বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, পোশাক নিয়ে মহিলাদের ওপর জোর খাটানো হবে না। কোনো বোন যদি পোশাকের বাইরে থাকেন, আমরা কথা দিচ্ছি, নিশ্চয়তা দিচ্ছি, কারো ওপর জোর খাটানো হবে না।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরা সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমাদের ব্যাপারে ইসলামের প্রতিপক্ষ শক্তিরা অপপ্রচার চালায়। বলে, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে মহিলাদের ঘর থেকে বের হতে দেবে না। যদিও দেয়ও, জোর করে বোরকা পরাবে।’
তিনি বলেন, ‘জোর করা লাগবে না। যে দেশে ইসলাম কায়েম হবে, সে দেশে মায়েরা আনন্দের সঙ্গে তাদের সম্মানের ও মর্যাদার পোশাক পরবেন।
অন্য ধর্মাবলম্বী নারীদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই দেশে শুধু মুসলমানেরা বসবাস করেন না। অন্য ধর্মের লোকেরাও বসবাস করেন। তারা (অন্য ধর্মাবলম্বীরা) যেহেতু আমাদের ধর্ম গ্রহণ করেননি, তাদের জন্য ইসলামের প্রেসক্রাইব (নির্দেশিত) করা পর্দা প্রযোজ্য নয়।
নারীদের বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেখানে আমাদের মা-বোনেরা ঘরে সুরক্ষিত থাকবেন, কর্মস্থলে সুরক্ষা পাবেন, রাস্তাঘাটেও সুরক্ষিত থাকবেন। তাদের দিকে কোনো খারাপ লোক চোখ তুলে তাকানোর ফুরসত পাবে না। তারা ইজ্জতের সঙ্গে, মর্যাদার সঙ্গে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।’
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মানবজীবনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নারীদের শরিক করেছেন উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘কাজটি হলো যুদ্ধ। মায়েরা পুরুষের পাশে থেকে যুদ্ধ করেছেন।’
জামায়াতের আমির বলেন, ‘যুদ্ধের এই কঠিন ময়দানে আল্লাহর রাসুল যদি নারীদের জন্য কর্মক্ষেত্র তৈরি করে দিয়ে থাকেন, তাহলে আমরা কে তাদের হাত বন্ধ করার।’
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়েও বক্তব্য দেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেখানে মসজিদ যেমন পাহারা দেওয়া লাগবে না, তেমনি মন্দির, গির্জাও পাহারা দেওয়া লাগবে না। সকল ধর্মের লোকেরা তাদের আপন ধর্ম শান্তিতে পালন করবে।’
কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির উপাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম। সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আজিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা ইজ্জত উল্লাহ, সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, মুহাদ্দিস রবিউল বাসার, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির শেখ নূরুল হুদা প্রমুখ।