জনমত জরিপের ফলই সত্যি হল, ১৪ বছরের টোরি শাসনের অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল বিজয় পেল কিয়ার স্টারমারের লেবার পার্টি।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের ৬৫০টি আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন অন্তত ৩২৬টি। সেখানে ৬১৫টি আসনের ঘোষিত ফলাফলে ৪০২টি জিতে নিয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে মধ্য বামপন্থি দল লেবার পার্টি সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।
ভোটের প্রচারে পরিবর্তনের ডাক দেওয়া ৬১ বছর বয়সি স্টারমার বিপুল বিজয়ের পর ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন; বলেছেন, যুক্তরাজ্যে ‘পরিবর্তনের সূচনা’ হল।
সেন্ট্রাল লন্ডনে নিজের নির্বাচনী আসনে সমর্থকদের সামনে হাজির হয়ে তিনি বলেন, “আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনারা আমাদের দেশকে বদলে দিয়েছেন।”
পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে লেবার নেতা বলেন, জনগণের এই বিপুল ম্যান্ডেটের সঙ্গে বিরাট এক দায়িত্বও তাদের ওপর অর্পিত হয়েছে।
“রাজনীতিকে আমাদের আবার ফিরিয়ে নিতে হবে জনগণের সেবায়। আমাদের সরকার দেখাবে, আমরা সবার মঙ্গলের জন্যই কাজ করছি।”
২০১০ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা রক্ষণশীলদের যে ভরাডুবি হতে চলেছে, তা অনুমিতই ছিল। ৬১৫টি আসনের ঘোষিত ফলাফলে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে মাত্র ১০৮টি। অর্থাৎ দুইশর বেশি আসন তারা হারিয়েছে।
এবারের নির্বাচনের যে লেবার জোয়ার দেখা যাবে, সেই পূর্বাভাস ভোটের আগেই মেনে নিয়েছিলেন সবচেয়ে কম বয়সে যুক্তরাজ্যের প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী হওয়া সুনাক। নিজের দলের বড় হারের পর তিনি সমর্থকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
নিজের আসনে রিচমন্ডে জয় পাওয়া টোরি নেতা বলেন, “এই সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়েছে লেবার পার্টি। স্যার কিয়ার স্টারমারকে ফোন করে আমি অভিনন্দন জানিয়েছি।”
নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে কনজারভেটিভ পার্টি দেশের স্থিতশীলতা ও ভবিষ্যতের জন্য ভূমিকা রেখে যাবে জানিয়ে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ব্রিটিশ জনগণ আজ রাতে তাদের রায় জানিয়ে দিয়েছে। এখানে অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের। এই পরাজয়ের দায় আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি।”
যুক্তরাজ্যের আরেক বড় দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিও এবার ভালো ফল দেখিয়েছে। এড ডেভির নেতৃত্বাধীন এ দল এবার পেয়েছে ৬৭ আসন, যা গতবারের চেয়ে ৫৯টি বেশি। তবে জন সুইনির দল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি ৩৮টি আসন হারিয়ে পেয়েছে মাত্র সাতটি।