সেপ্টেম্বর ১১, সকালে ঘুম ভাঙলো মৃদু টুনটুন একটা আওয়াজ শুনে।ফ্রেশ হয়ে আমি আওয়াজের উৎস খুঁজতে বের হলাম।কিন্তু বাইরে মধুর হাওয়া আর পাহাড়ের গায়ে লেগে থাকা মেঘের লুটোপুটি দেখে ক্যামেরায় বন্দি করতে আর ফোনে ভিডিও করতে ব্যস্ত হয়ে উঠলাম ।পরে ব্রেকফাস্ট করতে করতে ভাই বাবু ইমরান বললো এখানে প্রচুর ভেড়া আছে যাদের গলায় ঘন্টা বাঁধা নিশ্চয়ই সেই আওয়াজ শুনেছেন। এবার বের হয়ে দেখি তুলতুলে লোমে ঢাকা মা ভেড়া আর তার সাথে দুটো বাচ্চা ভেড়া।ওরা ঘাসের ডগায় মুখ রাখছে আর ওদের গলায় ঘন্টাগুলো টুনটুন করে বাজছে।এই অঞ্চলে একেক মালিকের চারশো পাঁচশো ভেড়া আছে আর ওদের কানে লাগানো আছে নেভিগেটর।ওদের গতিবিধি মালিকরা দেখতে পায়। লফোটেন এর ঘরে তৈরি উল নরওয়ে তথা পৃথিবী বিখ্যাত । পশম না থাকলে মানুষ কখনই উত্তরের এই মেরুঞ্চলে বসতি স্থাপন করতে পারত না। লোকেরা টেক্সটাইলে ফাইবার এবং থ্রেড যুক্ত করার জন্য অনেক কৌশল শিখেছে। আজ বুনন সঠিকভাবে আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কয়েকটি পিন, একটি সুতা দিয়ে সুন্দর ব্যবহারিক পোশাক তৈরি করতে পারে যা উষ্ণতা এবং আরাম দেয়।যখন বোনা হয়, পশম আরও বহুমুখী ব্যবহার্য হয়ে ওঠে।যা পোশাক, গৃহসজ্জার সামগ্রী এবং অভ্যন্তরের জন্য উপযুক্ত কাপড় তৈরি করে। মেরু অঞ্চলের তুমুল ঠান্ডায় দেহকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।আমরা লেকনেস থেকে রেইন ঘুরে এখন ফিনল্যাণ্ড এর পিয়েতারসারি ভাই এর বাসায় ফিরে যাবার জন্য ড্রাইভ শুরু করেছি।আসার সময় যে পথে এসেছি ফেরার পথ ভিন্ন ।এবারের রুটে কোন ফেরি নাই।শুধু ড্রাইভ ।নতুন কিছু দেখার তাড়নায় আমাদের চলা শুরু।
পাহাড়ের পর পাহাড়ের চড়াই উৎরাই পার হয়ে যাচ্ছি ।আজ আবহাওয়া খুব ভাল। ই-১০ ধরে আমরা রেইন এ গেলাম আবার আজ সকালে । পথে সমুদ্র দেখলাম ফিরোজা সবুজ জল নিয়ে আছড়ে পড়ছে সৈকতে। এতো চমৎকার আবহাওয়া । মুগ্ধ আমরা।কিছুক্ষণ পর আবার আরেকটি সৈকত।এবার আর গাড়িতে থাকা গেলো না। আমরা নেমে পড়লাম । আমাদের অবস্থা এমন হলো যে যেখানেই যে দৃশ্য দেখি খালি থামতে বলি আর ছবি তুলি। লফোটেন সাদা বালি, স্বচ্ছ জল এবং পর্বতসহ সুন্দর সৈকতের জন্য পরিচিত। এখানে সাদা বালি আর ফিরোজা নীল জল। ফিরোজা নীল জলের ছোট ছোট ঢেউ সাদা বালি জুড়ে আস্তে আস্তে ধুয়ে যায় যখন অন্যদিকে পাহাড়ের চূড়া উপরের নীল আকাশে উঠে যায়। সাধারণত আর্কটিক এবং সৈকত শব্দগুলি একই বাক্যে একসাথে উল্লেখ করা হয় না।তবে, লফোটেন দ্বীপপুঞ্জে সম্ভবত আপনি দেখতে পাবেন এমন কিছু দর্শনীয় সৈকত আছে যেখানে সব একসাথে।ফ্লাকস্ট্যাড তেমনি এক সমুদ্র সৈকত। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর সৈকত গুলির মধ্যে একটি যা লফোটেনে অবস্থিত, যেখানে সাদা বালি, আশ্চর্যজনক পর্বতমালা এবং কৃষ্টাল পরিষ্কার পানি সব একসাথে। এমন আরো কয়েকটি সৈকত এখানে আছে কোয়ালভিকা সৈকত, হাকল্যান্ড সৈকত, উত্তকলেইভ সৈকত, ইট্রেস্যান্ড সৈকত, রামবার্গ সৈকত, আনস্টাড সৈকত এবং স্ক্যাগস্যান্ডেন সৈকত।
এই দৃশ্যটি লফোটেনের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। এখানে দিনের যে কোনও সময় এবং যে কোনও ঋতুতে পৌঁছানো সহজ।জেনে রাখা ভালো প্রধান সড়কের ব্রিজ থেকে সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়। এটি একটি ব্যস্ত রাস্তা, কিন্তু একটি পথচারী ফুটপাথ আছে। উত্তর দিকে মুখ করে হ্যামনয় এর পাশ থেকে সেরা দৃশ্যগুলি দেখা যায়। এখানে কোনো নির্ধারিত পার্কিং নেই। সেতুর পূর্ব প্রান্তে গাড়ি পার্ক করা ভাল। ব্রিজ থেকে দৃশ্যগুলি নেওয়ার পাশাপাশি, যদি কিছু অতিরিক্ত সময় থাকে তবে হামনয় এর চারপাশে আরও কিছুটা হাঁটতে পারেন।এখানকার চারপাশ অসম্ভব সুন্দর। রাতের বেলায় যে সৌন্দর্য দেখতে পারিনি তা দেখতে এসেছি আমরা।কিন্তু আমরা ওখানে পৌঁছালে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হলো।ছাতা নিয়ে জলের কিনারায় গিয়ে দাঁড়ানোর পর দেখি কায়াকিং করে বড় একটা দল ফিরে এলো।সবাই তাদের বোটসহ বোর্ড ওয়াক দিয়ে হেঁটে আসছে।পানির অপর পারে উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় মেঘের আনাগোনা ।ক্ষণিকের জন্য মনে হলো হলস্ট্যাট এর চেয়ে সুন্দরী এই রেইন।মেঘদল লুকোচুরি খেলছে পাহাড়ের মাথায়।কী অপরূপ সেই সৌন্দর্য্য।চোখ জুড়ানো মন ভোলানো দৃশ্য। এখানে সুন্দর কিছু কটেজ এ পর্যটকরা দুপুরের লাণ্চ নিয়ে বসেছেন।এটি দুপুরের খাবারের ও পানীয় বা কিছু সময় বসে দেখার জন্য একটি চমৎকার জায়গা। সাভালভার বীচ হ্যামনয় হল রেইনের দক্ষিণে একটি ছোট খাঁড়ি, রেইন ফিয়র্ডের প্রবেশপথে। এখানেই লফোটেন-এ সবচেয়ে বেশি ছবি তোলার স্পট যে পটভূমিতে রেইনফিয়র্ডের পর্বতশৃঙ্গ সহ এলিয়াসেন রোরবুয়ের ঐতিহ্যবাহী লাল কেবিন গুলো ধরা পড়বে।
পর্যটকদের এক জায়গায় থাকা হয় না। যতো ভালই লাগুক তবু ছেড়ে যেতে হয়।
রেইন এর সীমানা ছেড়ে আমরা নার্ভিকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি ।পাহাড়গুলো এখন পাথরের ।"কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন" বলার চেয়ে "কলম্বাস আমেরিকাকে পশ্চিম ইউরোপের সাথে পরিচিত করিয়ে দিয়েছিলেন" বলাটাই আরও বেশি যুক্তিযুক্ত।এ অঞ্চলে কিছু চিত্তাকর্ষক স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে।ক্যারিবু, যাকে সাধারণভাবে রেনডিয়ার বলা হয়। তুন্দ্রা ও তৈগা বনভূমির সর্বত্র অনেক প্রজাতির বল্গা হরিণ বা রেনডিয়ার দেখা যায়। বল্গা হরিণ হচ্ছে বৃহৎ আকৃতির এক ধরনের হরিণ বিশেষ। তুষারাবৃত ও শীতপ্রধান দেশসমূহে এ ধরনের হরিণ মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয়। তৈগা সুইডেন , ফিনল্যান্ড, নরওয়ের উত্তরাংশ জুড়েও বিস্তৃত।পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ বৃক্ষ তৈগা বনাঞ্চলে রয়েছে। তৈগা- একটি সুবিশাল পাইনের বন। এটা পৃথিবীর মোট বনের প্রায় ২৭% ।কিছুক্ষণ পরপর রাস্তায় রেইনডিয়ারের সতর্কীকরণ চিহ্ণ দেয়া। পর্যটকদের জন্য যে কোনও জায়গায় ভ্রমণের সময় ট্র্যাক রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ।তবে এই জায়গাগুলিতে এলে কিন্তু পর্যটকরা যারপরনাই বিভ্রান্ত হন। আমরা দেখলাম রাস্তার ধারে Reindeer (বল্গা হরিণ ) এর সাইন দেওয়া আছে. তার কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখলাম একদল বল্গা হরিণ হেলে দুলে, বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে রাস্তা পেরোচ্ছে। গাড়ির স্পিড একেবারে কমিয়ে দিয়ে ধীরে এগিয়ে যেতে হলো। শুধু দু চোখ ভরে জীবনে প্রথমবার বল্গা হরিণ দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো। ছবি তুলতে পারলাম না রেডি ছিলাম না বলে।
ফিওর্ড (Fjord) শব্দটির পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বারবার । যে জায়গায় সমুদ্রের একটা অংশ ভূমি ভেদ করে ভেতরে ঢুকে যায়। অর্থাৎ তিন দিকে ভূমি ও মাঝে সমুদ্রের একটি সরু অংশ অবস্থিত তাকে ফিওর্ড বলা হয়। সোগনেফিওর্ড হচ্ছে নরওয়ের দীর্ঘতম এবং গভীরতম ফিওর্ড।নরওয়ের ফিয়র্ড হল সমুদ্রের পানি একটা দেশের মাঝখানে মাঝখানে ঢুকে যায় অনেক দূর পর্যন্ত।বেশ প্রশস্ত । মনে হয় নদী। কিন্তু তা লবণাক্ত । এতে প্রচুর মাছ থাকে। পৃথিবীর মধ্যে নরওয়েতে সবচেয়ে বেশি ফিয়র্ড। বরফ যুগে এই খাদ গুলোতে পানি আইস হয়ে থেকে গিয়েছিলো। বরফ যুগ চলে গেলেও বরফ গলে পানি হয়ে তা সেই খাদেই থেকে গেছে।স্বচ্ছ পানি কৃষ্টালের মত।নরওয়ে আর্কটিক অঞ্চলের মধ্যে।
যে দিকে তাকাই শুধু সবুজ পাইন গাছের বন দিয়ে ঢাকা পাহাড় । মাঝ দিয়ে এঁকে বেঁকে ছুটে চলেছে একটা পানির প্রবাহ।গ্লেসিয়ারের জমাট গলে নেমে আসা পানি সংগ্রহ করে নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে আপন গতিতে ছুটে চলেছে।মানুষ খুব কম। পর্যটকদের বাদ দিলে জনসংখ্যা খুব কম।শুধু পাহাড় আর পাহাড় আর তা ঢাকা লম্বা লম্বা পাইন গাছ দিয়ে।চারদিকে পাইনের বন । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত একটি দেশ।আর লফোটেন এর রেইন হলো সুন্দরীতমা।সোভলভার, নরওয়ে লফোটেনের বৃহত্তম শহর এ শহরে মাছ ধরার গুরুত্ব খুব বেশী। বিশ্ব কড ফিশিং চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতি বছর মার্চে সোভলভারে অনুষ্ঠিত হয়। ৮টি দেশ থেকে ৬০০ টিরও বেশি অংশগ্রহণকারী নিয়মিত অংশ নেয় এবং হাজার হাজার দর্শক ফিরে আসা নৌকাগুলিকে অভ্যর্থনা জানাতে জড়ো হয়।এখানে একটি যাদুঘর, রেস্টুরেন্ট এবং দোকান আছে।
নোবেল পুরস্কার নরওয়েতে অনুষ্ঠিত হয় এবং নরয়েজিয়ান কমিটি দ্বারা বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়।জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নরওয়ের অগ্রনি ভূমিকা ছিল এবং জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব নরওয়ে থেকে নির্বাচিত হন।স্যামন মাছ দিয়ে সুসি (একটি জাপানি খাবার) প্রথম নরওয়েতেই তৈরি হয়। উজ্জ্বল লাল রঙটি নরওয়ের প্রায়শই ধূসর এবং তুষারময় ল্যান্ডস্কেপগুলিতে দেখা যায়, যা কঠোর আবহাওয়ায় বাড়িগুলিকে আরও দৃশ্যমান করে তোলে।লাল রঙের ব্যবহার নরওয়েজিয়ান সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি অংশ হয়ে উঠেছে, যা দেশের ঐতিহ্য এবং ঐতিহ্যগত নান্দনিকতাকে প্রতিফলিত করে।লাল রঙে ব্যবহৃত রঙ্গক উপাদানগুলি কাঠকে রক্ষা করতে কার্যকর ছিল, যা নরওয়ের বৈচিত্র্যময় জলবায়ুতে গুরুত্বপূর্ণ।লফোটেন এর রেইন এমন একটি জায়গা যেখানে যাত্রা শুরু করে বারবার থামিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে সময় বেশী লাগবেই।ড্রাইভ করে গেলে প্রায়ই থেমে যেতে ইচ্ছে করবে যখন প্রতিটি এঙ্গেল নূতন মনে হবে।
মেরু অঞ্চলের অনেকটা অংশ জুড়েই গ্রীষ্মকালের একটা নির্দিষ্ট সময় আক্ষরিক অর্থেই সূর্য ডুবতে দেখা যায় না। তেমনি শীতকালেরও একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে সূর্য উঠতে দেখা যায় না। গ্রীষ্মকালের এ সময়টাকে 'মেরু দিন' এবং শীতকালের এই সময়টাকে 'মেরু রাত্রি' বলা হয়ে থাকে। স্ক্যান্ডেনেভিয়া অঞ্চলের দেশ সুইডেনের কিরুনা শহরটি আর্কটিক সার্কেল বা উত্তর মেরু বলয়ের আরও ১৪৫ কিলোমিটার ভেতরে। এখানে গ্রীষ্মকালেও পর্বত চূড়াগুলো সাদা বরফে ঢাকা থাকে। পুরো গ্রীষ্মকালেই রাতের আকাশ থাকে অনেকটাই আলোকিত, পুরো শীতকালে দিনের আলোর দেখা মেলা ভার। খনির শহর কিরুনায় সব মিলিয়ে হাজার বিশেক বাসিন্দার মধ্যে একটা বড় অংশই অভিবাসী শ্রমিক। এঁদের মধ্যে আছে বিভিন্ন দেশ থেকে সুইডেনে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী মুসলিমরাও। কিরুনা শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় কুকুরে টানা স্লেজ-গাড়িতে ঘুরে বেড়ানো মেরুবলয়ের পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।কিরুনা এমন একটি শহর যেখানে সূর্য অস্ত যায় না । কিরুনা E10 রোডে অবস্থিত, নরওয়ের সাথে Luleå কে সংযুক্ত করে এবং Gällivare (কিরুনার দক্ষিণে) এবং Narvik (নরওয়েজিয়ান উপকূলে) এর কাছে দিয়ে যায়। আরেকটি রাস্তা কিরুনাকে নিক্কালুওক্টার সাথে কেবনেকাইজের কাছে সংযুক্ত করে এবং পর্যটকরা পাহাড়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করে। এটি কালিক্স নদী উপত্যকার বেশ কয়েকটি গ্রামের পাশ দিয়ে চলে গেছে।
মানুষের জীবন দিন ও রাত অনুযায়ী চলে। সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে দিন প্রায় শেষ হয়ে যায়। কিন্তু পৃথিবীতে এমন জায়গা আছে যেখানে কয়েক মাস সূর্য অস্ত যায় না। এ সময় এসব স্থানের দৃশ্য দেখার মতো। সুইডেনের সবচেয়ে উত্তরের শহর কিরুনায় গ্রীষ্মকালে প্রায় দেড় মাস সূর্যাস্তই হয় না। বিজ্ঞানের হিসেব মতো দিন হয় প্রায় ২৪ ঘণ্টার। এর মধ্যে ১২ ঘণ্টা প্রায় থাকে সূর্যের আলো অর্থাৎ দিন। সূর্যালোকে আমরা নানা কাজ করি। আর বাকি সময়টা হল অন্ধকার। তখন সূর্যের আলো থাকে না। রাত বলা হয় সেই সময়টাকে। সূর্য অস্ত গেলে আঁধার নেমে আসে পৃথিবীর বুকে। কিন্তু এক বার ভেবে দেখুন তো, যদি এমনটা হয় যে, সূর্য কখনও অস্ত না যায়।Sun Never Sets এতে শুধু আপনার দৈনন্দিন রুটিন ব্যাহতই হবে না, আপনার জীবনও বিঘ্নিত হবে। আপনি হয়তো এ কথা জেনে অবাকই হবেন যে, পৃথিবীতে এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে ৭০ দিনের বেশি সময় ধরে সূর্য অস্ত যায় না। এর মানে এটাই দাঁড়ায় যে, এখানে রাত হয় না। ১২ ঘণ্টা কেটে গেলেও থাকে দিন, দিনের তাড়াহুড়ো ও কর্মব্যস্ততা।এখানকার মানুষ ঘরের পর্দা টেনে ঘর অন্ধকার করে রাত নামায়।
এই কদিনে যে পরিমান প্রকৃতি দেখেছি, তার জের এখন কয়েক মাস ধরে চলবে। নরওয়ের প্রকৃতি, তার বৈচিত্র, তার উৎকর্ষতা এবং যে সাফল্যের সঙ্গে সেখানকার অধিবাসীরা সেই প্রকৃতির রক্ষনাবেক্ষণ করছে, তার জন্য কোনো বিশেষণই যথেষ্ট নয়। নরওয়ে রোড ট্রিপ শেষ হলো সুইডেনে প্রবেশের মধ্য দিয়ে।