গ্রামীণ টেলিকম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস

নিজের বাড়িতে অন্য কেউ তালা মারলে কেমন লাগে

গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সামনে ঝাড়ু মিছিল
নিজস্ব প্রতিবেদক
  ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:০৪

গ্রামীণ টেলিকম ভবন অবরুদ্ধ করে আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি জানান, গ্রামীণ ব্যাংকের ‘নামধারী’ কয়েকজন কর্মকর্তা ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
আক্ষেপের সঙ্গে ইউনূস বলেন, ওই দিন থেকে তারা ভবনে তালা মেরে রেখেছেন। নিজের বাড়িতে অন্য কেউ যদি তালা মারে, তখন কেমন লাগার কথা আপনারাই বলেন। তাহলে দেশে আইন–আদালত আছে কিসের জন্য। তারা আদালতে যেতে চায় না।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ড. ইউনূস। ঢাকার মিরপুর ১ নম্বরে চিড়িয়াখানা সড়কে গ্রামীণ টেলিকম ভবন। ওই ভবনে তার ১৬টি কোম্পানি রয়েছে। যার প্রতিটির চেয়ারম্যান ড. ইউনূস।
ড. ইউনূস বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের নামধারী কয়েকজন কর্মকর্তা ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। পুলিশের কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইলেও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। সরকারেরও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে আদালতে শরণাপন্ন হবেন বলে জানান তিনি।
গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় টেলিকমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে ইউনূস বলেন, এখানে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো টাকা নেই। ব্যাংকের কোনো দাবি-দাওয়া নেই, এটা পরিষ্কার। আমরা আইন বুঝে কাজ করেছি। এখন জটিল পরিস্থিতিতে কাজ করতে হয়। আইন ভঙ্গ করলে বিপদের চেয়ে মহাবিপদ। সব কিছু আইন মেনে মেনে গেছি। তাদের যদি অন্যরকম উদ্দেশ্য থাকে সেটা তাদের ব্যাপার। গ্রামীণ ব্যাংকের এই প্রতিষ্ঠানের কোনো অধিকার নেই।
তিনি বলেন, সরকারের কোনো সহযোগিতা তো পেলাম না। পুলিশই তো বড় রক্ষক, তাদের কাছে থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। কী জন্য তারা সহযোগিতা করছে না, তাদের পেলে তো আমরা সুখে-শান্তিতে থাকতাম। যাই হোক আলাপ-আলোচনার মধ্যে যাবো। এখন তো জবরদখল চলে গেলো।

গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সামনে ঝাড়ু মিছিল
এদিকে মিরপুরে ড. ইউনূসের সংবাদ সম্মেলনের খবর শুনে সকালে ঝাড়ু মিছিল করে একদল মানুষ। সকাল ৮টা থেকে চিড়িয়াখানা রোডে অবস্থিত গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সামনে নারী-পুরুষ অবস্থান নেন। তারা ঝাড়ু হাতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এছাড়া গ্রামীণ টেলিকমে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাইরে বের করে দেন। এসময় আশপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি ছিল। গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষের দাবি, এসব ব্যক্তিরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
গ্রামীণ কমিউনিকেশনের নির্বাহী চেয়ারম্যান নাজনীন বলেন, সকালে এসে দেখি এখানে ঝাড়ু মিছিল হচ্ছে। গেটের সামনে সিটি করপোরেশনের ঝাড়ুদার বসিয়ে দিয়েছে। কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। আমি একজনকে জিজ্ঞেস করলাম আপনারা কারা, তিনি বললেন আমি যুবলীগ থেকে আসছি। ওপরের নির্দেশনা আছে। আপনারা ঢুকতে পারবেন না।
ঝাড়ু মিছিল প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, আমরাও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি। আমরা তাদের সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি আসার আগে তারা চলে গেছে।