনিটি সেন্টার করবেন। এই কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশিদের সব ধরনের অনুষ্ঠান করা যেমন সম্ভব হবে, তেমনি কিছু অফিসও করা হবে। কিছু অ্যাপার্টমেন্টও তৈরি করা হবে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে কেউ এলে তার কোথাও থাকার ব্যবস্থা না থাকলে আপৎকালীন সময়ের জন্য তার থাকার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন বরোতে বাংলা শেখার ব্যবস্থা রয়েছে। এর পরিসর আরো বাড়ানো হবে। বয়স্কদের ইংরেজি শেখার ব্যবস্থা রয়েছে। এটি আরো বাড়ানো হবে। নতুন আসা বাংলাদেশিরা যাতে ইংরেজি শিখে চাকরি পেতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হবে। শিশুদেরও বাংলা শেখার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া প্রবাসীরা কোনো সমস্যায় পড়লে তাদের সহযোগিতা করা হবে। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে এবারও তিনি আশাবাদী।

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে নয়ন-আলী পরিষদ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন মোহাম্মদ আলী। তিনি বর্তমান কমিটির কোষাধ্যক্ষ। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে আমেরিকার মূলধারায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করব। জয়ের ব্যাপারে প্রচণ্ড আশাবাদী মোহাম্মদ আলী ১৮ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে নয়ন-আলী পরিষদের জন্য ভোট ও দোয়া চেয়েছেন।