মেঘের রাজ্য খ্যাত পর্যটন উপত্যকা সাজেক ভ্যালিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। পর্যটন মৌসুমের শেষের দিকে এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি পর্যটক সাজেকে বেড়াতে এসেছেন। তবে অগ্রিম বুকিং করে না যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে অনেক পর্যটককে। হোটেল-মোটেলে রুম না পেয়ে অনেকেই রাত কাটিয়েছেন হোটেল-মোটেলের বারান্দায়, স্কুল, ক্লাবঘর, স্থানীয়দের বাড়ি ও মসজিদে।
শনিবার সকালেই তারা আবার ফিরতে শুরু করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাজেকে বর্তমানে ১১৬টি রিসোর্ট-কটেজ রয়েছে যেখানে প্রায় ৪ হাজারের মত পর্যটক অবস্থান করতে পারেন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রায় ৫ হাজারের মতো পর্যটক সাজেক বেড়াতে গেছেন। এদের অনেকে অগ্রিম বুকিং না করে যাওয়ায় রিসোর্ট-কটেজে রুম পাননি।
রুম না পেয়ে অনেকে ফিরে গেলেও বাকিরা থেকে যান সেখানে। থাকার জায়গা না পাওয়া পর্যটকরা কটেজ মালিক সমিতি ও স্থানীয়দের সহায়তায় ক্লাবঘর, প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্থানীয়দের বাড়িঘর ও মসজিদে রাত্রিযাপন করেন।
জুমঘর ইকো রিসোর্টের ব্যবস্থাপক ইয়ারং ত্রিপুরা বলেন, গতকাল (শুক্রবার) বেশ ভালোই পর্যটক সমাগম হয়েছে সাজেকে। যারা অগ্রিম বুকিং না দিয়ে এসেছেন তারাই রুম পাননি।
তবে আমি শুনেছি কটেজ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি পর্যটকদের উদ্দেশ্যে বলবো সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে অগ্রিম বুকিং করেই সাজেক আসার জন্য। না হলে এখানে কিন্তু থাকার বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই।
সাজেক জীপ সমিতির লাইনম্যান ইয়াসিন আরাফাত বলেন, শুক্রবার ২৩০টির মত জীপ গাড়ি, ৭০টির মত মাহিন্দ্রা ও ১০০টির মত মোটরসাইকেল সাজেকে গিয়েছে। বেশকিছু পর্যটক রাতে থাকার জন্য রিসোর্ট কটেজ পাননি।
তাদের জন্য স্কুল, ক্লাবঘরসহ অন্যান্য জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে সমিতির পক্ষ থেকে। তবে ১২-১৩ জন পর্যটক গাড়িতে থেকেছেন।
সাজেকের কটেজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন বলেন, শুক্রবার সাজেকে এই মৌসুমের সর্বোচ্চ পর্যটক এসেছেন। প্রায় ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার পর্যটক বেড়াতে এসেছেন। যারা অগ্রিম বুকিং না করে এসেছেন তাদের অনেকেই রুম পাননি। আমরা আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে প্রায় সাড়ে ৩শ পর্যটককে ক্লাবঘর, ত্রিপুরা ক্লাবঘর, নতুন নির্মাণাধীন কটেজ ও স্থানীয়দের বাসা বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
কোন পর্যটক রাস্তায় রাত কাটিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হয়তো আনাচে-কানাচে কোনো পর্যটক গাড়িতে থেকে থাকতে পারেন। তবে আমাদের কাছে যারাই এসেছেন আমরা তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছি। আজ সকালে বেশিরভাগ পর্যটক চলে যাবেন বলে জানান তিনি।