মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র সার্জিও গোরকে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত পদে মনোনয়ন দিচ্ছেন।
বর্তমানে হোয়াইট হাউজ প্রেসিডেন্সিয়াল পারসোনেল অফিসের পরিচালক গোর দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূতের দায়িত্বও পালন করবেন।
ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার মনোনয়ন যতক্ষণ সেনেট অনুমোদন না করছে, ততক্ষণ গোর হোয়াইট হাউজের দায়িত্বেই থাকছেন, শুক্রবার ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্কের কারণে নয়া দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কে এখন সন্দেহ, অবিশ্বাস ও অস্বস্তি দেখা যাচ্ছে। রাষ্ট্রদূত হলে ৩৮ বছর বয়সী গোরকে এসব জটিলতা কাটিয়ে উঠতে হবে।
“সার্জিও একজন চমৎকার বন্ধু, যিনি বহু বছর ধরে আমার পাশে আছেন। আমার ঐতিহাসিক নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি কাজ করেছেন, আমার সর্বাধিক বিক্রিত বই প্রকাশ করেছেন এবং অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক তহবিল পরিচালনা করেছেন যা আমাদের আন্দোলনকে সহায়তা করেছে।
“বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চলে আমার এমনই একজনকে দরকার, আমার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে যাকে আমি পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারি, এবং যে আমাদের মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন করতে সহায়তা করবে,” গোরের প্রশংসা করে বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রতি বছরে গড়ে ১৯ হাজার কোটি ডলারের বেশি। ট্রাম্প এই মেয়াদে ক্ষমতায় বসেই বিশ্বজুড়ে সবার ওপর তার শুল্কের খড়্গ চাপিয়েছেন। এ খড়্গ থেকে খানিকটা রেহাই পেতে আরও অনেক দেশের মতো ভারতও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসে।
কিন্তু নয়া দিল্লি তাদের বিশাল কৃষি ও দুগ্ধ খাত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য খুলে দিতে অস্বীকৃতি জানালে সেই আলোচনা ভেস্তে যায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের ওপর প্রথমে ওয়াশিংটনের বাড়তি সম্পূরক শুল্ক চাপে ২৫%।
পরে রাশিয়ার কাছ থেকে নয়া দিল্লির তেল কেনা অব্যাহত থাকায় এই শুল্ক আরও ২৫% বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়, যা মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
বেইজিং-ই মস্কোর তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হলেও এই কারণ দেখিয়ে ট্রাম্প চীনের ওপর এখন পর্যন্ত বাড়তি শুল্ক চাপাননি।
গত সপ্তাহে মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ইউক্রেইন যুদ্ধের সুযোগে রাশিয়ার তেল কিনে ভারত ‘অতিরিক্ত মুনাফা’ করছে, যাকে অগ্রহণযোগ্য মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।
সিএনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ভারত এখন যত তেল কেনে তার ৪২ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে, অথচ যুদ্ধের আগে এই হার ছিল ১ শতাংশেরও কম। অন্যদিকে রাশিয়ার তেলের সর্ববৃহৎ ক্রেতা চীন এটা বাড়িয়ে ১৩% থেকে মাত্র ১৬% করেছে।
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ২৫ থেকে ২৯ অগাস্ট নয়া দিল্লি সফরে থাকার কথা ছিল মার্কিন বাণিজ্য আলোচকদের। কিন্তু ওই সফর হুট করেই বাতিল হয়ে যায়। এর পরই ট্রাম্প গোরকে ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দিলেন।