বিশ্ব শিক্ষক দিবস প্রতি বছর ৫ অক্টোবর পালিত হয়, যা শিক্ষকদের অবদানের প্রতি বিশ্বব্যাপী সম্মান জানানোর একটি দিন। এই দিনটি ১৯৬৬ সালের ILO/UNESCO-এর শিক্ষকদের অবস্থান সম্পর্কিত প্রস্তাবনার স্মরণে পালিত হয়। এই প্রস্তাবনা শিক্ষকদের অধিকার, দায়িত্ব এবং কর্মপরিবেশের উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা, ন্যায্য অধিকার এবং একটি সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই উদ্দেশ্যে ১৯৯৭ সালে উচ্চশিক্ষার শিক্ষকদের জন্য একটি প্রস্তাবনা যোগ করা হয়, যার ফলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও এই সুরক্ষার আওতায় আসেন।
১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো উদযাপিত বিশ্ব শিক্ষক দিবস শুধুমাত্র শিক্ষকদের অবদানকে স্বীকৃতি দেয় না, বরং তাদের পেশাগত বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন ও সম্মানের প্রতিও আলোকপাত করে। এই দিনটি শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং শিক্ষা খাতের উন্নয়নে তাদের অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দেয়।
শিক্ষকরা হলেন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মেরুদণ্ড। তারা শুধু পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানই দেন না, বরং ছাত্রছাত্রীদের চরিত্র গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই আজকের সমাজ এতটা উন্নত। বিশ্ব শিক্ষক দিবসে আমরা তাদের এই অবদানের কথা স্মরণ করি এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। শিক্ষার ক্ষেত্রে তাদের অবদান অসাধারণ, এবং তাদের সাহায্যে আমরা এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে পারি।
ইউনেস্কো নির্ধারিত ২০২৪ সালের বিশ্ব শিক্ষক দিবসের থিম "Valuing teacher voices: Towards a new social contract for education" (শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে মূল্যায়ন: শিক্ষার জন্য নতুন সামাজিক চুক্তির পথে) শিক্ষকদের কাজকে আরও গুরুত্ব দিয়ে তাদের পেশাগত জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে একটি নতুন ধারণা উপস্থাপন করে। এই থিমটি শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানকে কাজে লাগানোর জন্য নীতি নির্ধারকদের কাছে একটি আহ্বান জানায় এবং শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকদের কণ্ঠস্বর উপেক্ষা করা এক গভীর সমস্যা। শিক্ষকরা সরাসরি শিক্ষার্থীদের সাথে যুক্ত থাকেন, তাই তাদের অভিজ্ঞতা ও মতামত শিক্ষার মান উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকদের অংশগ্রহণ ছাড়া শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও ভালোভাবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে এবং তাদেরকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় সামিল করে শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর করা সম্ভব হবে।
শিক্ষা যে কোনো সমাজের মূল ভিত্তি, আর শিক্ষকরা হলেন সেই ভিত্তির প্রাণশক্তি। তারা শুধু জ্ঞানই দেন না, বরং শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠনে, মননশীলতা বিকাশে এবং সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকরা নানা ধরনের পেশাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে আসছেন। তাদের মতামতের যথাযথ মূল্য না দেওয়া এবং সীমিত সুযোগ-সুবিধা শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দেওয়া এবং তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা আজকের দিনে অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। শিক্ষাব্যবস্থায় টেকসই পরিবর্তন আনতে হলে শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে কেন্দ্র করে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি গড়ে তোলা আবশ্যক। শিক্ষকদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।
শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি, নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা এবং সমাজ গঠনে ইতিবাচক অবদান রাখার মতো বিষয়গুলো এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সমাজকে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। কিন্তু, দুঃখের বিষয় হলো, শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা ও মতামতকে প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়।
ক্লাসরুমে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তব সমস্যাগুলো সম্পর্কে সবচেয়ে ভালোভাবে অবহিত থাকেন। কিন্তু, নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাদের এই মূল্যবান অভিজ্ঞতাকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে মূল্যায়ন করা মানে শুধুমাত্র তাদের বক্তব্য শোনা নয়, বরং সেই মতামত ও প্রস্তাবনাগুলোকে শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা। শিক্ষকদের সমর্থন, পরামর্শ, এবং তাদের শিক্ষাদানের চ্যালেঞ্জগুলো বুঝতে পারলে শিক্ষাব্যবস্থা আরও কার্যকর ও বাস্তবমুখী হতে পারে।
বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য, এবং বৈশ্বিক মহামারির প্রভাব শিক্ষাব্যবস্থাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। এসব পরিবর্তনের মুখে একটি নতুন সামাজিক চুক্তির প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে, যেখানে শিক্ষকদের কণ্ঠস্বর এবং তাদের অভিজ্ঞতাকে নীতিনির্ধারণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এই নতুন চুক্তির মূল বিষয় হবে শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধি করা, তাদের কাজের পরিবেশের উন্নয়ন এবং শিক্ষার নীতিমালায় তাদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা। এটি শিক্ষকদের জন্য আর্থিক এবং পেশাগত সহায়তার পাশাপাশি তাদের কাজের শর্তাবলীর উন্নয়নকেও অন্তর্ভুক্ত করবে। শিক্ষাব্যবস্থা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং শিক্ষকদের জন্যও সমানভাবে সহায়ক এবং মানানসই হতে হবে।
শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ দেওয়া একটি নতুন সামাজিক চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে। প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং নতুন শিক্ষণ পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের ক্রমাগত পেশাগত উন্নয়ন প্রয়োজন। এতে শিক্ষকদের নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ যেমন তৈরি হবে, তেমনি শিক্ষার্থীদের আরও কার্যকরভাবে শিক্ষাদান করার সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।
শিক্ষার নীতিমালা প্রণয়নে শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দেওয়া মানে তাদের অভিজ্ঞতাকে নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় একীভূত করা। এই অন্তর্ভুক্তি শুধু শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়ন নয়, শিক্ষার সামগ্রিক মান উন্নয়নের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা, পরামর্শ এবং শিক্ষাদানের চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষাব্যবস্থা আরও কার্যকর ও প্রয়োজনমুখী করে তোলা সম্ভব।
শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে মূল্যায়ন করতে হলে তাদের জন্য একটি মানসম্পন্ন কাজের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। একটি ভাল কাজের পরিবেশ তাদের শিক্ষাদানের গুণগত মান বাড়াতে সহায়ক হবে। কাজের পরিবেশে মানসম্পন্ন অবকাঠামো, পর্যাপ্ত বেতন, এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া উচিত। শিক্ষকদের সঠিক মর্যাদা এবং কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে তাদের শিক্ষাদানের দক্ষতাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে মূল্যায়ন করা শিক্ষার টেকসই উন্নয়নের পথে একটি বড় পদক্ষেপ। এই নতুন সামাজিক চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ এবং নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব। শিক্ষকদের মতামত এবং তাদের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিলে শিক্ষাব্যবস্থা আরও মজবুত ও কার্যকর হয়ে উঠবে।
শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে মূল্যায়ন এবং শিক্ষার জন্য একটি নতুন সামাজিক চুক্তি তৈরি করা বর্তমান সময়ের একটি বড় প্রয়োজন। শিক্ষকরা যেভাবে শিক্ষাব্যবস্থা গঠনে ভূমিকা রাখছেন, তাদের সেই অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাদের মতামতকে নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা আরও সমতাভিত্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, এবং কার্যকর হয়ে উঠবে, যা সমাজের সার্বিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষকদের অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, তারা শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলেও তাদের পেশাগত অবস্থান এবং কাজের পরিবেশ এখনও নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। তারা শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞান প্রদানকারী নন, বরং ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক ও সামাজিক গুণাবলী গঠনের পথপ্রদর্শকও। তবে, তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সত্ত্বেও, তারা বিভিন্ন সমস্যা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাংলাদেশে শিক্ষকদের প্রধান সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হলো নিম্ন বেতন কাঠামো। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক তাদের পরিবারের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত বেতন পান না। এ কারণে অনেক শিক্ষককে অতিরিক্ত আয়ের উৎস খুঁজতে হয়। এই আর্থিক অসুবিধার কারণে শিক্ষকদের মাঝে পেশাগত হতাশা এবং শিক্ষায় পূর্ণ মনোনিবেশ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
পেশাগত উন্নয়নের অভাবও বাংলাদেশের শিক্ষকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দেশে অনেক শিক্ষক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক শিক্ষণ পদ্ধতির সাথে পরিচিত নন। ফলে, তারা সময়োপযোগী শিক্ষাদান কৌশল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছেন। সরকারের পক্ষ থেকে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার পরিধি এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত।
বাংলাদেশের শিক্ষকদের কাজের পরিবেশও নানা সমস্যায় জর্জরিত। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই, যেমন যথাযথ শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষার উপকরণ, এবং প্রযুক্তির অভাব। শহরাঞ্চলের কিছু স্কুলে তুলনামূলক ভালো অবস্থা থাকলেও গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত দুর্বলতা শিক্ষকদের জন্য একটি বড় বাধা। ফলে, শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করা শিক্ষকদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
শিক্ষক-ছাত্র অনুপাতও বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। দেশের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে প্রতি শিক্ষকের জন্য ছাত্রের সংখ্যা বেশি। বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে এই অনুপাত খুবই অস্বাভাবিক, যা শিক্ষকদের জন্য মানসম্মত পাঠদান করা কঠিন করে তোলে। এককভাবে এত ছাত্রের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।
অন্যদিকে, শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান বৃদ্ধির পরিবর্তে অনেক সময় তারা সামাজিকভাবে অবহেলার শিকার হন। পেশাগত মর্যাদার এই অবক্ষয় শিক্ষকদের আত্মবিশ্বাস ও কর্মস্পৃহায় প্রভাব ফেলে। শিক্ষকদের প্রতি এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি তাদের শিক্ষাদানের মানের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে, সব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও শিক্ষকদের অবস্থা উন্নত করার কিছু পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকার এবং বিভিন্ন এনজিও সংস্থা শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের কাজের পরিবেশের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করবে।
বাংলাদেশে শিক্ষকদের অবস্থার পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, তারা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও তাদের অবদানকে অস্বীকার করা যায় না। শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত করতে হলে শিক্ষকদের সমস্যাগুলির প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। শিক্ষকদের আর্থিক, পেশাগত এবং সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন নিশ্চিত করা হলে শিক্ষার গুণগত মানও বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৪ শিক্ষকদের জন্য সম্মান, সঠিক কাজের পরিবেশ এবং পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ প্রদান করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে। এটি কেবল শিক্ষকদের জন্য একটি দিন নয়, বরং শিক্ষাব্যবস্থার অগ্রগতির জন্য শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান। শিক্ষকদের সমর্থন ছাড়া শিক্ষার মান বৃদ্ধি সম্ভব নয়। তাই শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে মূল্যায়ন এবং তাদের ভূমিকার যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৪-এর মাধ্যমে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে, শিক্ষকদের সঠিক মূল্যায়ন এবং তাদের পেশাগত উন্নয়নে বিনিয়োগ করলে আমরা আরও মজবুত, সমতাভিত্তিক, এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারব।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা।