যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশিদের অবস্থান বেশ উন্নত হয়েছে। গত এক বছরে পড়াশোনা করতে যাওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীর হার বৃদ্ধির দিক দিয়েও অন্য দেশকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ইমিগ্রেশন, পড়াশোনা এবং ক্যাম্পাস লাইফসহ বিষয়ে ধারণা দিতে ১০ জুলাই (বুধবার) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানানো হয়। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এডুকেশনইউএসএ টিম আয়োজিত প্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশনে (পিডিও) এই আয়োজনে ২০২৪ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে পড়াশোনা শুরু করতে যাওয়া ১২০ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অংশ নেন।
স্বাগত বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কাউন্সেলর স্টিফেন ইবেলি বলেন, “বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসকে সমৃদ্ধ করেছে এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করেছে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ১৩ হাজার ৫৬৩ জন শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে গেছেন, যা এ যাবৎকালের রেকর্ড। “ফলে যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পাঠানোর তালিকায় ১৩তম দেশে উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। আগের বছরের তুলনায় শিক্ষার্থী পড়তে যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে ২৮ শতাংশ, যা বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ।”
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কনস্যুলার সেকশন, এডুকেশনইউএসএ, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক ভর্তি কর্মকর্তা, বর্তমান এবং সাম্প্রতিককালে পড়াশোনা শেষ করেছেন এমন শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বুধবার একটি আয়োজন রাখে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বুধবার একটি আয়োজন রাখে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার সময় শিক্ষার্থীরা যে ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক, সাংস্কৃতিক এবং জীবনযাত্রার পার্থক্যের মুখোমুখি হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দেন আলোচকরা। স্টিফেন ইবেলি শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক, পেশাদার এবং ব্যক্তিগত বিকাশের এই যাত্রা শুরুর সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে থাকা সুবিধা নিতে উৎসাহ দেন। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পর আলাদা কমিউনিটি তৈরি হয়। সেখানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আপনারা পাবেন। পড়াশোনা শেষে আপনারা যখন ফিরে আসবেন, তখন আসবেন একজন ভিন্ন রকম মানুষ হয়ে।”
নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নেয়া এবং বন্ধু ও সহকর্মীদের একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উপর জোর দেন তিনি। দূতাবাস জানিয়েছে, গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা তিনগুণের বেশি বেড়েছে। ২০১১-২০১২ সালে যা তিন হাজার ৩১৪ জন ছিল, ২০২২-২০২৩ সালে সেই সংখ্যা ১৩ হাজার ৫৬৩ জনে পৌঁছেছে। “বাংলাদেশি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় আড়াই হাজার জন হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার জন স্নাতক শিক্ষার্থী বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতক শিক্ষার্থীদের সপ্তম বৃহত্তম উৎস করে তুলেছে। এই পরিসংখ্যান শক্তিশালী শিক্ষাগত সম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডিগ্রির উচ্চ চাহিদার কথা তুলে ধরে।” বাংলাদেশে এডুকেশনইউএসএ-এর পরামর্শমূলক পরিষেবা এবং রেফারেন্স উপকরণ গুলশানের ইএমকে সেন্টার এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের আমেরিকান সেন্টার ও কর্নার থেকে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস।