ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অত্যাচার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বীরভূম জেলায় ইলমবাজারের একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস, উদ্বোধন ও সরকারি সেবা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি।
মমতা বলেন, খুব অত্যাচার হচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে। আসাম, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, উড়িষ্যা এবং দিল্লিতে ডাবল ইঞ্জিন সরকার অর্থাৎ যেখানে বিজেপি সরকার আছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের যারা মানুষ আছেন, যারা কাজ করতে গেছেন ২০-২৫ বছর ধরে; তাদের রেশন কার্ড আছে, আধার কার্ড আছে, জমির পাট্টা আছে; তা সত্ত্বেও তাদের জোর করে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হচ্ছে। তাদের থানায় নিয়ে ঘোরানো হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হরিয়ানার গুরগাঁওতে ১০টা ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করেছে। আসামে লাখ লাখ মানুষকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দিয়েছে।
এনআরসির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনাদের মনে আছে, যখন এনআরসি হয়েছিল, ১৭ লাখ নাম ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল, তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে সাত লাখ হিন্দুও ছিল, মুসলিম, শিখ, খ্রিষ্টান, নেপালি ছিল। মনে রাখবেন, ভুলে যাবেন না।
মমতা ব্যানার্জী বলেন, প্রত্যেকে ভোটার লিস্টে নাম তুলবেন নতুন করে। নতুন করে ভোটার লিস্ট করার নামে এনআরসি চালুর ব্যবস্থা হচ্ছে। বাংলায় আমরা যেন একজনও ভোটার লিস্টে নাম তুলতে বাদ না রাখি। এটা প্রকৃত ভোটারদের মাথায় রাখতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কেউ বাদ দিলে প্রতিবাদ করবেন। বিএলওকে বলবেন কেন বাদ গেলো, জবাব দাও। আমি প্রকৃত ভোটার, আমার ভোট বাদ গেলে আমি কিন্তু ছেড়ে কথা বলবো না। এটা আমার সাংবিধানিক অধিকার।
একই সঙ্গে যারা এবার প্রথমবার ভোটার তালিকায় নাম তুলবেন তারাও যেন এগিয়ে গিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলেন, সে পরামর্শ দেন মমতা ব্যানার্জী। তার কথায়, এটা রক্ষাকবজ। এমনকি যারা রাজ্যের বাইরে কাজ করেন, তারাও যেন বাড়ি ফিরে ভোটার তালিকায় নাম তোলেন।
এদিনের সরকারি প্রকল্প শিলান্যাস ও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, কাজল শেখ, রাজ্য সরকারের মন্ত্রী মলয় ঘটক, কারা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সংসদ সদস্য শতাব্দী রায়, অমিত মাল, রাজ্যসভার সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সভাপতি ফয়জুল হকসহ জেলার অন্য নেতারা।