ব্রঙ্কসে বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটির বিরল ঐক্য

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:২২


নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটি এক বিরল রাজনৈতিক ঐক্যের নজির স্থাপন করেছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ব্রঙ্কসের গোল্ডেন প্যালেস পার্টি হলে আয়োজিত হয় এক ব্যতিক্রমী নির্বাচনী বিতর্ক ও ইলেকট্রনিক ভোটাভুটি।
ব্রঙ্কস বাংলাদেশি কমিউনিটি-ইউনিফায়েড ক্যানডিডেট কমিটির এর উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ৮৭তম অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্টের সম্ভাব্য তিন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী—জাকির চৌধুরী, ইমরান এম. শাহ ও জামাল হুসেইন—তাদের অভিজ্ঞতা, কমিউনিটির জন্য কাজ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

দুই ঘণ্টাব্যাপী এই প্রাণবন্ত বিতর্কে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন লেখক, সাংবাদিক, প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা ও বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন শামীম আল আমিন।
বিতর্ক শেষে ইলেকট্রনিক ভোটের মাধ্যমে মোট ৫৫ জন ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করেন। প্রতিটি প্রার্থী নিজ নিজ পক্ষ থেকে ১০ জন করে ভোটার আমন্ত্রণ জানান, বাকি ২৫ জন ছিলেন আয়োজক কমিটির সদস্য।
ভোট গণনার পর সিপিএ জাকির চৌধুরী বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত হন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ফলাফল ঘোষণার পর বাকি দুই প্রার্থী—ইমরান এম. শাহ ও জামাল হুসেইন—তা উষ্ণ অভিনন্দনের মাধ্যমে মেনে নেন এবং জাকির চৌধুরীকে পূর্ণ সমর্থনের ঘোষণা দেন।
এই রাজনৈতিক সৌহার্দ্যপূর্ণ দৃশ্যটি উপস্থিত সকলের জন্য ছিল অনুপ্রেরণাদায়ক, যা প্রায়শই অভিবাসী কমিউনিটিতে দেখা যায় না। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের উদ্যোগ কমিউনিটির রাজনৈতিক ঐক্য ও শক্তিকে আরও সুসংহত করবে।
অনুষ্ঠানটি ছিল শুধুমাত্র একটি বিতর্ক বা ভোটাভুটি নয়—বরং ছিল একটি উৎসবমুখর মিলনমেলা। প্রার্থীদের আন্তরিক অংশগ্রহণ, মডারেটরের দক্ষ নেতৃত্ব এবং সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে করে তোলে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বার বার সেখানে বলা হয়, এই বিতর্ক নিউ ইয়র্ক বোর্ড অব ইলেকশনের অন্তর্ভূক্ত কোন আয়োজন নয়। এটি ছিল সম্পূর্ণ কমিউনিটির নিজস্ব উদ্যোগে সংগঠিত। তবে গণতান্ত্রিক চর্চা ও রাজনৈতিক সচেতনতার দৃষ্টান্ত হিসেবে এটি অভিবাসী কমিউনিটির মধ্যে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই ঐতিহাসিক উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নে কাজ করেছেন আব্দুল মুমিন, রিয়াজ উদ্দিন কামরান, আব্দুস শহীদ, মোহাম্মদ আব্দুল গফ্ফার চৌধুরী, আব্দুল হাশিম হাসনু, নুরুস সামাদ চৌধুরী, আহাদ আলী, কাওসারুজ্জামান কয়েস, আলমাস আলী, শেখ আল মামুন, চার্লি আকবর (আলী), সৈয়দ শারফিন মোর্শেদ, ইব্রাহীম বারভূঁইয়া, মোহাম্মদ এন মজুমদার, ফরিদা ইয়াসমিন, মাসুদ উর রহমান, বিলাল ইসলাম, আব্দুল চৌধুরী, ড. আব্দুস সবুর, মোহাম্মদ আলী, রওশন আরা নিপা, আহবাব চৌধুরী, জুনায়েদ চৌধুরী, মোহবুব আলম এবং মুজাম্মেল হোসেন মুরাদ।
এ ছাড়া বিতর্কে ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাসুদ উর রহমান, মোহাম্মদ এন মজুমদার এবং আব্দুল চৌধুরী।
৮৭তম ডিস্ট্রিক্টে বর্তমানে দায়িত্বে আছেন অ্যাসেম্বলিমেম্বার কারিনেস রেয়েস, যিনি ২০১৯ সাল থেকে এই পদে আছেন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৯৪ শতাংশ ভোটে জয়ী হন। এবার তার বিপক্ষে লড়াইয়ে নামছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটির সম্মিলিত সমর্থন পাওয়া প্রার্থী সিপিএ জাকির চৌধুরী।