নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প 

আমি মারাও যেতে পারতাম, ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছি 

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৬ জুলাই ২০২৪, ০১:০৬

নির্বাচনী সমাবেশে হত্যাচেষ্টার শিকার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি মারাও যেতে পারতাম। ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছি।’ গত শনিবার সন্ধ্যায় পেনসিলভানিয়ায় মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার সময় বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান রিপাবলিকান পার্টির এই নেতা। ট্রাম্পের ডান কানের ওপরের অংশে ফুটো হয়ে যায়। এ হত্যাচেষ্টার পর গত রবিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প এভাবেই তার প্রতিক্রিয়া জানান। বেঁচে ফিরে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার সুযোগ পেয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
আগামী নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে দেশটির প্রধান দুইটি রাজনৈতিক
দল রিপাবলিক পার্টি ও ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রচারণা চালাচ্ছে। এমনই একটি নির্বাচনী সমাবেশ চলাকালে হামলার শিকার হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে গুলি ডান কানে লাগায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। ট্রাম্পের ধারণা, গুলির ঘটনার সময় তিনি তার বক্তব্যের লিখিত একটি অংশ দেখার জন্য পোডিয়ামের দিকে ঝুঁকেছিলেন বলেই বেঁচে গিয়েছেন। তবে দর্শক সারিতে থাকা একজন নিহত ও আরো দুজন গুরুতর আহত হন এ ঘটনায়। বন্দুকধারী ২০ বছরের তরুণ থমাস ম্যাথিউ ক্রুকসও মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে হামলাকারী রিপাবলিকান পার্টির নিবন্ধিত ভোটার হওয়ার পরও কেন এ হত্যাচেষ্টা, তা এখনো জানাতে পারেনি মার্কিন তদন্তকারীরা।
তবে হত্যাচেষ্টার ঘটনার একদিন পরই রবিবার সন্ধ্যায় মিলওয়াকিতে গেছেন ট্রাম্প। একজন শুটার বা সম্ভাব্য আততায়ীর জন্য তিনি তার নির্বাচনী সফরসূচিতে বদল আনতে পারেন না বলে জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশন (আরএনসি) অনুষ্ঠিত হবে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের মিলওয়াকি শহরে। সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা) দলটির এ জাতীয় সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা। এ সম্মেলনেই ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনে তার রানিং মেট কে হবেন, তাও তিনি এই সম্মেলন থেকে ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কনভেনশনস্থল সংলগ্ন ওয়াটার স্ট্রিটে অবস্থিত ফাইজার হোটেলে উঠেছেন তিনি। এ সম্মেলন সামনে রেখে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে মিলওয়াকি। শহরটিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাইরে রিপাবলিকান ডেলিগেট, গণমাধ্যমকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং দর্শক-ভ্রমণকারী মিলে অন্তত ৫০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটেছে।
এদিকে ট্রাম্প ওই হামলার পর শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি তার জাতীয় সম্মেলনের বক্তৃতা সম্পূর্ণ নতুনভাবে লিখবেন। সেখানে জো বাইডেনকে সমালোচনা করার পরিবর্তে ‘ঐক্যের’ বার্তায় গুরুত্ব দেওয়ার কথাও জানান তিনি। ওয়াশিংটন এক্সামাইনারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমি যে বক্তৃতা দেব, সেটা অসাধারণ বক্তব্যের মধ্যে একটি হতে চলেছে। এই বক্তব্যের বেশিরভাগ কথাই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিভিন্ন নীতিকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং আমেরিকান হিসেবে আমাদের প্রকৃত চরিত্র প্রদর্শন করা, দৃঢ় ও সংকল্পবদ্ধ থাকা, খারাপকে জয়ী হতে না দেওয়া অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার পর বিভক্ত দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। গত রবিবার ওভাল অফিস থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাইডেন এ কথা বলেন। ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির সহিংস উত্তাপ কমানোর সময় এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিকে আক্ষরিক অর্থে যুদ্ধক্ষেত্র, বিশেষত হত্যার ক্ষেত্র হতে দেওয়া হবে না।’