অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি বিতর্কের নিয়ম। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৯টায় ফিলাডেলফিয়ার ন্যাশনাল কনস্টিটিউশন সেন্টারে অনুষ্ঠেয় গুরুত্বপূর্ণ এ টেলিভিশন বিতর্কটি সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। খবর- সিবিএস নিউজ
এটি উভয়ের মধ্যে প্রথম এবং সম্ভবত শেষ টেলিভিশন বিতর্ক। কারণ এখন পর্যন্ত উভয়ের কেউই নতুন বিতর্কের বিষয়ে সম্মতি দেয়নি। বিতর্কের মঞ্চে সত্যিকার অর্থে কি মঞ্চায়িত হতে যাচ্ছে, তা নিবিড়ভাবে প্রত্যক্ষ করতে অপেক্ষা করছেন লাখ লাখ আমেরিকান। নির্বাচনী লড়াইয়ে মরিয়া উভয়প্রার্থীর ঝুঁকিপূর্ণ এই বিতর্ক দেখবেন। বিতর্কটিকে দু’জনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল পরীক্ষা হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিতর্কের নিয়ম: কোথায়, কীভাবে বিতর্ক হবে তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছিল এতদিন। নানা আলোচনা শেষে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মতি নিয়ে বিতর্কের নিয়ম চূড়ান্ত করেছে আয়োজক মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি। তবে অনুষ্ঠানে কোনো দর্শক থাকবেন না।
আয়োজক সংস্থা এবিসির সঞ্চালক ডেভিড মুইর ও লিনসে ডেভিস বিতর্কে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করবেন। পুরো ৯০ মিনিটের এই বিতর্কে দুটি বিজ্ঞাপন বিরতি থাকবে। এক প্রার্থী কথা বলায় সময় অপর প্রার্থীর মাইক বন্ধ থাকবে।
বিতর্কের সময় প্রশ্ন করতে পারবেন শুধু সঞ্চালকরা। আর প্রার্থীদের আগে থেকে কোনো প্রশ্ন দেওয়া হবে না। স্বাগত বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাবেন না কেউই। প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য দুই মিনিট করে সময় পাবেন প্রার্থীরা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর জবাবের যুক্তি খণ্ডনের জন্য আরও দুই মিনিট পাবেন অপর প্রতিযোগী।
আর সম্পূরক প্রশ্ন, কোনো বিষয় স্পষ্ট করার জন্য আরও এক মিনিট সময় দেওয়া হবে। সব শেষে সমাপনী বক্তব্য দেওয়ার জন্য দুই মিনিট করে সময় তারা।
ভার্চুয়াল টসের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রথমে বক্তব্য দেবেন কমলা হ্যারিস। পুরো বিতর্কের সময় মঞ্চের পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
দুজনকেই কলম ও কাগজ দেওয়া হবে। তবে হাতে চিরকুট রাখার সুযোগ পাবেন না। বিজ্ঞাপন বিরতির সময় প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন না দলের প্রচার শিবিরের কর্মীরা।
এর আগে জুনে ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিভিশন বিতর্কে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিপর্যয়ের পর তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাধ্য হন। ডেমোক্রেট দলের কনভেনশনে প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। আমেরিকার নারী, কৃষাঙ্গ এবং দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে (৫৯) নিয়ে বিরোধী প্রার্থী ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক বক্তব্য থেমে নেই। বিতর্কের আগে জাতীয় জরিপে জনসমর্থনে ট্রাম্পের চেয়ে কমলা এগিয়ে থাকলেও ট্রাম্প তাকে খাটো করে দেখানোর জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে বিতর্কেও ট্রাম্প তার আক্রমণাত্মক ভঙ্গি তুলে ধরবেন বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। কারণ, কমলা হ্যারিস নির্বাচনী লড়াইয়ের মাঠে প্রবেশের কারণে ট্রাম্প (৭৮) হয়ে পড়েছেন মার্কিন নির্বাচনী ইতিহাসের সবচেয়ে প্রবীণ প্রার্থী।
রুটজার্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইনফরমেশনের এরিন ক্রিস্টি বলেছেন, ‘এ ধরনের একেবারে ভিন্ন ধরনের দুই প্রার্থী এর আগে কখনও মুখোমুখি হননি। ফলে এই বিতর্ক হবে খুবই আকর্ষণীয় ও সচেতনতামূলক এবং নির্বাচনে জয় পরাজয় নির্ধারণকারী।’