আজ রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির কাউন্সিল 

তৈরি হচ্ছে জাতীয় পার্টি নামে আরও একটি দল

সম্মেলনে যাবেন না রংপুরের নেতারা!
ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৯ মার্চ ২০২৪, ০০:৫৫
আপডেট  : ০৯ মার্চ ২০২৪, ১২:২৪

বিভিন্ন সময় জাতীয় পার্টি থেকে একাধিক নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। 
অব্যাহতি পাওয়া এসব নেতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদের নেতৃত্ব। আজ ৯ মার্চ এই অংশের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যার ফলে জাতীয় পার্টি নামে আরও একটি দলের সৃষ্টি হচ্ছে। এরআগে জাতীয় পার্টি ভেঙে একই নামে ৫টি দল হয়েছে।
রাজধানীর রমনা ইনস্টিটিউটের সামনে খোলামাঠে নতুন জাতীয় পার্টির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। 
রওশন এরশাদ ছাড়া এই অংশে রয়েছেন— জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি পাওয়া কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু। 
সম্মেলন উপলক্ষ্যে কয়েক হাজার লোকের সমাগম করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে রাজধানী ছাড়া ঢাকার বাইরে থেকেও নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। সম্মেলন উপলক্ষ্যে রাজধানী বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার-ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। 
শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ আনন্দ বিরাজ করছে। 

সম্মেলনে যাবেন না রংপুরের নেতারা!
এদিকে, রংপুর জেলা জাপার শীর্ষ নেতাদের দাবি, রংপুর কেন, পুরো বিভাগ থেকে একজন নেতাকর্মীও রওশন এরশাদের ডাকা ‘অবৈধ’ কাউন্সিলে যাবে না।
রওশন এরশাদের ডাকা কাউন্সিল ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জেলা জাপার সাবেক নেতা ও কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ফকরুজ্জামান জাহাঙ্গীর জানান, তার নির্বাচনি এলাকা রংপুরের মিঠাপুকুর ও সাদ এরশাদের সমর্থকসহ সব মিলিয়ে শতাধিক তৃণমূল সমর্থক সম্মেলনে যোগ দেবেন।
এই বিষয়ে জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। সম্মেলনে রংপুর থেকে নেতাকর্মী আসার সম্ভাবনা কম। তবে শতাধিক তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী-সমর্থক আসবেন।
রওশনপন্থি এই নেতা বলেন, ‘আমি প্রথম দিক থেকে ম্যাডামের সঙ্গে আছি। যেহেতু ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে ম্যাডাম ও তার ছেলে সাদসহ বেশিরভাগ নেতাকর্মী অংশ নেয়নি, সে কারণে আমিও রংপুর-৫ আসনে প্রার্থী হইনি। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত ছিল। কারণ এতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে গ্যাপ তৈরি হয়।’
অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘রওশন এরশাদের সঙ্গে থাকার কারণে আমার প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদটি স্থগিত করে দিয়েছেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের।’
সম্মেলন কেমন হবে—এমন প্রশ্নে তাকে হতাশই মনে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এসব করে কোনও লাভ হবে বলে মনে হয় না। তবে রওশন এরশাদের সঙ্গে আছি ও থাকবো।’
এদিকে, রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক জানান, রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির কোনও পদধারী নেত্রী নন। সম্মেলন বা কাউন্সিল ডাকার তার কোনও অধিকার নেই। আর রংপুরসহ বিভাগের একজন নেতাকর্মীও তার সঙ্গে নেই এবং তার ডাকা সম্মেলনে কেউ যাবে না।’
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির জানান, শনিবার জাতীয় পার্টির কোনও সম্মেলন হচ্ছে না। এটা রওশন এরশাদের সম্মেলন। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলন আহ্বান করার কোনও এখতিয়ার তার নেই।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের একটি নিবন্ধিত দল জাতীয় পার্টি। ১২ নম্বরে এই দলের অবস্থান। আমাদের দলের প্রতীক লাঙ্গল। দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তা ছাড়া রওশন এরশাদ স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পাওয়ার যে আবেদন করেছিলেন, কমিশন তাদের আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে। ফলে রওশন এরশাদের ডাকা সম্মেলনে রংপুর ও পুরো বিভাগের একজন নেতাকর্মীও যাবে না।’
অন্যদিকে জাপার তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, কেউই রওশন এরশাদের ডাকা সম্মেলনে যাবেন না।
এদিকে, রওশনপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত জাপার সাবেক মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন সম্মেলনে অংশ নেবেন না। সম্মেলনকে বৈধ বলে মনে করেন না তিনি। তার দাবি, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী রওশন এরশাদ সম্মেলন আহ্বানই করতে পারেন না। তবে আবারও জি এম কাদেরের নেতৃত্বে দলে ফিরতে চান বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।