যুক্তরাষ্ট্রের বহুল আলোচিত মধ্যবর্তী নির্বাচনে জয়ের পথে রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি। মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস (প্রতিনিধি পরিষদ) এবং সিনেটের পাশাপাশি কয়েক জায়গায় গর্ভনরের আসন দখলের লড়াই চলছে দেশটিতে। প্রাথমিক ফলাফল বলছে, এখন পর্যন্ত প্রতিনিধি পরিষদের ভোটে এগিয়ে রয়েছে রিপাবলিকানরা।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) প্রতিনিধি পরিষদের গোটা ৪৩৫ আসন এবং সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যে ৩৫টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট হচ্ছে তিন ডজন গভর্নর নির্বাচনেও।
এরই মধ্যে ফ্লোরিডার রিপাবলিকান নেতা রন ডেসান্টিস ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী চার্লি ক্রিস্টকে গভর্নর নির্বাচনে পরাজিত করেছেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। আর সিনেটে ডেমোক্র্যাটিক নেতা চাক শুমার এবং জ্যেষ্ঠ রিপাবলিকান নেতা জন থুনে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।
সিএনএনের পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে প্রতিনিধি পরিষদ নির্বাচনের ফলাফলে এগিয়ে রয়েছে রিপাবলিকান পার্টি। তারা ১৫৭ আসনে জয় নিশ্চিত করেছে। আর জো বাইডেনের দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি পেয়েছে ৯৩টি আসন। হাউজের নিয়ন্ত্রণ দখলে প্রয়োজন মোট ২১৮টি আসন। তবে সিনেটের দখল নিয়ে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। এই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় ৫০ আসনের মধ্যে ৪৩টির দখল নিয়ে এগিয়ে রয়েছে রিপাবলিকানরা। আর ডেমোক্র্যাটদের হাতে রয়েছে ৪০টি আসন।
বিবিসির পরিসংখ্যান বলছে, সিনেটে রিপাবলিকানরা ৪১টি আসনে এবং ডেমোক্র্যাটরা ৪০টি আসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর প্রতিনিধি পরিষদে ১৩৭-৭৭ আসনে এগিয়ে ট্রাম্পের দল।
বর্তমানে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের টাই-ব্রেকিং ভোটে সিনেট নিয়ন্ত্রণ করছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি।
মঙ্গলবারের আগে ৪ কোটি ৬০ লাখের বেশি মার্কিন ভোটার মেইল অথবা সশরীরে আগাম ভোট দিয়েছেন। এক নির্বাচনী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এসব ভোট গণনায় বেশ সময় লাগবে।
ভোটের দিন স্থানীয় কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নানা সমস্যার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে লুইজিনিয়ায় বোমা হামলার হুমকি এবং পেনসিলভানিয়ায় কাগজের ঘাটতি উল্লেখযোগ্য।
তাছাড়া, অ্যারিজোনার মারিকোপা কাউন্টিতে ট্যাবুলেশন মেশিনে গোলযোগের জেরে ভোটগ্রহণের সময় বাড়াতে রিপাবলিকানদের অনুরোধ বাতিল করে দিয়েছেন একজন বিচারক।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে দু’জন সিনেটর থাকেন, যারা ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। রিপ্রেজেন্টেটিভরা নির্বাচিত হন দুই বছরের জন্য এবং ছোট জেলাগুলোর প্রতিনিধিত্ব করেন।
বিগত দুই বছর ধরে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে ডেমোক্রেটরা। এর ফলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য যে কোনো আইন পাস করা সহজ হয়েছে। কিন্তু মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে সেই সুযোগ আর থাকবে না ডেমোক্র্যাটদের। ফলে বাইডেন অনেকটা ‘নখদন্তহীন বাঘ’-এ পরিণত হবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
নির্বাচনটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
এই নির্বাচনে ট্রাম্প বা বাইডেন কেউই সরাসরি লড়ছেন না। লড়ছে তাদের দল। নির্বাচন হবে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেটের নিয়ন্ত্রণ দখলের জন্য।
প্রাথমিক জরিপ বলছে, নির্বাচনে মার্কিন কংগ্রেসের দুটি চেম্বারেই জয় পেতে পারে ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি। নিরপেক্ষ পূর্বাভাসদাতারা বলছেন, নির্বাচনে ৪৩৫ আসনের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে রিপাবলিকানদের প্রায় ২৫টি আসন বাড়তে পারে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য যথেষ্ট। তারা সিনেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রয়োজনীয় একটি আসনও জিতে নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে দু’জন সিনেটর থাকেন, যারা ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। রিপ্রেজেন্টেটিভরা নির্বাচিত হন দুই বছরের জন্য এবং ছোট জেলাগুলোর প্রতিনিধিত্ব করেন।
বিগত দুই বছর ধরে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে ডেমোক্রেটরা। এর ফলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য যে কোনো আইন পাস করা সহজ হয়েছে। কিন্তু মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে সেই সুযোগ আর থাকবে না ডেমোক্র্যাটদের। ফলে বাইডেন অনেকটা ‘নখদন্তহীন বাঘ’-এ পরিণত হবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এছাড়া, এই ফলাফল ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভোটের প্রচারণার ক্ষেত্রকে নানাভাবে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে, সেখানে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো সম্ভাবনা তৈরি হয়।