নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতি ও সরকারের ‘৪০ বছরের নিচে ৪০ জন’ উদীয়মান নেতার তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশি নারী তাসফিয়া নাইম। তিনি পরিবেশনীতি নিয়ে কাজ করেন। তার এই অর্জনে গর্বিত নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রবাসে-স্বদেশে অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছেন তাসফিয়া নাইম।
প্রায়ই বলা হয়, যৌবন তরুণদের জন্য বৃথা যায়, কিন্তু নিউইয়র্ক সিটির অনেক প্রতিভাবান ও পরিশ্রমী মানুষ এ কথার সঙ্গে একমত হবেন না। কারণ City & State এর সর্বশেষ ‘Rising Stars’ তালিকা ৪০ জন অসাধারণ তরুণ নেতাকে তুলে ধরেছে, যারা ইতিমধ্যেই সরকার, ব্যক্তিগত ও অলাভজনক খাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছেন—যা অনেকের পুরো কর্মজীবনেও অর্জন করা কঠিন।
তাসফিয়া নাইম বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা নাইম আহমেদ দম্পতির কন্যা। তিনি সিটি রাজনীতি ও সরকারে নেতৃত্বের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছেন। যখন গত গ্রীষ্মে কানাডিয়ান বনের ধোঁয়া নিউইয়র্ক শহরকে ঢেকে ফেলেছিল এবং অনেকেই ঘরের ভেতরে আবদ্ধ ছিলেন, তখন তাসফিয়া নাইম শহরের জন্য নীতি প্রস্তাব তৈরি করতে ব্যস্ত ছিলেন।
তিনি 5BORO ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবনী জলবায়ু সমাধান দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অ্যাডামস ও ডি ব্লাসিও প্রশাসন এবং ওবামার হোয়াইট হাউসে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি গবেষণা করেছেন, নীতি প্রতিবেদনসহ লিখেছেন, ফেলোদের পরিচালনা করেছেন এবং প্রতিষ্ঠানটির কৌশল, কার্যক্রম ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বাংলাদেশ থেকে আসা তাসফিয়া নাইম ছোটবেলা থেকেই পরিবেশগত সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তাসফিয়া বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি। তাই এটি আমার জীবনের সঙ্গে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ছিল।’
কলেজে জীববিজ্ঞান ও পরিবেশ বিজ্ঞান পড়ার পর নাইম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থার (EPA) জন্য জলবায়ু পরিবর্তন যোগাযোগকারী হিসেবে কাজ করেছেন, যেখানে তিনি জাতীয় জলবায়ু নীতি ও বিজ্ঞান-সচেতনতা বৃদ্ধির কৌশল তৈরি ও বাস্তবায়ন করেছিলেন।
স্থানীয় প্রভাবের প্রতি তার আগ্রহ তাকে পৌরনীতিতে মনোনিবেশ করতে প্ররোচিত করেছে, যার মধ্যে PlanNYC এবং OneNYC এর মতো বড় বড় জলবায়ু উদ্যোগ রয়েছে। তিনি এখন NYSERDA-তে ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে যোগ দিচ্ছেন, যেখানে তার লক্ষ্য হবে পরিচ্ছন্ন শক্তি ও ডিকার্বনাইজেশন লক্ষ্যের ওপর কাজ করা।
তাসফিয়া নাইম আরও বলেন, ‘ফেডারেল পর্যায়ে কাজ করার সময়ও আমার কাজ সব সময়ই সম্প্রদায়কে উদ্দীপ্ত করার উদ্দেশ্যে ছিল। নিউইয়র্কবাসীকে সহায়তা করার এবং পরিচ্ছন্ন ও সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করার অনেক সুযোগ রয়েছে।’