যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন। এমনটাই দাবি করেছেন ট্রাম্প নিজে। জানিয়েছেন, তিনি এখন নিরাপদ ও সুস্থ আছেন। এই হত্যাচেষ্টায় জড়িত সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রায়ান রুথ নামে একজনকে আটক করেছে। ভারতী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সময় রোববার ফ্লোরিডায় অবস্থিত ট্রাম্পের নিজস্ব গলফ কোর্টে এই হামলা হয়। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ট্রাম্পের ওপর গুলি হামলা হলো। এ ঘটনার পর মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই জানিয়েছে, তারা রোববার ট্রাম্পের ওপর যে হত্যাচেষ্টা হয়েছে সে বিষয় তদন্ত করছে।
ঘটনার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়েস্ট পাম বিচ কোর্সে গলফ খেলছিলেন, যা তাঁর বাসভবন মার-এ-লাগো থেকে অল্প দূরে। এ ঘটনার পর এফবিআই, সিক্রেট সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে বলা হয়, ট্রাম্প যখন গলফ খেলছিলেন, তখন সেখানে একজন সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট উপস্থিত ছিলেন। তিনি ঘটনাস্থলের সীমানাপ্রাচীরের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে দেখতে পেয়েছিলেন। সেই ব্যক্তির ওপর সেই সিক্রেট এজেন্ট গুলি চালিয়েছিলেন।
পাম বিচ কাউন্টি শেরিফ রিক ব্র্যাড শ বলেছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ট্রাম্পের কাছ থেকে ৪০০-৫০০ গজ দূরে ছিল এবং মনে হচ্ছে তিনি নিজেই গুলি করতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁর ওপর গুলি চালানোর পর সন্দেহভাজন ব্যক্তি একটি কালো গাড়িতে জঙ্গলে পালিয়ে যান। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাঁকে দ্রুত শনাক্ত করে এবং আটক করে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যাকপ্যাক, গো-প্রো ক্যামেরা এবং একটি একে-৪৭ স্টাইল রাইফেলসহ আরও বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে।
আটক ওই ব্যক্তির পুরো নাম রায়ান ওয়েসলি রুথ। তাঁর আটকের বিষয়ে পাম বিচ কাউন্টি শেরিফ রিক ব্র্যাড শ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে এই মুহূর্তে একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি হেফাজতে আছে।’
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস অনুসারে, রায়ান রুথ নর্থ ক্যারোলিনা গ্রিনসবোরোর বাসিন্দা। তিনি পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। সামরিক কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও অতীতে তিনি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর কিয়েভের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। সে সময় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছিলেন, ‘আমি ক্রাকো যেতে চাই এবং স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ইউক্রেনের সীমান্তে লড়াই করে মরতে চাই।’
আরেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ-এ তাঁর বায়ো লেখা আছে, ‘আমাদের প্রত্যেককে মানবাধিকার, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রকে সমর্থন করার জন্য ছোট ছোট পদক্ষেপে প্রতিদিন আমাদের অংশ করতে হবে; আমাদের প্রত্যেককে চীনাদের সাহায্য করতে হবে।’
এর আগে, ২০০২ সালে গ্রিনসবোরোতে একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ একটি ভবনের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল তবে মামলায় এখনো রায় হয়নি।