মৃত্যুদণ্ড এড়াতে দোষ স্বীকার করে বিচার কাজ শুরু করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বহুল আলোচিত ৯/১১ হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে মার্কিন প্রসিকিউটররা। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ও পেন্টাগনে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী খালিদ শেখ মোহাম্মদের সঙ্গে মার্কিন প্রসিকিউটরদের এই চুক্তির কথা ৩১ জুলাই এক বিবৃতিতে প্রকাশ করেছে পেন্টাগন। খবর : এএফপির। এই চুক্তির ফলে খালিদ শেখ মোহাম্মদ ও তার দুইজন সঙ্গীকে আসামি করে দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিচারের কাজ শুরু করা যাবে। এই বিষয়টি বিচার পূর্ববর্তী কৌশলের অংশ হিসেবে বছরের পর বছর ঝুলে ছিল। এ সময় আসামিরা কিউবার গুয়ান্তানামো বে সামরিক ঘাঁটিতে আটক ছিল।
পেন্টাগন থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে চুক্তির বিষয় তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্লেষণ করা না হলেও নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, খালিদ শেখ মোহাম্মদ, ওয়ালিদ বিন আত্তাস ও মোস্তফা আল হাউসাউই–এই তিনজনই নিজেদের দোষ স্বীকার করতে রাজি হয়েছেন। বিচার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না এবং সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হবে, এমন শর্তেই তারা ওই চুক্তি করতে তাদের সম্মতি দিয়েছেন। গত বছর এরকম একটি প্রস্তাবের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ হলে বিভক্ত হয়ে পড়ে নাইন ইলেভেন হামলায় নিহত তিন হাজারেরও বেশি লোকজনের পরিবারের সদস্যরা। এদের মধ্যে এখনও অনেক লোক আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছেন।
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের হাতে আটক থাকার সময় অকথ্য নির্যাতনের শিকার ওই তিন আসামির বিচার সুষ্ঠুভাবে হবে কিনা সে বিষয়ে আইনি মারপ্যাঁচের মধ্যে পড়ে যাওয়ায় নতুন করে এই চুক্তির খবর বিচারকাজ শুরুকে ত্বরান্বিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। খালিদ শেখ মোহাম্মদ আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের ঘনিষ্ঠ ও সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্র হিসেবে পরিচিত। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে তাকে পাকিস্তান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৬ সালে গুয়ান্তানামো ঘাঁটিতে পাঠানোর আগে তিন বছর তিনি সিআইএ’র গোপন কারাগারে আটক ছিলেন।
প্রশিক্ষিত প্রকৌশলী হিসেবে পরিচিত খালিদ শেখ মোহাম্মদ ৯/১১ হামলার আদ্যোপান্ত জানতেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ২০০২ সালে মার্কিন সাংবাদিক ডেনিয়েল পার্লকে নিজ হাতে হত্যার কথাও স্বীকার করেছেন তিনি। ১৯৯৩ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার সঙ্গেও জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।