চলতি সপ্তাহের যুক্তরাষ্ট্র সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে ‘জয়ের পরিকল্পনা’ তুলে ধরবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এরপর তিনি কংগ্রেসের সামনেও তার প্রস্তাব উত্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া আসন্ন নির্বাচনের দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের সঙ্গেও এই ইস্যুতে আলোচনা করতে আগ্রহী তিনি। সোমবার (২৩ আগস্ট) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
অবশ্য ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থনের কড়া সমালোচনা করে এসেছেন ট্রাম্প। ওদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তিনি সবসময়ই সম্মান করে থাকেন। তবে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে ‘সম্ভবত’ সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছেন।
সফরকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন জেলেনস্কি। এছাড়া ইউক্রেনের জন্য হোয়াইট হাউজের প্রায় ৩৮ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা নিয়েও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন।
সামজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ করা পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এবারের শরতে যুদ্ধের পরিণতি চূড়ান্ত হবে।’
সফরের আগে দেওয়া এক বিবৃতিতে পরিকল্পনার তিনটি অনুষঙ্গ তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো- ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে আরও অস্ত্র সহায়তা প্রদান, শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাশিয়াকে কুটনৈতিক চাপে রাখা ও ২০২২ সাল থেকে শুরু হওয়া সর্বাত্মক সামরিক অভিযানের জন্য মস্কোকে অভিযুক্ত করা।
এদিকে কয়েক মাস হতেই মিত্রদের কাছে রাশিয়ার অভ্যন্তরে পশ্চিমা দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করে হামলার জন্য সবুজ সংকেত চেয়ে আসছে ইউক্রেন। কিন্তু সেপ্টেম্বরের শুরুতে এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি জানিয়ে পুতিন বলেছেন, এমন পদক্ষেপ নিলে ন্যাটো জোট সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে। সেক্ষেত্রে তিনিও যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
কিয়েভকে দূরপাল্লার হামলার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন নেতিবাচক উত্তর দিয়েছেন।
এর আগে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন ট্রাম্প। কীভাবে তা করবেন সে পরিকল্পনা না জানালেও, অন্য এক কথা প্রসঙ্গে তিনি ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তাকে ‘অর্থের নিদারুণ অপচয়’ বলে অভিহিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সর্বোচ্চ সামরিক সহায়তা দানকারী মিত্র। এখন পর্যন্ত তাদের দেওয়া সামরিক সহায়তার আর্থিক পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার ছয়শ’ কোটি মার্কিন ডলার।
সহায়তার বিষয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এই যুদ্ধের সঙ্গে কেবল ইউক্রেনীয় জনগণের ভাগ্য জড়িত নয়। এর পরিণতির ফল আমাদের চেয়েও বৃহত্তর। এ যুদ্ধে আমাদের সমর্থন করায় আমি আপনাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।’
এই সফরে ওয়াশিংটনের পর নিউইয়র্কে যাওয়ার কথা রয়েছে জেলেনস্কির। সেখানে মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। আর বুধবার সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিতে পারেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।