বেইলি রোডে ভয়াবহ আগুন 

আহত কেউই শঙ্কামুক্ত না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

৪৬ মরদেহের মধ্যে ৩৮ মরদেহ হস্তান্তর
নিজস্ব সংবাদদাতা
  ০১ মার্চ ২০২৪, ১২:২৯

রাজধানীর বেইলি রোডে একটি বহুতল ভবনে লাগা আগুনের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১২ জন ভর্তি আছেন। তাদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামান্ত লাল সেন।
শুক্রবার (০১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢামেক হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রোগিদের অবস্থা পরিদর্শন শেষে এ তথ্য জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গতকাল রাতে বেইলি রোডে একটি ভবনের রেস্টুরেন্টে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে, যা মোটেই কাম্য ছিল না। ওই দুর্ঘটনার পরে আমাদের এখানে (শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট) বেশ কিছু রোগী আসেন। আমাদের জানা মতে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মৃত্যু হয়েছে, তারা কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ার ফলে মারা গেছেন। যখন বদ্ধ ঘরে কেউ বের হতে পারে না, তখন শ্বাসনালিতে ওই ধোঁয়া চলে যায়। প্রত্যেকেরই তা হয়েছে। যাদের বেশি হয়েছে, তারা বাঁচতে পারেননি। অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এখনও যারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তারা কেউ শঙ্কামুক্ত না।
তিনি বলেন, আমরা আহতদের সকাল থেকে চিকিৎসা দিচ্ছি। এখন আবার আমি আমাদের চিকিৎসকদের সঙ্গে বসবো। বসে পরিকল্পনা করবো, কীভাবে কি করা যায়। সবার কাছে অনুরোধ কেউ যেন হাসপাতালে ভিড় না করেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে সকাল পৌনে ৭টার সময় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন, তুমি যাও, যা যা করার করবা। আমি সমস্ত রোগীদের দায়িত্ব নিলাম। রোগিদের চিকিৎসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সবকিছু করা হবে।
এ সময় ৪৬টি মরদেহের মধ্যে ৩৮টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখনও আটটি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়নি। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জন এবং ঢামেক হাসপাতালে ২ জন রোগী ভর্তি আছেন। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি সবার শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। এ জন্য কাউকে শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।

৩৮ মরদেহ হস্তান্তর
রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে আগুনে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর চলছে। শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ২৯টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহত ৪৫ জনের মধ্যে ৩৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ভোরের দিকে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহকারী কমিশনার মোস্তফা আব্দুল্লাহ আল-নূর জানান, এ পর্যন্ত নিহত ৪৫ জনের মধ্যে ৩৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।  
তিনি জানান, ২৯ জনের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। চেহারা, জামাকাপড় দেখে স্বজনরা মরদেহ শনাক্ত করেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই মরদেহ হস্তান্তর করা হচ্ছে। এ সংখ্যা বাড়বে।  
তিনি আরও জানান, শনাক্ত না হওয়া মরদেহগুলোর মধ্যে পাঁচজনের চেহারা বোঝা যাচ্ছে। একটি মরদেহ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া এটি হস্তান্তর করা সম্ভব হবে না।