শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। অর্থনৈতিক সংকট, মূল্যস্ফীতি আর লাগামহীন বাজারদর কথা মাথায় রেখে গতবারের মতো এবারও রমজানে ইফতার পার্টি না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বরং সেই টাকা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে এবার সরকারিভাবে কোনো ইফতারি পার্টি হচ্ছে না। এ নির্দেশনা মানছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও। তবে এর ব্যতিক্রম বিএনপি। প্রথম রমজানেই ইফতার পার্টি আয়োজন করেছে দলটি।
বিশ্ব বাস্তবতা এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইফতার উদযাপন করা এবং বড় ধরনের ইফতার পার্টি আয়োজন না করাই সমীচীন বলে মনে করছেন ইসলামী বিশ্লেষক এবং বিশ্ব ইসলামী ভ্রাতৃত্বের নেতারা। বিশেষ করে গাজায় যে মানবতার আর্তনাদ এবং সারা বিশ্বজুড়ে যে পরিস্থিতি তাতে এবার রমজানে যেন সংযমের বার্তাটাই বেশি সঞ্চারিত হয় সে ব্যাপারে সকলে গুরুত্ব আরোপ করতে চাইছে। এরকম একটি পরিস্থিতি যখন দেশ এবং সারা বিশ্বে তখন বিএনপি ঘটা করে ইফতার উৎসব আয়োজন করছে।
বিএনপি নেতারা বলেন, তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। গতকাল ইফতারের পরও তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। দলের চেয়ারপার্সনের এমন শারীরিক অবস্থার মধ্যেই ইফতার পার্টি করল বিএনপি। গত মঙ্গলবার এ আয়োজন ছিল রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে। ঢাকাসহ সারা দেশে এমন পাঁচশর বেশি ইফতার পার্টি করবে দলটি।
কদিন আগে বিএনপির নেতারাই বলছিলেন যে, তাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, মানবেতর জীবনযাপন করছেন, অনেকে খেতে পারছেন না। এটি যদি বিএনপির বক্তব্য সত্যি হয় এবং বিএনপি যদি সত্যি সত্যি মনে করে যে, তাদের নেতারা প্রচণ্ড কষ্টে আছেন তাহলে এই জাঁকজমকের ইফতার পার্টি কেন?
বিএনপির নেতারা বলছিলেন যে, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। এরকম অসুস্থ অবস্থা নিয়ে বিএনপির তারা উদ্বিগ্ন। পরিবারের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য যখন অসুস্থ থাকে তখন পরিবারের অন্য সদস্যরা কি উৎসব করে? বিএনপি তাহলে নিজেরাই কি স্ববিরোধীতা করছে না?
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের টাকার দরকার। আর তাই এই ইফতার পার্টির নাটক সাজানো হয়েছে। ইফতার পার্টির মাধ্যমে বিএনপি শুরু করেছে নতুন করে চাঁদাবাজি। বিএনপির নেতৃবৃন্দ ইফতার পার্টি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছে। ইফতার যেহেতু একটি নির্দোষ কর্মসূচি এ কারণে অনেক ব্যবসায়ীও বিএনপিকে এই কাজের জন্য চাঁদা দিচ্ছেন এবং এই চাঁদার একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে লন্ডনে। বাকি অংশ দিয়ে এখানে ইফতারের মহা উৎসব করা হচ্ছে।
কিন্তু বিশ্বে যখন মুসলমানদের ওপর নিপীড়ণ নির্যাতন, মধ্যপ্রাচ্যের বহু মুসলমান রোজা রাখতে পারছেন না সীমাহীন দুর্দশার মধ্যে আছে, বাংলাদেশে যখন অর্থনৈতিক সংকট, বিএনপি নিজেরাই যখন বলছে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি কারণে মানুষের নাকি নাভিশ্বাস অবস্থা তাহলে বিএনপি এরকম বীভৎস উৎস করে কেমন করে। বিএনপির এই ইফতার পার্টি ইসলামের সাথে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ, তাদের বক্তব্যের সঙ্গে কতটুকু সাংঘর্ষিক সেটির বিবেচনার দায়িত্ব বিএনপিকেই নিতে হবে।