ইংরেজি সাহিত্যে বাংলাদেশকে তুলে ধরার এক মাধ্যম রাফিদ এলাহী

সাহিত্য ডেস্ক
  ১২ মার্চ ২০২৫, ২২:৩৪

রাফিদ এলাহী চৌধুরী বর্তমানে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে বসবাসরত একজন বাংলাদেশি লেখক। বাংলা ও ইংরেজি—দুই ভাষাতেই সাবলীল, তবে তার লেখা প্রধানত ইংরেজি সাহিত্যে বাংলাদেশকে তুলে ধরার এক মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। রোমান্স, থ্রিলার, এবং আবেগঘন কবিতার মাধ্যমে তিনি শুধু প্রেমের গল্পই নয়, বরং সময়ের সঙ্গে বদলে যাওয়া অনুভূতির এক বহুমাত্রিক উপস্থাপন তৈরি করেছেন।
তার লেখালেখির শুরুটা হয় বেশ অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। তার ভাষায়, ‘‘আমি যখন ক্লাস ফাইভে পড়তাম, আমার স্কুলব্যাগে একটা ডায়েরি থাকত। সেখানে আমি চিঠি লিখতাম, এক মেয়ের জন্য, যাকে আমি পছন্দ করতাম। আমাদের মধ্যে কিছু ছিল না, কিন্তু একদিন সেই গোপন কথা ফাঁস হয়ে যায়। তখন সবাই আমাকে ‘লেখক’ বলে মজা করত।’’ সেই মজার মধ্য দিয়েই সাহিত্যের প্রতি তার ভালোবাসার জন্ম হয়। ধীরে ধীরে লেখালেখি তার জন্য এক নিজস্ব জগত তৈরি করে, যেখানে বাস্তবতাকে দূরে রেখে নিজের কল্পনায় বাঁচা সম্ভব।
শুরুটা কবিতা আর ছোটগল্প দিয়ে হলেও, প্রকাশনার দুনিয়ায় তার প্রথম কাজ ছিল ম্যাগাজিন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত গল্পগুলো। ধীরে ধীরে তিনি পাঠকদের মধ্যে পরিচিতি পেতে থাকেন। তার মা-বাবার উৎসাহ তার লেখালেখির যাত্রায় বড় ভূমিকা রেখেছে। 
তরুণ এই লেখক বলেন, ‘আমার আম্মু আমাকে বই কিনে দিতেন প্রায়ই। বলতেন, এই বাজেটের মধ্যে তুমি যেকোনো বই কিনতে পারো। আমি যতটুকু সম্ভব, সেই বাজেটের মধ্যে বই কিনতাম। আব্বুও অনেক সাপোর্ট করেছেন, বিশেষ করে যখন আমার বই প্রকাশ হতে শুরু করল।’
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের গল্প বিশ্বকে বলা উচিত। এটাই তার লেখালেখির অন্যতম উদ্দেশ্য। তার জন্য ইংরেজিতে লেখা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের, তবে বাংলা ভাষায়ও লিখেছেন তিনি। তার লেখায় বাংলাদেশের সংস্কৃতি, আবেগ, এবং জীবনধারার গভীর প্রতিফলন দেখা যায়। কিন্তু তিনি শুধু বাংলাদেশের গল্প বলেই থেমে থাকতে চান না।
রাফিদ মূলত রোমান্টিক লেখক হিসেবে পরিচিত, তবে তিনি শুধুই তাতেই সীমাবদ্ধ নন। তার লেখায় বাস্তব জীবনের গল্পগুলো নতুন এক মাত্রা পায়। 
তিনি বলেন, ‘আমি জনসাধারণের জন্য লিখতে চাই। এমন গল্প বলতে চাই, যা মানুষ শুনতে চায়, কিন্তু কেউ বলে না।’
তার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস My Acid Romance, যা তিন বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিল, এখনও অনেক পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। 
তিনি বলেন, এখনো অনেক মেসেজ পাই, যেখানে মানুষ বলে কতোটা ভালোবাসে এই বইটাকে। আমি প্রথমে ভাবতাম, এটা আমার সেরা কাজ নয়, কিন্তু এই গল্পকে মানুষ এতটা আপন করে নিয়েছে, আমি তার জন্য কৃতজ্ঞ।