পাবনার সাঁথিয়ায় মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে নারী ও শিশুসহ আটজন নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। নিখোঁজদের সন্ধান না পেয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা।
নিখোঁজরা হলেন- উপজেলার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের ঘুঘুদহ গ্রামের আসাদ শেখের ছেলে হামিম (১১), একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে সোহান (১০),আব্দুর রহিমের মেয়ে রাফিয়া খাতুন (১৩), সাঁথিয়া পৌরসভার পূর্ব ভবানীপুর গ্রামের হবিবুর রহমান হবির ছেলে রিয়াদ (৮), হাসান (৫), হোসাইন (৫), কশিনাথপুর ইউনিয়নের চন্ডীপুর গ্রামের মৃত ফজলাল শেখের মেয়ে রিদি খাতুন (১৪) এবং রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের মালিয়ান্দাহ গ্রামের সুব্রত কর্মকার (৪৫)। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে নিখোঁজদের পরিবার।
ভুক্তভোগীদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ১৮ দিনে নিখোঁজের ঘটনাগুলো ঘটেছে।
নিখোঁজ রিদি খাতুনের ভাই সবুজ হোসেন বলেন, গত ১৬ অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে আমার বোন রিদি বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। আমার বোন একজন বাক প্রতিবন্ধী।
রিয়াদ, হাসান ও হোসাইনের মা আয়শা খাতুন বলেন, গত ১৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমার ছেলেরা তাদের বাবার সঙ্গে দাওয়াত খেতে বেড়া যায়। এরপর থেকে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নিখোঁজ সুব্রত কর্মকারের ছেলে শুভ কর্মকার বলেন, আমার বাবা গত ৩০ অক্টোবর সাঁথিয়া পৌরসভার আফতাবনগর (ছেঁচানিয়া) মহল্লায় ফুপুর বাড়ি বেড়াতে যান। পরদিন দুপুরে সেখান থেকে বাড়ির (বাঘা) উদ্দেশে বের হন। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ঘুঘুদহ গ্রামের হামিমের বাবা আসাদ শেখ ও সোহানের বাবা সাইফুল ইসলাম জানান, গত ৩ নভেম্বর সকালে হামিম ও সোহান স্থানীয় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়তে যাওয়ার পর আর বাড়ি ফিরে আসেনি।
রাফিয়া খাতুনের ফুপাত ভাই আশিক হোসেন টিটু জানান, রাফিয়া তাদের বাড়িতে থেকে ঘুঘুদহ দাখিল মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো। গত ৩ নভেম্বর সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেনি।
সহকারী অধ্যাপক আলেয়া খাতুন নামের এক অভিভাবক বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যে এতগুলো নিখোঁজের ঘটনায় সন্তানদের স্কুল এবং কোথাও একা যেতে দিতে ভয় করে। সন্তানরা বাড়ি থেকে বের হলেই সবসময় আতঙ্কে থাকি। যতক্ষণ বাড়ি ফিরে না আসে ততক্ষণ দুশ্চিন্তা হয়।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, নিখোঁজদের ব্যাপারে থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। তাদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে।