আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:৪৬

রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না-করা নিয়ে কিছুটা উভয়সংকটে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা আওয়ামী লীগকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার বিষয়ে অনড়। অন্যদিকে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে।
বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো চাচ্ছে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া হোক। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা এবং দলটিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার দাবিতে সোচ্চার। তাঁরা নির্বাচনের আগে জরুরি সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার আছে কি না, সে প্রশ্নের সুরাহা চান। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে অগ্রাধিকার নির্ধারণ নিয়ে এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে।
আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘এটা ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি। বিএনপি এটা করেছে, বলেছে সব রাজনৈতিক দল অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সুতরাং তারা ইতিমধ্যে রায় দিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান দলের মতামতকে উপেক্ষা করব না।’
গত সোমবার প্রধান উপদেষ্টার এই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে। এই ক্ষেত্রে বিএনপি একটা বাধা, রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন ধারণা তৈরি হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা প্রতিহত করতে প্রয়োজনে ‘দ্বিতীয় অভ্যুত্থানের’ হুমকি দিয়েছেন।
সরকার, বিএনপি, ছাত্রনেতা-যার যার কৌশলে ব্যস্ত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই ছাত্রনেতারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করে আসছেন। এরই মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে মাঠে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে এসেছে বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে বিএনপির সায় পাচ্ছে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এর আগে আওয়ামী লীগের নিয়োগ করা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের দাবিতেও ছাত্রনেতাদের মতো করে বিএনপি সাড়া দেয়নি। রাষ্ট্রপতি ইস্যুকে কেন্দ্র নতুন কোনো সংকট তৈরি হতে পারে, সে আশঙ্কায় দলটি ওই পথে হাঁটেনি বলে বিএনপি সূত্রে জানা যায়।