ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণ, কী করবেন?

অনলাইন সংস্করণ
  ২০ মার্চ ২০২২, ১৫:০৫
আপডেট  : ২১ মার্চ ২০২২, ১৩:১৩

ডায়াবেটিসকে সর্বগ্রাসী রোগ বলা হয়ে থাকে।  যার ডায়াবেটিস নেই, উচ্চরক্তচাপ নেই তার আসলে কোনো রোগই নেই।  মানুষের জীবনপদ্ধতির বদল, কায়িক শ্রমে অনীহা, স্থূলতা, এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী।


ডায়াবেটিস রোগীদের রুটিনমাফিক জীবন যাপন করতে হয়।  নিয়মিত হাঁটাহাটি করতে হয়, ব্যায়াম করতে হয়।  নিয়ন্ত্রিত খাবার খেতে হবে।  এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. খাজা নাজিম উদ্দীন। 

বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর এক তৃতীয়াংশ আছে বহুমূত্র রোগের/জটিলতার ঝুঁকিতে।  ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতিতে নিবন্ধিত রোগীর সংখ্যা ৪০ লাখ; প্রতি বছর বাড়ছে ১৫%।  বারডেমে নিবন্ধিত আছে পাঁচ হাজার ডায়াবেটিক শিশু।  প্রতি বছর নতুন নিবন্ধিত হচ্ছে ২০০ শিশু। আমাদের দেশে সরকারি হাসপাতালে বেড আছে ৫০ হাজার; এর মধ্যে ৮৭টি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য।

১০-১৪% অন্তঃসত্ত্বা নারী ডায়াবেটিসে ভোগেন।  গর্ভধারণের ২৪-২৬ সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা করে এটা নিশ্চিত করা উচিত।  বাচ্চা হওয়ার পর অনেকেরই সুগার স্বাভাবিক হয়ে যায়।

ডায়াবেটিস : নাস্তার আগে রক্তে গ্লুকোজ ৭ মিমোল/লি (১২৬ মি. গ্রাম) বা তার বেশি হলে সেটি ডায়াবেটিস।

খাওয়ার পর রক্তে গ্লুকোজ ১১.১ মিমোল/লি (২০০ মিগ্রাম) সেটি ডায়াবেটিস।

প্রেগনেন্সি ডায়াবেটিস (জিডিএম) : নাস্তার আগে ৫.১ মিমোল/ (৯২ মিগ্রাম)লি, খাওয়ার পর ৭ মিমোল/১২৬ মিগ্রাম/লিয়ের বেশি। 80% pregnancy diabetic ২০ বছরে ডায়াবেটিস হয়। প্রেগনেন্সি ডায়াবেটিস আসলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস। তাই সব প্রেগনেন্সি ডায়াবেটিকের উচিত follwo up এ থাকা। স্বাভাবিক হয়ে গেলেও তাই বাচ্চা হওয়ার ছয় সপ্তাহ পর গ্লুকোজ খেয়ে টেস্ট করা উচিত, দরকার হলে পরবর্তীকালেও।

স্বাভাবিক : নাস্তার আগে রক্তে গ্লুকোজ ৫.৬ মিমোল/লি (১০০ মি. গ্রাম) পর্যন্ত।

স্বাভাবিক : খাওয়ার পরে গ্লুকোজ ৭.৮ মিমোল/লি (১৪০ মিগ্রাম)

প্রিডায়াবেটিস : খাওয়ার পর গ্লুকোজ ৭.৯ মিমোল/লি (১৪১ মিগ্রাম) থেকে ১৯৯ মিগ্রাম (১১.০ মিমোল)/লি

প্রিডায়াবেটিস : নাস্তার আগে গ্লুকোজ ৫.৭ মিমোল/লি (১০১ মিগ্রাম) থেকে ১২৫ মি. গ্রাম (৬.৯ মিমোল)/লি

প্রিডায়াবেটিসদের ডায়াবেটিস হওয়ার আশংকা স্বাভাবিক লোকের চেয়ে তিনগুণ। প্রিডায়াবেটিসদের জটিলতাগুলো ডায়াবেটিস রোগীর মতোই। এ১সি ৬.৫ এর বেশি।

ঠিকমতো টেস্ট করা থাকলে যে কোনো একটা রিপোর্টই (কাট পয়েন্ট) ডায়াগনোসিস নিশ্চিত করবে।

কেন প্রিডায়াবেটিস : ১. এদের ডায়াবেটিস হওয়ার আশংকা তিনগুণ, ২. এদের ম্যাক্রোভাস্কুলার জটিলতা অর্থাৎ মোটা রক্তনালি, হার্ট ও ব্রেনের অসুখ বেশি হয়, ৩. এই স্টেজে গ্লুকোজ কন্ট্রোলে রাখতে পারলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

এ১সির সীমাবদ্ধতা

মেথড হতে হবে ন্যাশনাল গ্লাইকহিমোগ্লোবিন স্টান্ডার্ডাইজশন প্রোগ্রামে (এনজিএসপি)। এটার দায়িত্ব হল এ১সি পরীক্ষাটা ডিসিসিটি বা ইউকেপিডিএস স্টান্ডারডে করা হয়েছে কিনা নিশ্চিত করা। পরীক্ষাটা সব জায়গা হয় না এবং ব্যয়বহুল।

এ১সি দিয়ে ডায়াগনোসিস নিশ্চিত করলে নাস্তার আগে ও ২ ঘণ্টা পরের রেজাল্ট দিয়ে ডায়াগনোসিস নিশ্চিত হওয়ার তুলনায় ১/৩ রোগী কম ডায়াগনোসিস হয়।

হিমোগ্লোবিন কম থাকলে (ব্লিডিং, প্রেগনেন্সি, হিমলাইসিস)। ইরিথ্রপয়টিন ব্যবহার করলে এ১সি ঠিক আসে না।

বাচ্চাদের বেলায় এখনও গ্রহণযোগ্য নয়।

এ১সির সুবিধা হল কোনো প্রস্তুতি ছাড়া করা যায়।

কী করবেন

* উপসর্গ নেই; কিন্তু রান্ডম সুগার ১১.১ মিমোল রিপিট করতে হবে ওইদিন বা পরদিন দেরিতে নয়।

* ফাস্টিং <৭ কিন্তু এ১সি >৬.৫ -ডায়াগনোসিস নিশ্চিত।

* যদি দ্বিধা থাকে রিপিট করলে এ১সি দিয়ে নিশ্চিত হওয়ার চান্স বেশি।

* রিপোর্ট স্বাভাবিক হলে তিন বছরের মধ্যে রিপিট করতে হবে।

* প্রিডায়াবেটিস হলে এক বছরের মধ্যে রিপিট করতে হবে।