গ্লোবাল ফ্লোটিলা সুমুদ: ধর্ম নয়, ন্যায়ের নৌযাত্রা

পারভেজ আলম
  ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:২০

সমুদ্রের বুকে ভেসে থাকা এক নৌবহর—‘গ্লোবাল ফ্লোটিলা সুমুদ’, কোনো রাষ্ট্রের নয়, কোনো ধর্মের নয়, কোনো গোষ্ঠীর নয়—এটি মানবতার বহর। চিকিৎসক, শ্রমিক, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা, নারী ও তরুণ সবাই এতে আছে, শুধু একটিমাত্র উদ্দেশ্যে গাজার মানুষের কাছে পৌঁছানো, জীবন বাঁচানো।

‘সুমুদ’—আরবি শব্দ, অর্থ দৃঢ়তা ও প্রতিরোধক্ষমতা। এই ফ্লোটিলা সেই দৃঢ়তার নাম, যা মনে করিয়ে দেয়, মানবতা কখনও ধর্ম, জাতি বা ভূরাজনীতির সীমায় আটকে থাকে না।
যেখানে রাষ্ট্রগুলো নীরব, সেখানেই এই নৌবহর কথা বলে—অবৈধ অবরোধের বিরুদ্ধে, দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। গাজার অবরুদ্ধ উপকূলে এই বহরের আটক হওয়া কেবল একটি কূটনৈতিক ঘটনা নয়; এটি আসলে বিশ্ব বিবেকের ওপর আঘাত।
গাজায় ক্রমশ উন্মোচিত মানবিক বিপর্যয় কেবল মনোযোগ দাবি করছে না; এটি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আহ্বান জানাচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে, বিশেষ করে বাংলাদেশে, এই সংঘাতকে প্রায়শই ধর্মীয় বা জাতিগত দ্বন্দ্ব হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে—যেমন দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি দীর্ঘ ও জটিল সংঘর্ষ। তবে বাস্তবতা ভিন্ন: গাজার সংকট কোনো ধর্মীয় যুদ্ধ নয়; এটি মানবাধিকারের জরুরি পরিস্থিতি, যা আন্তর্জাতিক আইন, নৈতিক দায়বদ্ধতা এবং সার্বজনীন ন্যায়ের ওপর বিস্তৃত আক্রমণ। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যা দেখানো রাজনৈতিক সুবিধা বা সীমিত সহমর্মিতার কারণে তৈরি হয়েছে, যা সংঘাতের প্রকৃত স্বরূপকে বিকৃত করে উপস্থাপন করছে। এ ধরনের ফ্রেমিং বৈশ্বিক নৈতিক প্রতিশ্রুতি হ্রাস করে এবং কার্যকর সংহতি ও সমর্থনের সম্ভাবনাকে সীমিত করে। তাই গাজার সংকটকে মানবাধিকারের লেন্স থেকে দেখা না হলে, কোটি কোটি বেসামরিক মানুষের—বিশেষ করে ক্ষুধার্ত শিশুদের—দুঃখ ও বিপর্যয়কে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশে গাজা সংকট মোকাবিলায় সাধারণ জনমত ও রাজনৈতিক উদ্যোগগুলো মূলত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গড়ে ওঠা, যাতে সংকটের বৃহত্তর মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক আইনি দিকগুলোকে সাধারণত অগ্রাহ্য করা হয়। এই প্রতিবাদগুলোতে নিঃসন্দেহে মানবিক সংহতির স্বর বিদ্যমান থাকলেও, এদের বক্তব্য ও কর্মসূচি প্রধানত ধর্মীয় আবেগ এবং সাম্প্রদায়িক ভাবধারা দিয়ে রচিত হয়। ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন বা সর্বজনীন ন্যায়ের মতো বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে পশ্চাৎপটে চলে যায়। সার্বিকভাবে এই ধরনের ধর্মভিত্তিক প্রতিক্রিয়া কাঠামো গাজা সংকটের মানবাধিকার গত বহুমুখী বিষয়াবলি এবং আন্তর্জাতিক আইনের গুরুত্ব অস্পষ্ট করে দেয়।
গাজার সংকটকে কেবল ধর্মীয় দ্বন্দ্বের আঙ্গিকে দেখা বিভ্রান্তিকর ও সীমাবদ্ধ। প্রকৃতপক্ষে এটি কোটি কোটি নিরস্ত্র মানুষের ওপর সংঘটিত একটি মানবিক বিপর্যয়, যা সার্বজনীন মানবাধিকারের জ্বলন্ত ইস্যু। সাম্প্রদায়িক রঙে সংকটকে দেখলে সহমর্মিতার ক্ষেত্র সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। সুতরাং ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারকে পথপ্রদর্শক মনে করা মানুষগুলো এ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। যদি রাজনৈতিক নেতারা সংকটকে শুধুমাত্র ধর্মের বিচারে সীমাবদ্ধ রাখেন, তাহলে তাদের নৈতিক দায়বদ্ধতা সংকীর্ণ হয়ে যায় এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সমস্ত মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ হওয়ার মূলনীতি ব্যাহত হয়।
সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে গাজার সংকট ধর্মীয় বিভাজনের বাইরে মানবিক ঐক্যের ইস্যু। গ্লোবাল সামুদ ফ্লোটিলা (জিএসএফ) আটক হওয়ার পর ইতালিতে লাখ লাখ মানুষ গাজার পাশে সহমর্মিতা জানাতে বিক্ষোভ করেছে, যা সাধারণ মানুষের মানবিক সংহতির প্রতিচ্ছবি। ধর্ম নির্বিশেষে এই মানবিক ঐক্যই সংকটের জবাব, যেখানে সকলের নৈতিক দিক নির্দেশনা মানবতার মৌলিক মূল্যবোধ।
কমপক্ষে ৪৪টি দেশের প্রতিনিধি দল (যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কলম্বিয়া, স্পেন, তুরস্ক ও মালয়েশিয়া রয়েছে) নিয়ে গঠিত জিএসএফ কার্যত মানবাধিকারের বৈশ্বিক দূত হিসেবে কাজ করেছে। এই প্রতিনিধিদলে মানবাধিকারকর্মী, চিকিৎসক, সংসদ সদস্য, শ্রমিক ও সাংবাদিকরা রয়েছেন। বিশেষভাবে লক্ষণীয় বিষয় হলো বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসের নেতাদের অংশগ্রহণ, যা দেখায় যে গাজার প্রতি উদ্বেগ ধর্মীয় আনুগত্যের কারণে নয়, বরং মানবিক বিবেকের তাগিদে। অবরোধ ভাঙার এই ঐক্যবদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক সংকল্প ‘সুমুদ’ কর্মসূচি (আরবি ‘সুমুদ’ শব্দের অর্থ হল ‘দৃঢ়তা’ ও ‘প্রতিরোধক্ষমতা’) প্রমাণ করে যে চলমান সংঘাতটি ধর্মীয় মতাদর্শ দ্বারা গঠিত নয়।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গড়ে ওঠা প্রতিবাদগুলো ন্যায্যতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা একটি বৈশ্বিক নৈতিক অবস্থানকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। উদাহরণস্বরূপ, ইতালিতে নৌ-বহর আটকানোর ঘটনার পর শ্রমিক ইউনিয়নগুলেঅ সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়, যা দেশব্যাপী ১০০টির অধিক বিক্ষোভে দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ গড়ে তোলে। শিক্ষার্থী ও অধ্যাপকদেরও সমন্বয়ে গঠিত এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা মন্তব্য করেছেন যে এতে অংশগ্রহণ তাদের নাগরিক কর্তব্য ছিল এবং তারা পরিস্থিতি নিয়ে নিজেরা বহিঃপ্রকাশিত ক্রোধ ও অসন্তুষ্টি জানিয়েছেন। তারা সরাসরি ‘Free Palestine, Stop the war machine!’ স্লোগান দেন, যা বিনা-যুদ্ধের সমর্থন ও আন্তর্জাতিক ঐক্যের আহ্বান জোরদার করে। এই বৃহৎ ও সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলন, যা মহাসড়ক, রেললাইন ও বন্দর অবরুদ্ধ করে, সার্বজনীন ন্যায্যতার ভিত্তিতে উত্থিত নৈতিক ক্ষোভের শক্তিশালী প্রতীক; এটি ধর্মীয় আনুগত্যের পরিচয় দেয় না। অনুরূপ প্রতিবাদ তুরস্কের ইস্তাম্বুল, গ্রিসের এথেন্স, ইতালির রোম, জার্মানির বার্লিন এবং স্পেনের মাদ্রিদসহ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই হামলার নিন্দা জানায়।
গাজার সংকটের ব্যাপক নিন্দার কারণ হলো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের স্পষ্ট বাস্তবতা। মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ইসরায়েলের পদক্ষেপকে তীব্র সমালোচনার মুখে ফেলেছে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, উন্মুক্ত সাগরে নৌযানের স্বাধীনতা সংরক্ষণ করে রাখা জাতিসংঘের সামুদ্রিক আইন সনদ (ইউএনসিএলওএস) শান্তিপূর্ণ সহায়তামূলক জাহাজ চলাচলের অধিকার নিশ্চিত করে। পাশাপাশি, নিরাপত্তা পরিষদের ২৭২০ ও ২৭২৮ নং প্রস্তাবগুলো মানবিক সহায়তা অবাধে প্রবাহিত রাখার নিশ্চয়তা দেয়। চতুর্থ জেনিভা কনভেনশন ত্রাণ কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ করে এবং মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করে। আইটিএফ এর মহাসচিব স্টেফেন কটনও বলেছেন যে ‘উন্মুক্ত সাগরে শান্তিপূর্ণ মানবিক জাহাজকে আক্রমণ বা আটকানো আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস কালামার্ড ইসরায়েলের এই পদক্ষেপটিকে ‘সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ মানবিক অভিযান পরিচালনা করা কর্মীদের ওপর বেপরোয়া আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে গাজার জনগণের কাছে জীবনদায়ী সাহায্য পৌঁছাতে বাধা দিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আদালতের আইনি আদেশ এবং দখলদার শক্তি হিসেবে নিজের দায়বদ্ধতার প্রতি ‘পরিপূর্ণ অবজ্ঞা’ প্রদর্শন করছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ ইসরায়েলের এই অভিযানকে ‘অবৈধ অপহরণ’ বলে অভিহিত করে বলেছেন যে গাজার মানুষ ‘ইসরায়েলের খুনক্ষেত্রে’ আটকে পড়েছে। এই সব সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আইনি পর্যবেক্ষণগুলো স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে গাজার সংঘাতের মূল ভিত্তি ধর্মীয় কোনো বিরোধ নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও মানবিক দায়বদ্ধতার প্রশ্ন।
গাজার সংকটকে যদি মানবাধিকারের পরিপ্রেক্ষিতে দেখা হয়, তাহলে এখানে গণহত্যা, অবৈধ অবরোধ ও ইচ্ছাকৃত দুর্ভিক্ষের মতো ঘটনা মানবতার সার্বজনীন স্বার্থের বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়। আন্তর্জাতিক আইন, যা জাতিসংঘ সনদ ও বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তাদির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে, এমন একটি বস্তুনিষ্ঠ নৈতিক ও আইনগত মানদণ্ড স্থাপন করে যা সকল রাষ্ট্রকে মানতে হয়। এই সংগ্রাম কোনও ধর্মীয় ন্যায় বা ঈশ্বরের বিচারের প্রশ্ন নয়; বরং এটি আন্তর্জাতিক নীতি-নিয়ম ও মানবাধিকার নীতির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার ব্যাপারে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে গাজার দুর্ভিক্ষ এবং অবরোধ জনগণের ওপর প্রচলিত যুদ্ধ বিধির লঙ্ঘন, যেখানে খাদ্য সরবরাহকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
গাজার মুক্তি অভিযানে অংশ নেওয়া মানবাধিকারকর্মীরা স্পষ্টভাবে বুঝেছিলেন যে এ সময় নীরব থাকা বিপজ্জনক। তারা জাহাজ ভ্রমণে ইসরায়েলি বাহিনীর মুখোমুখি হয়ে গ্রেপ্তারের ঝুঁকি নিয়েও বক্তব্য দিয়েছেন যে ‘নীরবতা কথা বলা থেকে অনেক বেশি ভয়ানক’। লাইভ স্ট্রিম, সামাজিক যোগাযোগ ও সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে তারা ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষের কণ্ঠ বাড়িয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। এই প্রত্যক্ষ ‘সাক্ষ্য’ তাদেরকে দেশে ফেরার পর একটি নতুন ধরনের ‘প্রেরক’ হিসেবে গড়ে তুলবে, যারা মহাদেশ জুড়ে সংসদ ও সম্প্রদায়ের মঞ্চে গাজার বাস্তবতা তুলে ধরতে সক্ষম। এর ফলে গাজার প্রতি সংহতি অনিয়মিত বা সীমানাবদ্ধ নয়, বরং একটি স্থায়ী বৈশ্বিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশী এবং বৈশ্বিক সম্প্রদায়কে গাজার সংকট বোঝা এবং সমাধানে মানবাধিকারের দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গাজায় সহায়তা বহনকারী নৌকাগুলোকে বাধা দেওয়া ‘আন্তর্জাতিক আইনের শীর্ষ লঙ্ঘন’ এবং ‘ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছে। একই সময়ে, বিভিন্ন দেশের নাগরিক সমাজ, শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সাধারণ মানুষ সড়ক-মিছিল ও ধর্মঘটের মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছে। ইতালিতে প্রধান শ্রমিক ইউনিয়নগুলো সমর্থন জানিয়ে ধর্মঘট ডেকেছে এবং বার্সেলোনা, প্যারিসসহ ইউরোপের বহু শহরে হাজার হাজার মানুষ সমালোচনামূলক বিক্ষোভ করেছে। এই বহুমাত্রিক প্রতিবাদ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার নিন্দামূলক বিবৃতি একত্র করলে দেখা গাজার মানবতার নৈতিক পরীক্ষার বিষয়। পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের ভাষায়, ‘আমরা দেখছি দুই মিলিয়ন মানুষের ওপর দুর্ভিক্ষ আরোপিত হয়েছে। প্রত্যেকেরই নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে আমরা যতটুকু পারি মুক্ত ফিলিস্তিনের জন্য কাজ করতে।’ এই আহ্বান আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের আদর্শকে প্রাধান্য দেয়। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক আদালত ইতোমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে যে ইসরায়েল অবরোধ প্রত্যাহার করে অবাধ মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করুক।
গাজার সংকটকে যদি সার্বজনীন ন্যায়ের সংগ্রাম হিসেবে দেখা হয়, তাহলে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব ও আইন-শাসনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বৃহত্তর বৈশ্বিক আন্দোলনের অংশীদার হিসেবে কাজ করবে। ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের অবরোধ এবং সহিংসতা বহু দশক ধরে বেআইনিভাবে চলতে এসেছে; এই অবস্থার সমাপ্তি না হলে গণহত্যার মতো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন চলতে থাকবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের ভাষ্যে, অবরোধের মাধ্যমে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষকে ‘গণহত্যার উপায়’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদি আমরা এই সংকটকে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের চেয়ে মানবাধিকারের সার্বজনীন দাবির দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরতে পারি, তখনই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে। এভাবেই গাজার মানুষের শান্তি ও মর্যাদা নিশ্চিত হবে এবং ফিলিস্তিনের সংগ্রাম বিশ্বমানের বিবেকের সামনে দীর্ঘস্থায়ী ও স্থায়ী ভিত্তি লাভ করবে।
সূত্র: বিডি নিউজ ২৪.কম