পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর সংযম দেখানোয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক উপায়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। মাসখানেক আগে সরকারি চাকরির কোটা-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে শুরু হওয়া বিক্ষোভে দমন-পীড়নে কয়েক শ লোক নিহত হওয়ার পর শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্র-জনতা। সেই আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে গতকাল সোমবার দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর সোমবার বিকেলে দেওয়া এক ভাষণে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টি জানান। তিনি জানান, শিগগির একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে।
সোমবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অধিকারকে সম্মান করার আহ্বান জানিয়ে আসছে এবং আমরা এখন আমরা অন্তর্বর্তী সরকার গঠনকে গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার আহ্বান জানাচ্ছি। আজ যে সংযম দেখিয়েছে, তার জন্য আমরা সেনাবাহিনীর প্রশংসা করি।’
হোয়াইট হাউস ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে বাংলাদেশের দলগুলোকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে ও দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানাই।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলগুলো এই নির্বাচন বয়কট করেছিল। চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর মাত্র কয়েক মাসের মাথায় শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়, যা একপর্যায়ে তাঁর পতনের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। সে সময় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও জানিয়েছিল, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। ভোটে অনিয়ম ও সহিংসতার প্রতিবেদনে ওয়াশিংটন উদ্বিগ্ন।
মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা চাক শুমার বাংলাদেশে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। যেন দেশে দ্রুত গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি বলেছেন, ‘বৈধ প্রতিবাদের বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সহিংস প্রতিক্রিয়া তার অব্যাহত শাসনকে অসার করে তুলেছে। আমি সাহসী বিক্ষোভকারীদের সাধুবাদ জানাই এবং নিহতদের হত্যার বিচার দাবি করি।