ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়, কী বলছেন গোপালগঞ্জের মানুষ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০৮

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত ডামি নির্বাচনের প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার খুনি শেখ হাসিনার মামলার রায়ে তার জন্মস্থান গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়ার মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
সোমবার বিকালে গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে তাদের প্রতিক্রিয়া জানা যায়।
উদীচী গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি নাজমুল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যেসব নাগরিক এবং নিরীহ ছাত্র-যুবকদের হত্যা ও আহত করা হয়েছিল- এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি শেখ ইমরান হোসেন বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় মানুষের মধ্যে এ রায়ে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। ট্রাইব্যুনালের রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় একজন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব প্রতিফলিত হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি রবীন্দ্র অধিকারী প্রতিক্রিয়ায় বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের এ রায়কে মেনে নিতে হবে। একটি সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে।
গোপালগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জুলকদর রহমান প্রতিক্রিয়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, খুব বিপদে আছি। আমাকে আর বিপদের মধ্যে ঠেলে দেবেন না।
বাংলাদের কমিউনিস্ট পার্টি গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু হোসেন কোনো প্রতিক্রিয়া দেবেন না বলে জানান।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আলি তোহা বলেন, এ রায় আমাদের প্রত্যাশিত রায়। রায় যাতে দ্রুত কার্যকর করা হয় একজন জুলাই যোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে আমাদের এটাই দাবি। বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।
টুঙ্গিপাড়ার রিকশাচালক আতাহার ও গোপালগঞ্জের পরিবহণ শ্রমিক রাসেল মিয়া বলেন, আমরা সাধারণ মানুষ। আমরা রাজনীতি বুঝি না। তাই এ বিষয়ে কোনো কথা বলবো না।
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এমএম রেজাউল করিম তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ট্রাইব্যুনাল ন্যায়বিচার করেছেন। জুলাইযোদ্ধা এবং জুলাই আন্দোলনের শহীদরা ন্যায়বিচার পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় এবং ৫ আগস্টের পর গোপালগঞ্জে অসংখ্য মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে গা-ঢাকা দেওয়ায় কথা হয় গোপালগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন খানের সঙ্গে। তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অবৈধ সরকারের অবৈধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গোপালগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের আহবায়ক ফিরোজ খানের কাছে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফাঁসির রায় ঘোষণা করেছে ট্রাইব্যুনাল। এটি আগামী দিনে রাজনীতিবিদদের জন্য একটি বার্তা। অপরাধ করে কেউ পার পায় না, এ রায় তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। আগামীতে কোনো সরকার নাগরিকের বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকার হরণ, গুম, খুনসহ মানবতাবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড করে পার পাবে না। ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবে না। আজকের রায়ে সে বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে।