বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘স্বাধীনতা দিবস প্রমাণ করবে যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নেই।’
বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ বীর শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা যারা বলে তারা আজকের এই স্বাধীনতা দিবসকে খাটো করতে চায় । অর্থাৎ একাত্তরের স্বাধীনতায় তাদের কোনও ভূমিকা ছিল না । আমি বলবো, তারা যেন একটু নিবৃত্ত থাকে এবং এই স্বাধীনতা দিবসকে সম্মান জানায়। এই স্বাধীনতাকে যেন আমরা ধরে রাখতে পারি।’
সব দলের ঐক্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনৈক্যর কিছু নাই, একটা স্বার্থের জায়গা আছে। প্রত্যেকটা দলের একটা এথিকাল জায়গা আছে। যার যার একটা মতাদর্শ আছে। যার যার মতাদর্শ থেকে সে কথা বলে যাচ্ছে। এটা কোনও অনৈক্য আমি বলবো না। তবে অনৈক্য যদি কেউ বলে, এমন সময় যদি আসে, জাতীয় বৃহত্তর ঐক্যের প্রয়োজন পড়বে, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে ঐক্যর প্রয়োজন পড়বে তখন কিন্তু আমরা সবাই এক হয়ে যাবো। এখন দলীয় আদর্শের ওপর আমরা হয়তো ভিন্ন কথা বলছি।’
নির্বাচন নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন ডিসেম্বর নির্বাচন হবে, আমরা সেখানেই বিশ্বাস রাখতে চাই। আমাদের বিশ্বাসের পরিবর্তন করতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন এবং দেশে থেকে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছেন। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদটা মাঝে আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম। এখন আবার নতুন করে পেয়েছি ৫ তারিখের পরে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে তাড়িয়ে একটা নতুন আশ্বাস পেয়েছি।’
জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। শেখ হাসিনার পতনের পর প্রথম স্বাধীনতা দিবসে অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে এবার নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার (২৬ মার্চ) সকাল ৯টায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানানোর কথা থাকলেও ভোর থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শেরে বাংলা নগরে সমবেত হন কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
সকাল পৌনে ৯টায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের নেতৃত্বে প্রথম মিছিলটি সমাধিস্থলে অবস্থান নেয়। এরপর একে একে মহানগর দক্ষিণ বিএনপি, কেন্দ্রীয় যুব দল, ছাত্র দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, মুক্তিযোদ্ধা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের পক্ষে আলাদা আলাদা ব্যানারে মিছিল আসতে থাকে। পর্যায়ক্রমে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ সময় জিয়ার সমাধিসহ জিয়া উদ্যানের আশপাশে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ৯টায় বিএনপি মহাসচিব সেখানে পৌঁছার পর জিয়ার নামে স্লোগানমুখর হয়ে উঠে সমাধিস্থল।
মতিঝিল থেকে আগত মহিলা দলকর্মী রেহেনা বেগম বলেন, জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে দেশ স্বাধীন হতো না। তাই তিনি আমাদের প্রেরণার উৎস।
বিএনপির ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেন, বিগত দিনেও আমরা স্বাধীনতা ও বিভিন্ন দিবসগুলোতে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছি। তবে তখন আমাদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হতো। এবার সম্পূর্ণ নির্বিঘ্নে আমরা শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছি। তাই এবার নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ ছিল উৎসবমুখর।