ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত সন্দেহে সত্তরোর্ধ্ব এক নারীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দেশটির পুলিশ। বুধবার (২৩ জুলাই) পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত নারী প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন এবং অস্ত্র সংগ্রহ ও নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য পেতে অন্য কর্মীদের সহায়তা চেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গুরুতর ও আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্তে নিয়োজিত ইসরায়েলি ন্যাশনাল ইউনিট ও অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত এ সংক্রান্ত প্রমাণ সংগ্রহ করে তা স্টেট অ্যাটর্নির দপ্তরে পাঠিয়েছে। এখন এই প্রমাণের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজ পুলিশের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে জানায়, সম্প্রতি ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং আশপাশের কয়েকজনকে বলেছিলেন- তিনি নেতানিয়াহুকে সঙ্গে নিয়েই মরবেন।
এই বক্তব্য শুনে উদ্বিগ্ন কয়েকজন ব্যক্তি পুলিশকে বিষয়টি জানান। এরপর তদন্ত শুরু হয় ও প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
হারেৎজ আরও জানায়, তেল আবিবের বাসিন্দা ওই নারীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। সন্দেহ করা হচ্ছে, তিনি হয়তো নেতানিয়াহুকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরক বা রকেটচালিত গ্রেনেড (আরপিজি) ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিলেন।
ইসরায়েলে অতীতে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতার ওপর প্রাণঘাতী হামলার নজির রয়েছে। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইতজাক রাবিনকে এক উগ্র ডানপন্থি হত্যা করেন, যিনি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার বিরোধিতা করতেন। এরও আগে, ১৯৫৭ সালে দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন-গুরিয়ন এক মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তির গ্রেনেড হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান।
তবে এবারের ঘটনা বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নেতানিয়াহু সরকার সম্প্রতি বিচার ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও বিক্ষোভের মুখে রয়েছে, যেখানে অনেক প্রবীণ নাগরিকও সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলমান ও অভিযুক্ত নারীর মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা ও কর্মপন্থা নিয়েও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে এখনই তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়নি।
সূত্র: রয়টার্স